banglarsab.com

বুধবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২১

শিমুল

 


দুরন্ত, খেয়ালীপনা,ন্যায্যমনা,স্পর্শকাতর গ্রাম্য সহজ সরল পরিবেশে যার জন্ম তারই নাম শিমুল।  নামের সংগে তার দৈহিক এবং মানসিক চরিত্রের একান্তই মিল খুজেঁ পাওয়া দুস্প্রাপ্য নয়।  শিমুল গাছের লম্বা ফুলের কলির মত লম্বা, এমনি লাল ফুলের মত টগবগে চেহারা। যে কোন প্রতিভাময়ীর সংগে সাক্ষাৎ মিললেই নিঃশংকোচে বলবে এমন সাধাসিধে বলেই বসার সাথে তার মনোভাব। যে তাকে কটাক্ষ দৃষ্টি বা কথায় একটু আঘাত হেনেছে, তার সাথে ক্ষনিকের জন্য আঁড়ি। চোখের আড়াল হওয়া মাত্রই শিমুলের কষ্ট শেষ। ছোটো ছোটো ছেলেমেয়েদের সাথে তার খুব ভাব। তের কি চৌদ্দ বছর হবে, বেশ শিমুল বৃক্ষের ন্যায় লম্বা। অষ্টম শ্রেনী পড়ুয়া ছাত্রী। স্কুলে যেতে তার বেশ অনীহা, তন্মধ্যে গরীব চাষাভুষা ঘরে জন্ম তার। তবে বংশ মর্যাদায় অনেক উর্ধ্বে। তার দাদার পিতামহ একসময় জমিদার ছিল, তাই বলে এলাকার লোকজন তাদেরকে দরিদ্র হলেও সম্মান করে থাকেন। শিমুল লাল শাড়ি, লালব্লাউজ, লাল পেডিকোট এবং মাথায় দুটি বেনী বেঁধে দৌঁড়াতে ভালবাসে। বাবা মা সর্বক্ষন ভীতসন্ত্রন্ত কোন সময় পাগলী মেয়েটা কি করে বসে বলা মুশকিল। কারন দেখতে সুন্দর। অতি চঞ্চল, গাছে উঠে চুপটি মেরে বসে থাকা তার জন্য অতি আনন্দায়ক। 

বর্ষাকাল রাস্তার দু'ধারে ঘন জংগল, পায়ে হাঁটা রাস্তা। শিমুল একটা গাছে উঠে অদৃশ্যাবস্থায় বসে আছে, আকাশে মেঘের গর্জন বৃষ্টি পড়ার উপক্রম হতে চলেছে। এরই মাঝে গ্রাম্য মোড়ল ইয়াদ আলী সংগে তার চামচা বল্টু সেই রাস্তা দিয়া দ্রুত হেঁটে যাচ্ছে। অল্প বুদ্ধিমান শিমুল তাকে ভয় দেখানোর জন্য লাফ দিয়ে সামনে পড়ে। মোড়ল সাহেব তো ভয়ে রাস্তায় শুয়ে পড়েছে, বল্টুর চিল্লানো শুনে মোড়ল চোখ খুলে দেখে শিমুল মনের আনন্দে খিলখিলিয়ে হাসছে আর পিছু হটছে।

বল্টুঃ মোড়ল সাব ভয় পাবেন না, এতো জ্বিন ভূত নয়। মোড়লঃ তাহলে কে রে? 

বল্টুঃ আবিরের মেয়ে শিমুল।

মোড়লঃ ও আচ্ছা, আমার ছোট গিন্নি ! বেকুব আমাকে আগে বলবি না।

এদিকে শিমুল হাসতে হাসতে মরিয়া হয়ে উঠছে আর পিছন দিকে পিছাচ্ছে।

বল্টুঃ মোড়ল সাব আপনি একে ঘরনী করতে পারলে তাহলে আর আপনাকে রাতবিরাত বাইরে যেতে হবে না, সারাক্ষন ঘুমিয়ে কাটাতে পারবেন।

মোড়লঃ এই শোন! যেওনা, তোমার সাথে আমার কথা আছে, পীরিতের কথা।

শিমুল তো হাসতে হাসতে পাগল প্রায়।

শিমুলঃ ভয় পেয়েছেন মোড়ল কাকা ? 

মোড়লঃ ভয় পাব কেন তুমি তো আমার প্রানপাখি এসো আমার কাছে এসো।

এই বলে মোড়ল তাকে ধরতে গেলে শিমুল  দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করে দৌঁড়ে পালাতে গিয়ে শিমুল মোড়লেরই ছেলে বিপুলের সংগে ধাক্কা লেগে যায়। বিপুল ঢাকা থেকে আসতেছিল বাড়ির অভিমুখে। সচকিত বিপুল হতভম্ব হয়ে যায়।

 বিপুলঃ এই মেয়ে এত জোরে দৌড়াচ্ছ কেন? কি হয়েছে ? 

শিমুলঃ দেখছেন না মোড়ল কাকা আমাকে ধরতে আইছে।

বিপুলঃ কোন মোড়ল ? 

শিমুলঃ কেন আপনার বাবা! 

বিপুলঃ আমার বাবা তোমাকে দৌঁড়াবে বা ধরবে কেন ? 

শিমুল হাসতে হাসতে বলছে, সহজ সরল মেয়ে তো তার ভিতরে রাগ বা গোস্বা কিছু নেই, নেই কোন কটাক্ষ দৃষ্টি।

শিমুলঃ আমি নাকি তার ছোট গিন্নি। তাই আমাকে ধরতে আসছে।

এই বলে শিমুল আবারও দৌঁড় দিতে চাইলে-

বিপুলঃ শোন মেয়ে আমি থাকতে তোমার কোন ভয় নাই, দরকার হলে আমি বাবার সাথে লড়াই করব।

শিমুল তার কথা কর্নপাত না করে তার কাছ থেকে দৌঁড়ে পালাল। বিপুল ভাবছে নিশ্চয় পাগলীটাকে বাবা খারাপ কিছু বলেছে, নতুবা এমন উন্মাদনায় তাকে সে কখনও দেখিনি। কিছুদূর এগুতেই মোড়ল তার সামনে পড়ে। বিপুলের মনটা ভারী কিন্তু মোড়ল মনে মনে ভয় নিয়েও  ছেলেকে বলল

মোড়লঃ কেমন আছ বাবা ? কখন আসলে? কিভাবে আসলে? খবর দিলে গাড়ি পাঠাতাম।

এতগুলো প্রশ্নের মধ্যে বিপুল মাত্র বলল 

বিপুলঃ ভাল আছি।

এই কথাটা বলে পাশ কাটিয়ে যেতে চাইলে, মোড়ল টের পায় পাগলীটা হয়তঃ কিছু বলেছে। এই ভেবে সে এগুতে থাকে। 

মোড়লঃ কিরে বল্টু ঘটনা বুঝি খারাপ। 

বল্টুঃ ও কিছু না মোড়ল সাব। পাগলীর কথায় কান দিবে না আপনার স্বনাম ধন্য ছেলে।

মোড়লঃ পাগলী যে কখনও মিথ্যা কথা বলে না এ সত্যটা শিক্ষিত ছেলেরা ভাল করেই বুঝে।

 


সোমবার, ২২ নভেম্বর, ২০২১

বন্যা ১৯৮৮

 

                                                                        

প্রকৃতির ভয়াবহ তান্ডব  করতালি দিয়ে সর্বনাশী ডাক দিয়ে বিপদসংকুলে পতিত করেছিল। আমাদের সুজলা, সুফলা, শস্য শ্যামলা লাখো শহীদের রক্তে প্রবাহিত স্বাধীনতাকামী বাংলাদেশকে ডুবিয়ে দিয়েছিল। সেই সর্বগ্রাসীর ছোবল আজও আমার মনে পড়ে অভাবনীয় স্মতিও রেখে গেছে ভয়াবহ বন্যা। কেউ এই বন্যায় অচৈতন্য নয়। জানা আছে তার হিংসাত্বক তান্ডবলীলা। মনের কোনে যে অজস্র বেদনা জমে আছে তা লিখতে আমার কলমের ডগায় এসে বন্যার দুস্কর্মের ফলাফল আটকে যায়। কেননা মানবকুলের আর্তনাদ কলমের গতিরোধ করে। কলমও তার কর্ম ছেড়ে আর্তনাদে যোগ দিতে চায়। শো শো শব্দে শুরু হয়ে গেল বন্যার ছোবল। কেউ ভাবেনি, ভাবতেও পারেনি হঠাত এত পানি এসে তাদের তলিয়ে দেবে। বন্যার প্রকোপ আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে তবুও স্বাধীন দেশের সরল মানব আশায় বুব বেধেঁ বসেছিল করালগ্রাস থেকে বাঁচতে। কিন্তু বিধির বিধান করালগ্রাসী বন্যা কাউকে রেহাই দিল না। নিম্নাঞ্চল থেকে শুরু করে অনেক গ্রাম অনেক  বাড়িতে হাহাকার পড়ে যায় চতুর্দিক। সেই মায়াময়, স্মৃতিময় পল্লীতে আমি ছিলাম নির্বিকার।  মানুষ বাড়ি ছেড়ে রাস্তা এবং বিদ্যালয় প্রাংগনে আশ্রয় নেয়। আমাদের বাড়িটা ছিল তুলনামূলক  উচুঁ জায়গায়, আত্বীয়-স্বজন গৃহহারা অনেকেই আমাদের বাড়ি আাশ্রয় নেয়। জায়গার সংকুলান না হওয়ায় বাবা মসজিদের পাশে তাদেরকে ছাপড়া করে দেয়। তখন আমি আইএসসি পরীক্ষা সমাপ্ত করে বাড়িতেই সময় কাটাতেছিলাম। আর মনের আনন্দে মাছ ধরতেছিলাম, আমি বন্যার প্রকোপে ব্যথিত হলেও মাছ ধরতে খুব ভাল লাগছিল।

ঝিমঝাম বসে না থেকে আমাদের সমিতির সবাইকে মিটিং এ ডেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হল আটা কিনে ত্রান কার্যে বেরিয়ে পড়ব চরান্চলে। সিদ্ধান্ত মোতাবেক পরদিন আটা কিনে বেরিয়ে পড়লাম চক্ষুপটে যাহা ধরা পড়ল, তা প্রকাশ করতে বড্ড দুঃখ লাগছে। অনেকে কলাগাছের ভেলা বানিয়ে তার উপর মানুষ, গরু, ছাগল নিয়ে ভেসে বেড়াচ্ছে, কোথায় তাদের ঠিকানা। আটা দিয়ে কি করবে রুটি তৈরী করার মত অবস্থা তাদের নেই। আমরা তাড়াতাড়ি ফিরে এলাম রুটি তৈরী করে নেওয়ার জন্য। কয়েকজন মিলে রুটি তৈরীতে লেগে গেলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমার। রুটি নিয়ে মানব সেবায় নিয়োজিত হতে পারলাম না। হঠাৎই খবর পেলাম আমার ইমিডিয়েট বড়বোন দুই বাচ্চাসহ আজ দুদিন ঘরের মাচায় বসে দিন গুজরাচ্ছে, খানাপিনা নেই, এখন চললাম তাদের উদ্ধার করে আনতে। হেঁটেই চলেছি মেঠো ভাংগা ভাংগা পথে, কোথাও ভিজে আবার কোথাও সাঁকো বেয়ে। ভগ্নিপতির বাড়ির একমাইল দুর থেকেই দেখতে পেলাম, তাদের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা ডুবে গেছে। বহমান বন্যার স্রোত বইয়ে যাচ্ছে বিদুতের মত। চমকে উঠলাম, ভাবলাম ওরা হয়তঃ আর বেঁচে নেই। সময় যতই হচ্ছে ততই বিপদ বাড়ছে  বলে ভাবানুকুল হয়ে উজানে গিয়ে মরনবাজি করে সাঁতার দিলাম। ভাসতে ভাসতে দু'ঘন্টা পর তাদের ঘরের দুয়ারে, উঠানে পা রাখলাম আমি একবুক পানিতে দাঁড়ানো। ভগ্নিপতি ব্যবসায়ী, ব্যবসার কাজে হয়তঃ কোথাও আটকা পড়েছে। সোহাগিনী বোনকে যে অবস্থায়  পেলাম, মনটা হুহু করে কেঁদে উঠল। বাচ্চা দুটো ক্ষুধার তাড়নায় নড়তে পারছে না, বোনের চোখ দুটো কুটরাগত। আমাকে দেখে তার কান্নায় ভেংগে পড়ল। আমার আগমনের বিবরন জানতে চাইলে তাদের কথার তোয়াক্কা না করে কলাগাছ কেটে ভেলা বানাইতে থাকি। ভাগ্নের বয়স ছিল সাত বছর, সে কাদঁছে, ক্ষিধেয় কথা বলতে পারছিল না। ভেলা তৈরী শেষ করে তাদের উঠিয়ে নিয়ে কিছুদুর ধাক্কিয়ে উজান দিকে গিয়ে আবার আমিও ভেলায় উঠে তাদের নিয়ে পারি জমাত থাকি। সন্ধ্যে হল বড় রাস্তার সন্ধান পেতে। সেখান থেকেও আমাদের বাড়ি তিনমাইল দুরে। সকলেই ক্ষুধায় পাগল হয়ে যাওয়ার পালা। একটা দোকান পেলাম, সেখানেও তেমন কিছু ছিল না, বিস্কুট কিনে বাচ্চাদের দিলাম, ততক্ষনে বাচ্চারা একটু স্বস্তিবোধ করল। আর একমাইল দুর আমার মামাবাড়ি ভেবেছিলাম সেখানে রাত্রি যাপন করে সকালে বাড়ি যাব। নির্মম প্রকৃতির অসম পরিহাস। একটু এগুতেই দেখি সামনে একটা ব্রীজ ভেংগে যাবার উপক্রম হয়ে পড়েছে পানির ধাক্কায়। পানির প্রবল স্রোত ব্রীজের কোল ঘেষে চলেছে। তড়িঘড়ি বাচ্চা দুটো আর তার মাকে পার করে দিলাম। ব্রিবকেসটা  ঐপারে ছিল, তাদের দাঁড় করিয়ে আমি ব্রিবকেসটা আনতে ওপারে গেলাম। ব্রিবকেস নিয়ে পার হতেই বিকট শব্দে ব্রীজ ভেংগে স্রোত এসে

শনিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২১

LOVE SMS

 

                                                                           

 * why r u silent ? 

* how are u dear ? 

* how do u do dear ? 

*4 ever beautifull thing makes a beautifull moment, 4 ever our romantic emotion gives the best feeling.

* Look at me, i am a beautifull girl, my dress colour is white I am coming in ur imagine. I am always with u, mind it. I see you always because u with me. Good evening dear.

* Now I am coming to U. I will set with you.

* What do you mean 10 nos ? I m ur lover? I think that love is! Want u. U r my life. I will marry u. Dnt forget me, moner majhe tumi. U r my heart. What do u mean by love ?

 * I will love u when you are done be a good job

* Never shall down my jaan. I will love you   very much from heart all time.

* Love is blind. Life is kind.

শুক্রবার, ১২ নভেম্বর, ২০২১

POORNESS-1

 No one is alone, everyone is included in the bondage of all, or as is customary. Three eras have passed since today. We will discuss what is called the cry of deprivation in human life, no one will hate, it is the responsibility of everyone to know the way of life of the poor three ages ago, because it is impossible to understand how happy the great Lord Almighty has kept us in the present age. Starting the story. The whole country and the whole village is silent in the fascination of the torrential rain of all rainy season around. Rain during that period meant not feeding the poor. For seven days, ten days, the fields would be filled with rain, and with it the wailing of the poor

কষ্টের দিন-১

                                                                             

 কেউ তো নয় একেলা সকলেই সকলের তরে বাঁধনে অন্তর্ভূক্ত বা গতানুগতিকভাবে এ ধরায় চলমান। আজ থেকে তিন যুগ পেরিয়ে গেছে। মানব জীবনে অভাবের হাহাকার কাকে বলে তাই নিয়ে আলোচনা করব, কেউ ঘৃনা করবেন না, তিনযুগ আগে গরীবদের জীবন যাপন কেমন ছিল সেই ধারনা জানতে পারা সকলের দায়িত্ব, কারন বর্তমান যুগে মহান রাব্বুল আলামিন আমাদের কত সুখে রেখেছেন তা পিছনে না গেলে বুঝা যায়না। গল্প শুরু করছি। চতুর্দিকে ভাদ্র মাসের ঝনঝনানি বৃষ্টির মোহে পুরো দেশ তথা গোটা গ্রামবাসী নিস্তব্ধ। সেই আমলে বৃষ্টি মানেই  গরীবদের না খেয়ে থাকা। চলমান সাতদিন, দশদিন বৃষ্টিতে মাঠঘাট ভরে যেত, তার সাথে চলত গরীবের আহাজারি।  কোন খাদ্যদ্রব্য সংগ্রহে না থাকায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আর্তনাদে আকাশ বাতাস কম্পিত হত। সেই সময় আমি ছিলাম সেই করুন দৈন্যদশার হিতাকাংখী। আজও মনে পড়লে গাঁ শিউরে উঠে।  মনে হয়  সেদিনগুলো আল্লাহ্ আমাদের গজব হিসেবে দানিত করেছিল। আমি তার পুরো স্বাদটা গ্রহন করেছিলাম। রাত হলে বৃষ্টির মোহে মনে হত পুরো গ্রামটা ভূতের গলিতে রুপান্তর হত, থেমে থেমে বৃষ্টি আবার কখনও লাগাতার  বৃষ্টি পড়ে থাকতো। একদা রাত দশটা হবে তবু সেটা আনুমানিকভাবে বলছি, কান্নার শব্দ পাওয়া যাচ্ছে আমার বাবা শুনেই বলল কার যেন মরন হল। মা বাবাকে বললেন বাবাকে বাইরে বেরিয়ে দেখার জন্য। বাবা হতাশ হৃদয়ে বলল "নিজের পরিবার নিয়েই তো বড্ড চিন্তিত আবার অন্যের যন্ত্রণা কাঁধে নিয়ে আরও উদ্বিগ্ন বাড়াতে চাই না। মায়াবী মা আমার বাবাকে রেহাই দিলেন না। তাকে জোর করে বাইরে যেতে বাধ্য করলেন। সেই মূহূর্তটা আমার কাছে এমন ছিল যে, হায়রে কুলাংগার মানবজীন, এত কষ্টের ভারে কেউ কারো বিপদে সাড়া দিতে চায়না। কারন আমার বাবাও তো আমাদের সাত ভাই বোন নিয়ে বড্ড হাহাকারে নিমজ্জিত, আমরাও তাকে খানার জন্য তার পিছনে ঘ্যানর ঘ্যানর করছি। হতাশাক্রান্ত বাবা একটা পলিথিন মুড়ে, কাছা দিয়ে, হাতে একটা মগ বাতি নিয়ে বেরিয়ে গেল। মা অবশ্য বলেছিল আমাকে সাথে নেওয়ার জন্য, কিন্তু বাবা অতি কষ্টের সাথে বললেন না ক্ষুধার্ত ছেলেটিকে ঐ হতাশ পরিবারের হতাশ দেখিয়ে আরও বিভ্রান্ত করতে চাইনা।

বাবা চলে যাবার পর আমার তো ঘুম আসছে না, কারন দিনে শুনেছিলাম বিবির বাবা খেটে খাওয়া মানুষটি খুবই অসুস্থ তাছাড়া বৃষ্টির লাগাতার কল্যানে তো বেশ তিন/চারদিন না খেয়ে আরও দুর্বল হয়ে পড়েছিল। আমি ভেবেছি তাই হয়তঃ উনি ইন্তেকাল করেছেন। বিবি হল আমার গ্রাম্য বান্ধবী, পড়াশোনা করছে না, তবে একসাথে খেলাধূলা, একসাথে মাছধরা, একসাথে মক্তবে যাওয়া, গাছে উঠে আম পেরে খাওয়া, দৌঁড়ে বেড়ানোর সাথী। আমি বড্ড চিন্তিত হলাম, মনে হচ্ছিল আমি কি করতে পারি আমাকে যেতেই হবে। এদিকে মা ঘুমায়নি, কুপি নিভিয়ে চুপচাপ শুয়ে আছেন। আমি বিছানা ছেড়ে আস্তে আস্তে উঠলাম, বাঁশের বেড়ার দরজা হালকা খুলে এক দৌঁড় দিলাম, বিবিদের ঘরের দরজায় গিয়ে দাঁড়ালাম। ঘরের ভিতরে অনেক মানুষের শব্দ,কোলাহলে আমার কান্না আসছিল, ঘরে ঢুকেই দেখি বিবিসহ তার আরও দুইবোন, তিনভাই মিলে কান্নার রুল তুলেছে। বাবা আমাকে দেখে খুব কষ্ট পেলেন, কারন অন্ধকার রাতে আমি কিভাবে উপস্থিত হলাম। বিবির মাকে আমরা মাওই বলে সম্বোধন করতাম, কারন বিবির বাবার নাম আর আমার বাবার নাম একি ছিল। 'মা'ওই সাব আমায় বুকে নিয়ে সেকি কান্না গলাজুড়ে। আমার মনে হচ্ছিল, আল্লাহ্ কেন আমাদের গরীব বানাল, ভাবলাম বৃষ্টিকে ধরতে পারলে কল্লাটা ছিড়ে ফেলতাম, অতি কষ্টে মন থেকে কথাগুলো বের হচ্ছিল, আর কাদঁতেছিলাম বিবির মার সাথে অজুড়ে। এক পর্যায়ে তালই সাব অর্থাৎ বিবির বাবা হতাশ হৃদয়ে বলে উঠল 'পানি দাও পানি খাব'  তারাতারি তাকে পানি পান করানো হল। উনি অনেক লোকের সমাগম দেখে চীৎকার করে বলল, আমাকে দেখে লাভ নেই, তোমরা বৃষ্টির বিরুদ্ধে মিছিল কর, আর আল্লাহ্ কে স্বরন কর'। যাহোক এমতাবস্থায় একজনকে দেখতে পেলাম, কি যেন পুটলা বেঁধে নিয়ে ঘরে প্রবেশ করল। পুটলা বহনকৃত লোকটিকে সন্দেহ হল, কারন উনি সুবিধাবাদী, স্বার্থ ছাড়া কাউকে উপকার করেনা। তথাপি ক্ষনিকের জন্য সবাই আস্বস্ত হলাম, কারন একটা পরিবার অন্ততঃ হাফ ছেড়ে আজকের মত বেঁচে যাক।

মঙ্গলবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২১

POEM

 

LOVE

LOVE IS GREATER THAN LIFE

IT SHOULD LONGER THAN THIEF

NEW COMER SHORT FROM LOVE

THEY ARE NOT SUCCESS FOR DOVE.

WHO BACK TO FROM THE LOVE

SUCCESS MANY SUCCESS FOR LIFE.

LOVE IS MISTAKE FOR GOOD LIFE

WHO SHOULD BECOME THE ADVICE

I THOUGHT THAT YOU ARE HAPPY

WHO LEAVE THE LOVE FOR SOLVENCY

SEA IS LIKE FOR OVER FLOW

BUT IT KINGDOM  DAMAGE HUMAN BELOW

SO THE YOUNG LIKE THE LOVE BEST

THEY WHEN FAILD STOOD FAST NEXT

WE ARE GREATEST FLOWER OF ALLAH

SO WE LOVE FOR ANYBODY COULD LILLAH.

SUCCES

YOU SHOULD NOT TARGET ANY WRONG
LEGAL WAY DONE HAPPY FOR NOT ALONG

WHO ARE GONE TO CHANGE WRONG
VERY LIES TROUGH ANY WAY GONE.
 
IT IS N'T TO HAPPENED YOUR LIFE
HARDLY HARD WORK DONE WITH DRIVE 
 
A CHILD HAD NOT BECOME TO WORK 
 FAMILY MEMBERS IS HIS TEACHER.
 
THEY ARE SHOULD BE DONE THE WORK
CHILD IDEAS SHOW FROM THE  VARIOUS

 WHO CAN GO SOLVE ANY SYSTEM
CHILD LIKE THE OTHER WISE HABIT

MY FULL MIND CRYING FOR BEST
                                                   BUT I HAVE NT SUCCESS ANY WAY.



TERRIBLE NIGHT BANGLA

 নির্জন রাত, জোসনা যেন সূর্যের মত আলো ছড়াচ্ছে। দিনে এক পশলা বৃষ্টিও পড়েছিল। হ্যাঁ আমি চাঁদনী রাতের শুভাকাংখী, কারন সেদিন আমার পকেটে দুইশত টাকাও ছিল মনে বেশ ফুর্তি ১৯৮৪/৮৫ সনের কথা, সবেই আমরা বড় গল্পে মেতে থাকি। কিন্তু না আমি বড় গল্পের পূজারী নয়, কারন আমার জীবনে ঘটে যাওয়া প্রতিটা মূহূর্তের কথা স্বরন রেখেছি, বা জনসমক্ষে তুলে ধরি, কারন সত্যটা বলা আমার তো অভ্যাস।
বেশী দীর্ঘায়িত গল্প করব না, কারন এ ডিজিটাল যুগে কেউ বড় গল্প পছন্দ করে না কারও মনের কষ্ট কেউ উপলব্দি করতে চায়না।
পাঠকগন আমার শিশুকাল আর শৈশবকাল যেভাবে কেটেছে তা কেউ জানলে শুধু মর্মাহত নয়, হার্ড এট্রাক ও করতে পারেন। আমার শৈশব কেটেছে বিভোর পল্লীতে যা পুরোটাই ছিল অভাবী সংসারের অবলীলার সন্ধিক্ষনে। বাবাকে ছোট করব না, কারন উনি যথেষ্ট চেষ্টা করেছেন দু'মুঠো খাইয়ে আমাদের সন্তুষ্ট করার জন্য। কিন্তু বিধির বিধান তা হয়ে উঠেনি। তাই আমার বাবা আমাদের সাতভাইবোনের আহাজারিতে পালিয়ে বেড়াতেন।
 বড়ভাই ঢাকায় বেসরকারী ছোট একটা চাকরি করতেন।
বাবা বাড়ি নেই, আমরা ছয় ভাইবোন মা সাতজন এখন বড়ভাইয়ের কাধেঁ ভর দিয়ে চলছি। এক বড় ধরনের অভাব শুরু হল ভাদ্র মাসে অনবরত বৃষ্টির কারনে  বাবার রোজগার বন্ধ, তাই উনি উধাও হয়ে গেলেন। পনের দিন,মাস পার হয়ে গেল দরদী বাবার খবর নেই। সুদীর্ঘ তিনমাস নেই। আমাদের অনেক কষ্ট, খানাপিনা তথা পড়ালেখা বন্ধ। বড়ভাই যে বেতন পেতেন তাতে দু'শ টাকার বেশি দিতে পারতেন না। দু'বেলা খেলে দু'শ টাকায় আমাদের দশদিন চলত। আহ্ না খেয়ে থাকার দিনগুলোর কথা মনে পড়লে, আজও আমার দু'চোখ বেয়ে অশ্রু পড়ে, আত্বা হুংকার দিয়ে বলে সেসব দিনের কথা মনে করিস না হিরু। সেই সময় তো মা জননী  কোথাও যেতে পারতেন না। তবু অনেক চেষ্টা করে আমাদের একবেলা হলেও অন্ন যোগাতে চেষ্টা করতেন। মা'র সাথে জেদ করতাম না, কারন মা যদি বাবার মত হারিয়ে যায়, আমরা কোথায় গিয়ে দাঁড়াব! কে দিবে বুকে ঠাঁই। তাই হাজার কষ্টের মাঝেও মা কোথাও যেতেন না।
ভাইয়ের চিঠি এল, সে বাবাকে খুঁজার জন্য দিনাজপুর যাবে একতা ট্রেনে অমুক তারিখে,  আমাকে শহরের এক রেলষ্টেশনে থাকতে বললেন, আমাকে কিছু টাকা দিয়ে উনি আবার দিনাজপুর চলে যাবেন। তখন আমি সপ্তম শ্রেনী পড়ুয়া ছাত্র। যে ষ্টেশনে একতা ট্রেন থামবে, সেটা আমাদের বাড়ি হতে পনের কিলোমিটার দুরে অবস্থিত। অর্থাত আমাদের বাড়ি থেকে আরেকটি রেলষ্টেশন যেতে হবে।
একতা এক্সপ্রেস জামালপুর থামবে। জামালপুর যাওয়ার জন্য এখান থেকে বিকেল পাচঁটায় একটা ট্রেন আছে, সেটাই যাওয়ার জন্য তৈরী হয়ে নিলাম। মা আমাকে বারবার হুশিয়ারী দিচ্ছে, আমি একা যেতে পারব কিনা?  আবার ভাই চলে গেলে একা বাড়ি ফিরতে পারব নাকি এ নিয়ে বিভিন্ন টেনশন করছেন আমার প্রানপ্রিয় মা জননী। মা খুব নামাজী এবং কোরআন পড়তেন, বলাবাহুল্য সেই আমলে আমার জানামতে কমপক্ষে একশত এর উপরে হবে মা'র কাছে মেয়েরা কোরআন শরীফ শিখতে দেখেছি।সেই মা আমাদের জন্য দোয়া করতেন আর বলতেন এ কষ্ট তোমাদের বেশিদিন স্থায়ী হবে না। সামনের দিনগুলো তোমাদের আমি খুব ভাল দেখছি, যখন আমি থাকব না। যাহোক মা আমাকে অনেক অনেক দোয়া করে কপালে ফুক দিয়ে বিদায় দিলেন, যাতে ভাইয়ের সাথে  দেখা করে ভালোভাবে ফিরে আসতে পারি। ষ্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষা। মাগরিবের আজানের সময় ট্রেন এল, অনেক ভীড় ঠেলে উঠলাম, এক কোনায় দাঁড়ালাম। আধ ঘন্টার মধ্যেই জামালপুর এসে পৌঁছলাম, ট্রেন থেকে নেমে হাঁটাহাটি করছি, অপেক্ষা রাত দশটা বাজবে ট্রেন আসবে ভাইয়ের সাথে দেখা হবে। আমার ভাইটিও ছিল সোনার মানুষ, এমন ভাই পৃথিবীর বুকে আরেকজন আছে কিনা সন্দেহ। আমার ভাইটি আজও বেঁচে আছেন, আল্লাহ্ র কাছে দোয়া করছি উনার আগে যেন আমার মৃত্যু হয়, কারন তার মৃত্যু যন্ত্রনা আমি সইতে পারবনা। ছয়জন ভাইবোনকে উনি ভরনপোষন করে বড় করেছেন, এমনকি বিয়ে সাদী পর্যন্ত দায়িত্ব পালনে ব্রত ছিলেন। তবে আমাদের দোয়ায় আল্লাহ্ উনাকে একটা সরকারি চাকরিও দান করেছিলেন। যা দিয়ে উনি আমাদের সংসারের পনেরো দিনের খরচ চালাতে পারতেন।মাসের  বাকি দিনগুলো বাবা-মা কষ্ট করে চালাতেন। জামালপুর ষ্টেশনে ঘুরাফেরা করছি, পেটে তো ক্ষুধার অন্ত নেই। ভাই আসবে খুচরা দুইটাকা দিবেন, সেটা দিয়ে হোটেলে পরোটা খাব, এ চিন্তায় মাতোয়ারা। মাঝে মাঝে কান্না আসছিল, হায়রে জগত, এত কষ্ট আল্লাহ আমার কপালে লিখেছিল, যাকগে না কেঁদে আল্লাহ্'র কাছে তওয়াক্কুল করে বসে আছি। কত রঙের কত মানুষ দৃষ্টিগোচর হল, তা বলে শেষ করা যাবেনা। আবার মাঝে মধ্যে হারিয়ে যাওয়া বাবার কথাও মনে উঁকি দিলে তাকেও আশেপাশে খুঁজতে থাকি। বিধির বিধান আর কেউ খন্ডাতে পারেন না। যাহোক ষ্টেশন মাষ্টারের রুমে থাকা বিশাল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি প্রায় দশটা বাজে, একটু পরেই ষ্টেশনে ঘন্টা বাজাল, একজনের কাছে জানতে পারলাম, একতা ট্রেন  আসছে এবার আমার মনোবল দৃঢ় করতে হবে। কারন ভাইকে খুঁজে না পেলে বড় অসুবিধা হবে, সবাইকে অনেকদিন উপোস করতে হবে। সবচাইতে বড় খুশি লাগছে দুই টাকা পাব, যা দিয়ে পরোটা কিনে খাব। ট্রেনের আলো দেখা যাচ্ছে, আমি প্লাটফর্মে শক্তভাবে দাঁড়ালাম, এবার ট্রেন ষ্টেশনে ঢুকছে ভাই চালাকি করে ইঞ্জিনের পিছনের বগিতে উঠেছেন, আর জানালা দিয়ে মুখ বের করে দিয়ে আমায় খুঁজছেন, আমি ভাইকে দেখে ফেলি এমনকি তাড়াতাড়ি সেই বগির নিকট যেতে থাকি, ট্রেন  আস্তে আস্তে থেমে গেল, আমি ভাইয়ের দিকে দৌঁড়াতে থাকি আর ভাইও ট্রেন থেকে নেমে আমাকে জড়াইয়া ধরে তাড়াতাড়ি দুইশত টাকা আমার শার্টের ভিতরের পকেটে ঢুকিয়ে দিলেন। আর আমার হাতে দিলেন দশ টাকা হোটেলে ভাত খাওয়ার জন্য। আমি কথা বলতে পারছিলাম না, কারন কান্নায় আমার বুক ফেটে যাচ্ছিলো, ভাই মুখে চুমো দিয়ে বলল আরে পাগল চিন্তা করবে না, আমি তো আছি, আর টাকাটা ভাল করে রেখ, যাতে না হারায় এই বলে ভাই আবারও ট্রেনের দিকে পা বাড়াল ট্রেনে উঠে আবারও বলল, ভাল থাকিও বোনগুলোর দিক খেয়াল  রেখো। জানেন পাঠকগন ঘটনাটি লিখছি আর কাঁদছি, আল্লাহ্ তুমি ফেরেস্তার মত ভাইটিকে মরনের আগেই বেহেস্ত রেডি করে রেখো, যাক ট্রেন ছেড়ে দিল, আমি তাকাইয়া রইলাম ভাই আড়াল না হওয়া পর্যন্ত। চোখ মুছে এক জায়গায় বসলাম মনকে শান্তনা দিলাম, ভাই তো বলেছে সে থাকতে চিন্তা করতে হবে না। অনেকক্ষন বসে থেকে ভাইয়ের দেয়া দশ টাকা দিয়ে ভাত খাব বলে হোটেলে যাবার সিদ্ধান্ত নিতেই আগে মনে পড়ল, কি দিয়ে ভাত খাব? মাছ না মাংস নাকি ডিম খাব? অনেকদিন মনে হত একটা আস্ত ডিম খেতে পারতাম। ভাবতে ভাবতে বড় ভাবনা সামনে এল, আমি হোটেলে পেট ভরে মাংস দিয়ে ভাত খাব আর আমার অন্য ভাইবোনেরা হয়তঃ রাতে অনাহারে আছে, আমি না থাকার কারনে হয়তঃ আমার মা জননী রাতে পাকও করবেন না, কোনমতে চালিয়ে দেবেন। এই ভেবে আর ভাল খানা ভক্ষন করার ইচ্ছা হারিয়ে ফেললাম। ঘুরে দেখলাম এক ঝুপড়িতে আটা দিয়ে চাপড়া ভাঁজছে তার দিকে এগিয়ে গেলাম, যা মুটামুটি আট আনার খেলেই আমার হয়ে যাবে। আট আনা পয়সা আমার পকেটে ছিল, মা দিয়েছিল, দুরে যাচ্ছি যদি কোন বিপদ হয় তাই মার দেয়া পয়সাটা দিয়েই চাপড়া কিনে খেতে লাগলাম, তাতেই অনেক বরকত উপলব্দি করলাম। এবার রাত একটার ট্রেনের অপেক্ষা। এ সময় রেলষ্টেশনে কতকিছুই না ঘটে গেল তা আর উল্লেখ নাই বা করি, কারন যা দেখেছি তা ষ্টেশনে ঘটেই থাকে। রাত বারোটা হঠাৎ খেয়াল করে পিট পিট করে স্লো গতিতে একটা ট্রেনের আলো দেখা যাচ্ছে, জানতে পারলাম মাল ট্রেন সেটা আমাদের দিকেই যাবে, প্রস্তুতি নিতে থাকি যদি কেউ উঠে আমিও উঠব, দেখি দু একজন লাফিয়ে উঠছে আমিও লাফিয়ে উঠলাম, বড়রা অবাক হল, আমার দৌঁড়ে উঠতে দেখে। কারন আমাদের চলন্ত ট্রেনে উঠার অভ্যাস আছে, কারন ষ্টেশনের কাছে বাড়ি প্রায়ই ট্রেনিং করে থাকি। মুশকিল হল লাফিয়ে উঠার অনেকেই গার্ড সাবকে একটাকা করে সেলামী দিচ্ছে, না দিলে মুশকিল আছে সামনের ষ্টেশনে স্লো না করলে কেউ নামতে পারবে না। আমি তো বিপাকে পড়ে গেলাম, আমার কাছে ভাংতি টাকা নাই, দশ টাকা দিলে যদি পুরোটাই নিয়ে যায়, এ নিয়ে ভাবছি। ভাবতেই গার্ড সাব আমার কাছে এসে মিষ্ট সুরে বলল এই ছোট সাহেব ভাড়া কোথায়? এই বলে আবার আরেকজনের কাছে চলে গেল, বাঁচা গেল আমাকে আর টাকা দিতে হল না। তবুও ভড়কাচ্ছি আবার এসে ধরে কিনা, ভয় পাই আর মা'র দোয়ার কথা মনে করি। যাক এর মাঝেই দেখতে পেলাম আমাদের ষ্টেশনের আলো দেখা যাচ্ছে। ট্রেন একটু স্লো করতেই অনেকেই লাফিয়ে নামতে থাকল, আমিও মা'র দোয়ার ভরসা করে নেমে পড়লাম কোন সমস্যা হল না। এবার খুঁজতে থাকি আমাদের এলাকার কাউকে পাই কিনা, না কাউকে দেখা পেলাম না,হতাশ হয়ে এক হোটেলে গিয়ে বসলাম, আর ভাবলাম দশ টাকা দিয়ে পরোটা আর ডাল ভাজি কিনব, হয়তঃ আমার বোনগুলো আর ছোট ভাইটি না খেয়ে শুয়ে আছে। ভাবতে ভাবতেই সামনে চা এল, অবাক হলাম আমি তো চায়ের কথা বলিনি, সেটা কে বলল, ওয়েটারকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারলাম হোটেল মালিক দিতে বলেছে, আর কিছু না বলে চায়ে চুমুক দিলাম আর ওয়েটারকে বললাম চৌদ্দটা পরোটা আর ডাল ভাজি প্যাকেট করার জন্য। ওয়েটার আমাকে জিজ্ঞেস করছে, টাকা আছে কিনা কথাটি মালিক শুনে ওয়েটারকে ডেকে কষে চড় বসিয়ে দিল গালে আর বলল, ওরা হল, এই ষ্টেশনের ভবিষ্যত কর্নধার টাকা না থাকলে যখন ইনকাম করবে, তখন দিবে। আমি এগিয়ে গিয়ে বললাম, না কাকা আমি এইযে টাকা এখনই দিচ্ছি।মালিক বলল, দেখ আমি তোমার প্রতি খুবি সন্তুষ্ট কারন হোটেলের কাছ দিয়ে ঘুরে যাও, অথচ সাহস করে বসে কোনদিন এক কাপ চা ফ্রিতে খাওনা, তাই আজ বসা মাত্র তোমাকে চা দেয়ার জন্য বলেছি। কি করব কাকা আমরা গরীব মানুষ, চা খাব টাকা পাব কোথায়, তাছাড়া মাগনা খাওয়া ভাল নয়। যাক বাবা এতরাতে পরোটা দিয়ে কি করবে, কাকা আমার ভাইবোনগুলো সারাদিন না খাওয়া তাই নিয়ে যাচ্চি। উনি যত্ন সহকারে পরোটা ভেজে ভাল সবজি দিয়ে দিল, টাকা নিতে চাইনি আমি জোর  করে দিলাম, উনি বললেন তোমার বেশি ক্ষুধা পেলে আমার কাছে এসে খেয়ে যাবে। তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে দোকান থেকে বের হলাম দেখি কোনমতে যদি বাড়ি পৌঁছানো যায়,তাহলে ভাইবোনগুলো খুশিচিত্তে পরোটা খাবে আর আমার কলিজা ঠান্ডা হবে। রাত একটা বাজে বেশ চাঁদনী রাত শুই পর্যন্ত দেখা যায়। মনে সাহস আর আবেগ নিয়ে রওনা হলাম মাঠের ভিতর দিয়ে কারন কিছুদুর এগুলেই পাওয়া যাবে হযরত কাকার ছাউনি, তারপর তাকে নিয়ে বাকি পথ পারি দেব। রওনা হলাম, এখন মনে হচ্চে সামনে যদি একটা বিড়াল দৌড় দেয়, তবু আমি হার্ট এট্রাক করব। এদিক সেদিক তাকাই আর হযরত কাকাকে ডাক দেবার প্রস্তুতি নিয়ে থাকি, কিছু দেখলেই কাকাকে ডাক দেব বলে। যাকগে আল্লাহ্ র নাম জপতে জপতে কাকার ছাউনির কাছে পৌঁছে গেলাম। কাকা মাঠের ভেতর ছাউনি করে টিউবওয়েল পাহারা দেয়, যাতে চুরে না নিতে পারে। সামনে দাঁড়িয়ে শুনতে পেলাম উনি নাক ডেকে ঘুমাচ্ছেন। বসে পড়লাম তার পায়ের কাছে। কাকার ছাউনির একটু দুরেই দুটি তালগাছ, কথিত আছে রাতে ঐ তালগাছ দুটো দুষ্ট প্রকৃতির রুপ ধারন করে, সেখানে খারাপ জ্বিন আছে, মানুষকে ভয় দেখায়। আমাকে সেই তালগাছের নীচ দিয়েই যেতে হবে সেজন্য কাকার সাহায্যের অপেক্ষায় বসে আছি। আমি কাকার দিকে তাকাতেই শুনলাম তালগাছে বিশাল বাতাস বইছে, ফিরে তাকালাম তালগাছের দিকে আশ্চর্য একটা তালগাছ যেন আরেকটা তালগাছের উপর আঁচড়ে পড়ছে মনে হচ্চে তারা মিতালী খেলছে, অবাকের সাথে দারুন ভয় লাগছে। এবার কাকাকে ডাক দিলাম, কাকা বলল, কে হিরু!  হ্যাঁ কাকা আমি হিরু। তুমি কথা বলছ না কেন আর একটু পরে হলেই চোর বলে তোমার মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করে বসতাম। তা এতরাতে কই থাইকা আইলা? আমি জামালপুর থেকে আইলাম। নিশ্চয় সিনেমা দেখতে গিয়েছিলে! না কাকা বাবাকে খুঁজতে গিয়াছিলাম, একথা শুনে উনি খুব মর্মাহত হলেন, আর বাবাকে গালাগালি করতে থাকেন। তারপর জিজ্ঞেস করলেন আমি তার কাছে ঘুমাব নাকি বাড়ি চলে যাব? বাড়ি যাব কাকা না হলে বাড়িতে মা খুব চিন্তা করবেন।আর খেয়াল করে দেখুন তালগাছ কি করছে! কাকা তালগাছের দিকে তাকিয়ে সাহসিকতার সাথে বললেন ও কিছু না বাবা আমার হাতের এই লাঠি দিয়ে দৌঁড়ানি দিলে হাতরাইয়া কুল পাবি নে। চল তোমাকে তালগাছ পার করে দিয়ে আসি, এই কথা বলা মাত্র তালগাছের আগা থেকে ঝুকা ঝুকা আগুনের ফুলকি পড়তে থাকে।  এবার কাকা থমকে দাঁড়াল, এমন অবস্থা দাঁড়াল চাচা নিজের জান বাঁচা এই মূহূর্তে কাকা কি করবে দিশে পাচ্ছে না। কাকা চিল্লাইয়া বলতে লাগল, পালাবি নাকি আমি আগুন জ্বালাইয়া নিয়ে আসব। কাকা এটা বলার পর আগুন নিভে গেল ঠিক, কাকা বলল, এইবার ডরাইছে চল আমরা আগাই। কাকা লাঠি হাতে আগে আমি পিছনে যাব এই সময় যা ঘটল তা মুশকিল।  আগুনটা আবার বিশাল আকার ধারন করে আস্তে আস্তে আমাদের দিকে আসতে থাকে।এখন তো দুজনেই বড় ভয় পাচ্ছি। উনি শুধু বলল, হিরু দৌঁড় দাও, এই বলে উনি দৌঁড় দিলেন, আমি তার পিছু নিতেই আমি তো তার মত দৌঁড়াতে পারব না। সো ভীত সন্ত্রন্ত হয়ে ছাউনির ভিতরে ঢুকে খড়ের বানানো বুন্দা যার ভিতরে আগুন আছে, সেটা নিয়ে বসে পড়লাম, আর মাকে স্বরন করলাম দোয়া কামনার্থে আর কেঁদে ফেলেছি, আর মনে হল আমি যে ছাউনির ভিতরে আছি, এটা মনে হয়, ভূত টের পায়নি, আমার কাছ দিয়েই আগুনটাৃ কাকার পিছু নিল। কাকা দৌড়াচ্ছে পিছনে আগুনের বিশাল ফুলকা যাচ্ছে আমি দেখছি, কিছু করার নেই, কাকাও কতক্ষন দৌঁড়িয়ে হয়তঃবা সারেন্ডার করে মাটিতে শুয়ে পড়ে। আমি বেড়ার ফাঁক দিয়ে দেখতেছিলাম। এবার আগুনের কুন্ডলী যেন কাকাকে ঘিরে নাচছে, আমি খুব টেনশন করছি, আর কাঁদছি, যার কাছে আশ্রয় নিলাম, সেই এখন বিশাল বিপদে।আর আমিতো কেঁদেই সারা আমি কি ছাউনির ভিতর থেকে বের হতে পারব নাকি এর ভিতরেই মরে থাকব, আৃমি কি বাড়ি যেতে পারব না! একটু পর দেখতে পেলাম আগুনের কুন্ডলী  আর নেই, ভাবলাম কাকার কি অবস্থা কিভাবে আমি আগাইয়া দেখব নাকি, আবার ভয়ে কাঁদছি, টেনশনে ছাউনির বাইরে বেরুতে সাহস পাচ্ছিনা। প্রায় একঘন্টা কাঁদাকাটির পর কাকার হুশ হয় আর আমাকে হিরু হিরু বলে চিল্লাইয়া ডাকতে থাকে। আমি তার ডাক শুনে আরও ভড়কে যাচ্ছি, ডাকটা সেই দিচ্ছে নাকি ভূতে দিচ্ছে তা নিয়ে সন্দিহান। কারন ভূতেরাও তার মত আমাকে ডাকতে পারে। তাই ছাউনিতেই বসে রইলাম, আমি মুরুব্বিদের কাছে শুনেছিলাম ঘর ছোট হোক আর বড় হোক তার ভিতরে ভূতপ্রেত ঢুকেনা। হঠাৎই চোখ পড়ল তালগাছের পরই মেইন রোড সেখান দিয়ে তিনচারটে হুজুর মানুষ হেটে যাচ্ছে তারা কিন্তু আমার বাড়ির দিকেই যাচ্ছে, তবে ভয় কিসের? তাদের পিছু নিতে আমার অসুবিধে কোথায়, তবে কথা হল সেই তালগাছের নীচ দিয়েই আমাকে যেতে হবে। সেখান থেকে আমার বাড়ি আর পাঁচশত গজ দূর হবে। হুজুরদের পিছু নিতে মুটামুটি চোখ বন্ধ করে তালগাছের নীচ দিয়েই দৌঁড় দিলাম, তালগাছ পার হয়ে মেইন রোডে উঠে দেখি আর হুজুরদের লেশ মাত্র নেই, আরও ভয় পেলাম এখন আরেক দৌঁড় দিয়ে একজনের ঘরের দরজায় ধপাস করে পড়ে গেলাম,বাড়িওয়ালা সম্পর্কে দাদা লাগে উনি কে কে বলে চিল্লাইতে থাকে আমি আর কথা বলতে পারছিনা, সেই ব্যক্তিও লাঠি হাতে বের হয়ে দেখে আমি দরজায় পড়ে আছি, সে আমাকে চিনে ফেলে আর বলতে থাকে এই হিরু তোর কি হইছে উঠ আমি তোর দাদা বলছি, ভয় পাইছিস নাকিরে, দাদিও বকতে থাকে ছেরাডা হয়তঃ ভয় পাইছে ওর বাবা কই জানি চলে গেছে না খেয়ে দিন যায়, তাই হয়ত ভয়ে অল্পতেই বেহুশ হয়ে পড়েছে এই বলে আমার নাকে চোখে পানি ছিটিয়ে দেয় এবার আমি আস্তে আস্তে তাকিয়ে হজরত কাকা বলে চিল্লাইতে থাকি, তখন সেই দাদার কন্ঠ শুনে হুশ হল, আর কেঁদে ফেলি। দাদাও বাবাকে গালমন্দ করে আমাকে জিজ্ঞেস করল, আমার রাতে বের হওয়ার কারন, বাবাকে খুঁজার কথা বললাম। উনি বলল, যাক আমার পাশে ঘুমিয়ে পড়, আমি বললাম না আমি বাড়ি যাব, উনি একটা লাঠি হাতে নিয়ে আমাকে বাড়ি আগাইয়া দিতে রওনা হলেন, মনের দুঃখে আমি কেঁদেই চলেছি। সে আগে আর আমি পিছনে হাঁটছি, আমাদের বাড়িটাও ছিল ভয়ংকর জায়গায়, তা আরেকটা জায়গায় আপনাদের অনুকূলে সন্নিবেসিত করব। যাহোক পায়ের শব্দ শুনেই মা জননী বলতে থাকে হিরু বাবা এসেছ, আমি কেঁদে কেঁদে বললাম মা আমি এসেছি, দরজা খুলে দিলেন, আমার মা অনেক ধার্মিক ছিলেন, উনি ঘুমাননি, জানেন আমি রাতেই ফিরব, কখন ডাক দেই সেই অপেক্ষায় ছিলেন। দাদা চলে গেল, আর বলল ছেরা ভয় পাইছে, তাকে গোসল করিয়ে দাও, মা ততক্ষনাত আমাকে গোসল খানায় নিয়ে গোসল করালেন, আর নানাবিধ প্রশ্ন করলেন, ভাই সম্পর্কে। গোসল সেরে ঘরে ঢুকে পরোটাগুলো বের করলাম, মা সকলকে জাগ্রত করল। সকলে জেগে পরোটা দেখে কি যে খুশি মনে হচ্ছিল, তাদের খুশিতে হয়তঃ আজ আমি বর্তমানে মহাসুখে আছি। সকলে পরোটা খাচ্ছে খুশি মনে  আমাী মনে হল, পোলাও বিরিয়ানী তাদের এই পরোটার কাছে। এর ফাঁকে মা বলল, সকলেই তোমার বড় বড়ভাইয়ের জন্য দোয়া কর, সে যেন ভালভাবে দিনাজপুর পৌঁছে যায়, আর তোমার বাবাকে খুঁজে পায়। টাকা দুইশত মা'র হাতে দিলাম, আপাততঃ দশদিনের খাবার ঘরে এল। আমি কিন্তু ভাল ছাত্র ছিলাম, ক্লাশে ফাষ্ট বয়, কিন্তু ক্ষুধার তাড়নায় প্রায়ই স্কুলে যেতাম না। স্যারেরা অনেক সময় বাড়ি পর্যন্ত এসে আমাকে স্কুলে নিয়ে যেতেন।

রাতে ঘুম হয়না, কারন ছোট্র একটা বাড়ি পুরুষ বলতে আমি একাই সে বাড়িতে। হতাশা আর ভয় নিয়ে সারারাত জাগ্রত থাকি,  গাছের একটা পাতার শব্দ হলেও আমি বলতে পারতাম কোন গাছের পাতা পড়ল! বা কি হল, সেখানে রাত হলে মনে হত বাঘ হতে শুরু করে ভূতপ্রেতের অভাব ছিল না সবকিছুর ভয় বিদ্যমান। তাই সবসময় একটা কুপি আর ম্যাচ কাছে রাখতাম। তিনদিন হল, ভাই কোন সময় এসে দরজায় লক করে তারও অপেক্ষা। 

চতুর্থদিন রাতে ঘুম হত পগারপার, শুধু টেনশন করছি ভাই কখন আসবে, ভাই অবশ্য রাতে বাড়ি আসলে প্রথম আমাকেই ডাকে। রশিদ রশিদ বলে দু'তিনটে ডাক দেয়। মা'র অর্ডার তিন ডাক পার হলে জবাব দিতে হবে, বুঝতে হবে এটা মানুষ। নচেৎ দু'বা এক ডাক দিয়ে  চুপ হয়ে গেলে সেটা বুঝতে হবে ভুত। এ শিক্ষা মা'র কাছ থেকে পাওয়া। ঐ বাড়িতে কখনও বাবার নাম ধরে, কখনও ভাইয়ের নাম ধরে, আবার কখনও আমার নাম ধরে এক ডাক, দুই ডাক দিয়েছে কতশত আমরা কখনও বের হইনি। ফলে দেখা গেছে সেটা আসলেই মানুষ নয়, কারন আমরা জানালার ফাঁক দিয়ে দেখেছি কিচ্ছু দেখা যায় না। সে রাত তো মোটেই ঘুমাতাম না। যাহোক অনেক কিছু কল্পনা করছি শুয়ে শুয়ে।  হঠাৎ শুনতে পেলাম রাস্তা থেকে কথা বলতে বলতে কারা যেন রাস্তা থেকে নামল, আর ভিতরে ঢুকেই এক ডাক দিল, রশিদ, আমি আরও ডাকের অপেক্ষায় থাকলে মা বলল, তোমার ভাই এসেছে, দরজা খোল। তার মানে মা জননীও ঘুমাইনি এটাই বাস্তব। আমি আগে হুট করে কুপি জ্বালালাম, তারপর দরজা খুলতেই ভাই বলে উঠল, দেখ বাবাকে নিয়ে এসেছি। আমি বাবাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিলাম ভাইবোন সকলে উঠে এসে বাবাকে জড়িয়ে ধরে সে কি কান্না! সেই কান্নায় মনে হয় আল্লাহ্ র দরবার এ আমাদের ভবিষ্যৎ সুখ মন্জুর হয়েছিল। মা জননী শুয়ে শুয়েই কাঁদছেন, উঠতে বিলম্ব করছেন, তাই বড়ভাই মাকে শর্ত জুড়ে দিল, মা উঠ কতদিন তোমার হাতের খাবার খাইনা। এই কথা শুনে মা আর শুয়ে থাকতে পারল না উঠে এসে বলল, হাতমুখ ধুয়ে এসো আমি খাবার দিচ্ছি। এ কথা শুনে আমি অবাক হলাম, কারন আমরা তো রাতে বউখুদ ভাজি খেয়ে শুয়েছি মা ভাত পাবে কোথায়!!  মা জননী কখন জানি ভাত পাক করে রেখেছে ভাই আর বাবা আসবে বলে আর না আসলে সকালে আমাদের সেগুলো পানিভাত হিসাবে সারাদিন চালিয়ে দিত। যাহোক খেতে বসে বাবা ভাইবোন সকলকে সংগে নিল, দুএক লোকমা যা ভাগে পড়ল, তাই সকলে খেলাম।

 এভাবেই বাবাকে সঙ্গে নিয়ে আবারও দুঃখ কষ্টের সংসার কোনক্রমে চলতে থাকল। সেই বড়ভাই আমাকে আজ অন্তর থেকে ভাল জানেনা, সেটা হল ভাবীর কারনে। আমি সেই বড়ভাইকে আজীবন দোয়া করব, শ্রদ্ধা করি পীরের মত, আল্লাহ্ যেন মৃত্যুর আগে তাকে জান্নাতের সুসংবাদ দেন। হে আল্লাহ্ তুমি আমার ভাইকে নেক হায়াত দান কর।

TERRIBLE NIGHT

 Lonely night, moon light is shining like the sun. It rained a lot during the day. Yes, I wish you a happy moonlit night, because I had two hundred rupees in my pocket that day. the year 1984. Although we are all involved in big stories, sometimes even small stories have a combination of fun or soul.
have memorized every moment of my life, or put it in public, because it is very sad to tell the truth or my life story.
I will not make it too long, because now a days in the digital age no one wants to read a long story, no one is willing to experience the sadness of the mind
Friends, if you know the way my childhood and adolescence went, you can not only be shocked but also have a heart attack. I spent my childhood in the village of Beaver, which was the culmination of the hardships of the needy world.
I will not make my father small, because he has tried hard enough to satisfy us by eating two handfuls of food. but the provision of the rules would not have been possible. So my father used to run away with the hunger of our seven siblings. The elder brother had a small job in Dhaka city. Father is not at home, we are living on the shoulders of six siblings, mother and seven elder brothers, half-starved and sometimes starving.
Due to incessant rains, there is a big shortage, father has no work, no income, so one day the father suddenly disappeared, there is no news for fifteen days, the father has not been found for three long months. We have a lot of trouble, stop eating and drinking. The elder brother could not pay more than two hundred rupees. If it was eaten twice, it would last from seven to ten days for two hundred rupees.
Ah, when I think of the days of not eating, tears still come to my eyes, my soul rises. At that time, mother Janani could not go anywhere, but she tried to feed her stomach at least once a day with many techniques. We didn't hurt my mother much because if she left, where would we go? The brother's letter came that he would go to Dinajpur on a date on the Ekota train to find his father, told me to stay at a railway station in the city, give me some money, for family expenses. Then I was a seventh grade student. The station where the Ekota train will stop is 16 kilometers away from our house. But another station is only a mile and a half from our house, the train does not stop here.So I have to go far, Ekota Express Jamalpur will stop at ten o clock at night and I have a train to go to Jamalpur at five o'clock in the afternoon that is what I am getting ready to go. When my brother leaves again, I will have to sit alone at the Jamalpur railway station for another local train which will arrive at 1.00 o'clock in the morning, then I will leave for home.How can I spend so much time, the grief of the mother, the mother was very praying and reading the Qur'an, praying and saying the days ahead are very bright for you, God will be very happy, which I can not see. However, my mother bade me farewell with a lot of prayers so that I could come back after the meeting.I got on the local train and reached Jamalpur, then it was barely five-thirty in the afternoon. I have to wait for my brother till ten o'clock at night. Brother's reputation cannot be made, because Allah himself knows his reputation well. All in all, it is doubtful whether there are two or four such brothers in the world. My brother is still alive today, I pray to God that I die before him, because I will not be able to bear the pain of his death. Apart from him, we have six siblings. He has taken care of everything from education to marriage.
However, he also got a government job from the company, thanks to everyone. With which he used to feed us at least on the fifteenth day of the month, the rest of the days God would feed us, otherwise I would have died. I am wandering around Jamalpur station, there is no end to hunger in my stomach. The brother will come, he will pay two rupees in retail and I will eat parota in the hotel, the drunkards are thinking about this. Sometimes tears were coming. Alas, world, God was written in my forehead with so much pain. I saw so many people of so many colors at the station, because the worst place in the world is the station. I also remember thinking about the lost father, looking around to see if the father can be found. Bidhatai can break the rules, no one else has the power. Anyway, it was ten o'clock at night, by the time the train rang, I was aware that the Ekota Express was coming, I was very careful, I thought firmly that I must get my brother, otherwise I would have to fast. Moreover, all siblings will have to suffer. And I feel very happy that when I meet my brother, he will give me an extra two rupees, with which I will eat parota at the hotel, which means a big deal, sitting at the hotel and eating parota and bhaji means a big gentleman's trunk.Seeing the light of the train, I stood firmly on the platform. The brother cleverly climbed into the carriage behind the engine, and looking out the window at me, I saw the brother. When the train stopped, I ran to my brother, and he got off the train and walked towards me. My brother hugged me and caressed me, took out two hundred rupees, gave me ten rupees to eat so that I could eat rice at the hotel. I can't talk to my brother who is crying. The brother told me to keep the money carefully, and said, don't worry too much, I am here. I looked as long as I could see.The story that I am writing today after forty years, I am still crying, because Mahanubhav Bhai got on the train and left for Dinajpur to find his father. I blessed my brother a lot from the bottom of my heart, where I can eat parota for two rupees, he gave me ten rupees with that money with which I can eat rice at the hotel. After thinking a lot, I left for the hotel to eat, wondering what to eat rice with? Thinking about eating rice, I remembered, why should I go to the hotel to eat, because my other siblings are starving, maybe at night because I am not there, my sad mother did not even arrange their food at night, somehow will spend the night frying rice. I canceled the desire to eat.
In the next hut I saw Chapra frying with flour. I proceeded towards him, which will fill my stomach in fifty paise, if only to satisfy my hunger. Fifty paise was in my pocket, my mother gave me, I'm going away, if there is any danger! I was satisfied with the money given by my mother. I realized many blessings in that. At the end of the meal again waiting for a bad train at night. I will not record anything that happened in the gap.
At twelve o'clock at night I suddenly noticed a freight train coming, it was going towards us, many people started jumping, I also jumped up and sat down, I have a habit of jumping, because the house is near the railway station. This time it was difficult, I noticed that the guard sub was taking a penny from everyone who jumped, to stop the train at our station.But I don't have a penny, so I'm wondering if ten rupees will take the whole thing, I stood silently and the guard walked past me and said where is this Mia fare? Saying this, he went to another person and thought to himself that Allah had saved him from Rahul's clutches.Aslam arrived at our station at half past twelve at night. Silent frozen night, I did not find anyone in our village at the station. I do not dare to go home alone, not afraid of people, but afraid of ghosts. Village houses are full of different proverbs or stories, imitating different places. So the fear is to leave.I sat down in a hotel again, a cup of tea came in front of me in a sweet melody, I looked and didn't find anyone, I was shocked to see the tea come without ordering it. The waiter said "Drink tea" I found out by asking him, the hotel owner said to give tea.I am swallowing embarrassed tea and thinking, there is no retail money, how can I pay the tea bill? After drinking tea, I asked the owner if you asked me to give tea! Good thing I don't have any retail money, I have ten rupees notes. He said it would not cost money, he would not have to pay more when he got the job.I am wandering outside, if I find someone I know, I will go home with him, I can't find anyone, but if I want a very bright night, I can go home with the courage to walk on two feet. In a hurry, I bought ten parota and dalvaji with the ten rupees that my brother gave me to eat, to feed the sisters, and Bidhatai knows how happy they will be if they get it. When I am happy, I am more interested.Although I was a little scared, I left to take care of it. If I leave the main road of the village and go through the field, I will find Hazrat Kakar's camp after some distance. The village is rising in a hurry, I am walking vigorously, the village is still creepy, I am still walking, even if a cat runs in front of me in such a situation, I am sure I will be heartbroken.Uncle guards the tubewell in the tent, standing in front of his tent I heard him snoring and sleeping, I sat down at his feet. Two palm trees a short distance from ancle camp, I heard that I have to go through the underworld of the jinn ghost. So I am sitting in the hope of getting help from ancles. I glanced at the palm tree for a moment, and saw that I was a small man, so stay away, even the old man would be frightened.I noticed that without the wind, the two palm trees were scratching each other and straightening again.I called uncle, uncle said, who is Hiru! Yes uncle I am Hiru. Why don't you talk? After a while, I would hit you on the head with a stick as a thief. Where is Thaika Aila tonight? I came from Jamalpur. Surely you went to see a movie! No, I went to look for Kaka Baba, he was very shocked to hear that, and started abusing Baba. Then he asked me to sleep with him or go home? If you don't go home, uncle will worry a lot at home. And notice what the palm tree is doing! Uncle looked at the palm tree and said boldly and said that if my father ran with this stick in my hand, I would not be able to get cool. Let's cross the palm tree and come to you. This time the uncle stopped, the situation was such that the uncle could not know what to do at this moment to save his life.He started shouting and said, I will escape or I will bring fire. Uncle said it and the fire was extinguished. Uncle said, this time we are scared, let's go. Uncle with a stick in hand before I go back this time what happened is difficult. The fire again took on a huge size and started coming towards us slowly. Now both of us are scared. He just said, "Hiru, run." He ran, saying, "I can't run like him if I follow him." So frightened, I entered the tent and sat down with the straw bunda which has a fire inside, and I sang to my mother and cried for prayers, and it seemed that I was inside the tent, it seemed that the ghost did not notice, through me. fire followed uncle.Uncle is running. I see a huge spark of fire going behind him. There is nothing to do. Uncle has been running for a long uncle.I left, and it seemed that I was inside the tent, it seems that the ghost did not notice, the fire followed me to uncle. Uncle is running. I see a huge spark of fire going behind him. There is nothing to do. Uncle has been running for a long time. I was looking through the gap in the fence. This time the coil of fire is dancing around my uncle, I am very tension, and crying, the one to whom I took refuge is now in great danger. ! After a while I saw the coil of fire was no more, I thought how can I see the condition of Kakar or not, I am crying again in fear, I do not dare to go out of the camp in tension. After crying for about an hour, Kakar regained consciousness and started calling me Hiru Hiru. I am getting more and more furious when I hear his call, I am doubtful whether he is giving the call or the ghost. Because demons can call me like him. So I sat in the tent, I heard from the elders that no matter how small or big the house was, no ghost could enter it. Suddenly I saw three or four people walking on the main road after the palm tree, but they were going towards my house, but what is the fear? Where is my difficulty in following them, but I have to go under that palm tree. My house will be five hundred yards away from there. I ran under the palm tree with my eyes closed to follow the lords. I crossed the palm tree and climbed on the main road and saw that there was no trace of the lords. I was even more frightened. I can't talk anymore, the man came out with a stick in his hand and I was lying in the doorway, he recognized me and said, "Hiru, what happened to you? Get up, I'm telling your grandfather. You're scared, Nakire. I don't know where he is gone, he eats for days, so maybe he fainted a little because he was scared. This time he sprinkled tears on my nose. This time I looked at him softly and started shouting Hazrat ancle Grandpa scolded Dad and asked me, mineHe said, "Let's sleep next to me. I didn't say I would go home. He took a stick in his hand and went to lead me home. Before that and I was walking behind, our house was also in a terrible place, I will put it in another place in your favor. However, as soon as I heard the sound of footsteps, my mother and mother started saying, "Hiru Baba has come." I cried and said, "Mother, I have come." Grandpa left, and Chhera was scared, give him a bath, my mother immediately took me to the bathroom and took a bath, and asked various questions about my brother. After taking a bath, I entered the house and took out the parotas. My mother woke everyone up.Everyone seemed to be happy to see Parota, maybe they are happy, but today I am very happy. I was happy to see everyone eating parota, I thought, polao biryani is their parota. In between, the mother said, "Everyone, pray for your elder brother, that he may reach Dinajpur well, and find your father." I gave two hundred rupees to my mother, for the time being she came to the dining room for ten days. I was a good student, fast boy in class, but I didn't go to school often because of hunger. Serera would often come home and take me to school. 

  I can't sleep at night, because I am alone in a small house. I stay up all night with frustration and fear, even if the sound of a leaf of a tree, I could tell which leaf fell! Or what happened, when it was night there seemed to be no shortage of ghosts starting to be tigers, the fear of everything existed. So I always kept a cup and a match nearby. Three days later, he waited for the brother to come and lock the door.

 On the fourth day, I used to sleep at night, I was just tensing when my brother would come, but my brother would call me first at night. Rashid called Rashid two or three. If the mother's order passes three calls, you have to answer, you have to understand that it is human. Otherwise, if you become silent with a single call, you have to understand that it is a ghost. This education is from mother. In that house, sometimes in the name of father, sometimes in the name of brother, sometimes in my name, one call, two calls, how many of us never came out. As a result, it is not really human, because we can see through the gap in the window, nothing can be seen. I didn't sleep at all that night. Anyway I'm imagining a lot while lying down. Suddenly I heard someone talking from the side of the road.Rashid, while I was waiting for more calls, my mother said, your brother has come, open the door. This means that the mother did not sleep. I hurriedly lit the cup, then as soon as I opened the door my brother said, look, I have brought my father. I hugged my father and cried. All the siblings came up and hugged my father. What a cry! In that cry, it seems that our future happiness was granted in the court of God. Mother Janani is crying while lying down, delaying to get up, so elder brother gave condition to mother, mother get up, how long will you not eat the food in your hand. Hearing this, the mother could not stay up anymore. She got up and said, "Wash your hands and face. I am giving you food." I was surprised to hear this, because we ate bhukhud bhaji at night and went to bed, where can mother get rice! I don't know when mother and mother cooked the rice because my brother and father would come or not. Anyway, sitting down to eat, my father and siblings took everyone with them.

 In this way, the family of grief and suffering continued with my father. That big brother doesn't know me well from the heart today, that is because of his wife. I will bless that elder brother forever, I respect him like a saint, may God give him the good news of paradise before he dies. O God, grant my brother a good life.

মানবী না দানবী

 পৃথিবীটা সৃষ্টি করেছেন মহানুভব সৃষ্টিকর্তা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্নরুপে রুপান্তরিত করে। রাখাল ভাইয়ের ভাটিয়ালী গান, গরুর গাড়ির ক্যাঁচ ক্যাঁচ, দোয়েল, কোয়েল, ময়না, শ্যামা এবং টুনটুনির গান তাছাড়া কোকিলের কুহুতান এই মনোমুগ্ধকর পরিবেশে শুধুই ইচ্ছা করে সাধনার সাধক হয়ে প্রকৃতির স্বাদ গ্রহন করতে। ইচ্ছা থাকা সত্বেও তা সম্ভব হয়নি, কোনকালে। কারন কর্মই বড় ঝুট ঝামেলা। সৌন্দর্যের প্রাচুর্যতায় ভরা এই পৃথিবীতে আমরা শুধু  কর্মের পিছনে ছুটছি তো ছুটছি। ভাগ্যের বিড়ম্বনায় কখন জানি আশা পুরন হবে তা নিয়েই চিন্তাদগ্ধ। 

আমার বড় ইচ্ছা ছিল, প্রকৃতির দাবানলে একদিন একাধারে ঘুরে বেড়াব এবং তা নিয়ে বিশাল কিছু লিখব। কিন্তু তা আর হল কোথায়? কথায় বলে কিনা আশায় গুড়েবালি হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। ইচ্ছার কমতি ছিলনা, আমার ঘুরার একটি সুযোগ ছিল। আমার দুলাভাইয়ের বড়বড় নৌকা ছিল, যেগুলো দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ভাড়ায় চলত। দুলাভাই রুক্ষ মেজাজী এবং ন্যায়পরায়ন ব্যক্তি ছিল।

একদা সাহস করে বললাম"পরীক্ষা শেষ এখন আপনার নৌকায় বহুদুরে বেড়াতে যাব" উনি রেগে ক্ষীন কন্ঠে উত্তর চাইলেন, তা কেথায় বেড়াতে যাবেন স্যার! উত্তরে সুযোগ নিয়ে বললাম চট্রগ্রাম যাব। তিনি কথা না বাড়িয়ে রাজি হয়ে গেলেন। কারন এর আগেও দুএকবার অনুরোধ করেছিলাম, সেজন্য বাড়াবাড়ি না করে এবার রাজি হয়ে গেলেন। আমাকে যথারীতি মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিতে বললেন। মহাখুশীতে আত্বহারা হয়ে যথারীতি প্রস্তুতি গ্রহন করলাম। আমার নেওয়ার মত যা কিছু ছিল তা গুছিয়ে দুলাভাইকে জানালাম। উনি রেগে এবং ঠাট্রার ছলে বললেন কোন মেয়ে টেয়ে গুছাওনি তো? সেদিনই তাকে দেখেছিলাম এ কথাটা বলার পর হাসতে এবং আমাকে একটা সময় দিয়ে বললেন ঘাটে হাজির হতে।

নির্ধারিত সময়ে নৌকা ঘাটে ভিড়াবার পূর্বেই আমি ঘাটে উপস্থিত হলাম, সাথে ছিল আমার একটি বিড়াল ছানা আর একটি টিয়া পাখি। দুলাভাই এগুলো দেখে মন খারাপ করতে চেয়েছিল, কিন্তু মাকে দেখে আর কিছু বলতে পারেনি। নৌকার মাঝি ছয়জন, আর একজন বাবুর্চি আমাকে নিয়া মোট আটজন সদস্য। দুলাভাইয়ের নিষেধ করার কিছু কারন নিহিত ছিল, মাঝে মধ্যেই নৌকায় ডাকাত দল ঝাপিয়ে পড়ত, আবার টাকা পয়সা না পেলে মাঝিদের মারধর করত। এই ভয়ে এতদিন আমাকে যেতে বারন করেছিল।আমার যাতে কোন প্রকার অসুবিধে না হয় সে বিষয়ে মাঝিদের বারবার সতর্ক করে দিল। নৌকা চলছে উজান বেয়ে আমার খুশীর অন্ত নেই। কাংখিত ভ্রমনে বেরুতে পেরেছি। মাঝিরা গুন টেনে নৌকা এগুচ্ছে এখনও ঘাটে দাঁড়ানো মা, সাজু এবং দুলাভাইকে দেখা যাচ্ছে। মাঝিরা গুন টেনে নৌকা চালালেও তাদের ফুর্তির অন্ত ছিল না। কিন্তু আমার খুব কষ্ট লাগছিল। তখনও নৌকায় ইন্জিন লাগানোর যুগে আমার পদার্পন করিনি। তাই তাদের পরিশ্রম আমার গায়ে বিধতেছিল। 

নৌকা খুব ধীরে ধীরে এগুচ্ছিল, ইতিমধ্যেই সন্ধ্যা হতে চলল। আমার ভালই লাগছিল, নদীর মধ্যে সন্ধ্যে হওয়াটা, নৌকা ভিড়াল একটা ঝুপের কাছে। রাতে গুন টেনে নৌকা চালানো দায় তাই তারা বিশ্রামের জন্য নৌকা নোঙর করল। বাবুর্চি এসে খানার আইটেম জানতে চাইলে আমি এক বাটি মুরগির মাংস বের করে দিলাম। বাবুর্চি হেসে বলল এটা তো আপনার জন্য, আমরা কি খাব! তাই হেড মাঝির কাছে জানতে হবে বাজারে যাবে কিনা, আমি বললাম আজ সবাই মুরগী খাবে, আগামীকাল মাছ, পরশু গরুর মাংস, তারপরদিন হাঁস, আবার মুরগী, তারপর আপনারা যা খাবেন তাই আমিও খাব ওকে। এটা শুনে সবাই খুশি হল, যথার্থ উক্তিতে ভরিয়ে তুলল, নৌকায় যেন নতুন দিন ফিরে পেলাম।

বিড়াল আর টিয়া পাখিকে সময়মত খানা দিচ্ছি, তারাও মনে হল ফুর্তিতেই আছে। আমরা যার যার প্রয়োজন সেরে রাতের খানা নিয়ে বসে পড়লাম। খানা খেতে ভালই লাগল, নৌকার মাঝে মাঝিদের রান্না।

বুধবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১

WOMAN OR MONSTER

The world was created by the benevolent Creator who transformed it into a natural beauty. Sephered brother singing Bhatiali songs, the carts of the bullock carts, the songs of Doel, Koel, Moyna, Shyama and Tuntuni, besides the Kuhutan of Kokil, in this enchanting environment, one only wants to become a devotee of Sadhana and enjoy nature.Despite the desire, it was not possible, at any time. Because action is a big problem. In this world full of beauty, we are just running after action. Concerned neo-hippies and their global warming, i'll tell ya.
My big wish was to walk around in the fires of nature one day and write something huge about it. But where is it? dusty in the hope of speaking. There was no lack of will. I had the opportunity to travel, but it would not work if the student life was so hectic. My brother-in-law had big boats that could travel all over the country. Many times I could not manage my brother-in-law because he was a rough-tempered and fair-minded person.Once I dared to say that I have finished the examination and now I am going to go for a long journey in your boat. He claimed where I want to gone? I replied that I would go to Chittagong. He agreed without further ado. As soon as I was allowed to go, I felt as if I had heaven in my hands, and I was preparing tremendously. At the end of my preparation, I informed brother in low. He said angrily that no girl has been picked up! This is the day I saw him leave this statement and smile. He ordered me to stay at the dock for a while.I arrived at the dock before the boat arrived at the dock at the appointed time. With me was my pet kitten, and a pheasant. Dulabhai wanted to say something after seeing them, but he couldn't say anything after seeing his mother. There were six boatmen and a cook, and a total of eight members, including me.There were some reasons for Dulabhai's prohibition. This fear did not let me go for so long. He repeatedly warned the sailors not to harm me in any way. The boat is going upstream, I have no end of happiness. I was able to go on the desired journey.The boatmen are now leading the boat in groups of four. Mercy is glistening inside them, but I am having a hard time seeing their quality. Because even then the age of installing engine in the boat did not prevail. So thei hard work was in vain in my heart.The boat was moving slowly, the evening was already close, I was having a good time, it was evening in the middle of the river. The boat is near a bush, the boat cannot be sailed at night. So now they anchored the boat to spend the night. When the cook came and asked me about the food items, I took out a bowl of chicken, laughed and said this is for you, we have to know what to eat from the headmaster. I said everyone will eat chicken today, tomorrow fish, tomorrow duck, the next day beef, then the next day there will be chicken again, then I will market what I get, so everyone will eat. Everyone was happy to hear this list, Got it.Cats and pheasants also seem happy because they are getting proper food. We sat down to dinner with everyone we needed. It was good to eat, the occasional cooking of the boat. At the end of the dinner they said, listen to the song little sir, I agreed with a laugh. They started playing with bowls and bowls, there is no limit to the merriment of these poor and destitute workers. Dhamadhol, gossiping was going on around midnight, now it was time to go to sleep, because the boat would run till 3.00 clock at dawn.

মঙ্গলবার, ২৯ জুন, ২০২১

WAZ (VIDEO)

 


                                   Lebukhali bridge we are locate the govt. beautiful Thoughtfulness.













my sons dream


waz
waz
jungle men
my dream







রবিবার, ২৮ মার্চ, ২০২১

CONTENT

 WE HOPE THAT OUR GALLERY HAS BEEN NICE & BEAUTIFUL ARRANGE TO LOOK LIKE AND BEAUTIFULL. OUR PRIVACY POLICY IS OPEN FOR ALL. IT DOES NOT HAPPENED IDLE MEN.

শনিবার, ২৭ মার্চ, ২০২১

NICE HOUSE PLAN



 


















HISTORY


 
 
 
ON THE LATE NIGHT TRAIN 
 


Standing in the corridor I defiled myself breaking the unequal irony of sleep. The frightened  heart was tumbling again and again. Because the men with the little extraordinary personality with third class half ticket go into the first class bogie.

Eight grade student  got on the night train and left for Dhaka. Unable to get up to third class under the pressure of the crowd. I in visibly got up to first class with a lot of fear despite the empty seats, I didn’t have the courage to sit.

As a teenager, he did n’t want to give up politics, Is the ticket checker comes and grabs it.The seat will be empty despite this he is not willing to submit to the law. The name of the train was eight down,  in this way, I have to stand for about six hours, looking at Dhaka city with fear full eyes. In the midst of so much fear, I heard from behind, This kid is going to fall asleep and get hurt in a hurry. I looked at him and thought it was a great danger,them and looked at him and self was scared. I got a touch of love in this gaze. she called out in a sweet voice” come with me . I pushed the fear back and ran after him.I entered a dark room with him.I N the dim light realized two women were sitting in a big seat.They were covered with blankets on winter nights. Seeing me enter with the master, they sat down politely. The room had two large seats for six people. The gentlemen instructed me sit down with his daughter Maria.

I strongly objected, I briefly gave the details of getting up in the first class. He told me sit down forced me to. Some of us woke upto his wife and daughter Maria.In the middle of our conversation daughter Maria came and joined me and sat next time. I was too embarrassed to talk to maria but the gentlemen was forced smile and flossed the room with the analogy of my fear. There are three people in each of the two seats in the room, but Maria and I sat in one seat and  the husband wife with in other. Maria went crazy for breakfast this time. Take out various item from father’s bag and croud for eat me. After breakfast, we both went to bed same set. I did nt sleep but I noticed maria's dad was snoring and I was shocked to see maria's condition. Maria was class seven at the time, but she seemed to be big women in winter cloths. Maria is now desperate, because her parents are asleep and now everything can be done. In her mischievous behavior. I went on rampage, and went out of the bath room, Maria followed and eager to engage in evil in the bathroom. I told him not to let everything happen in the room, I came to the room and kept to talking loudly, then his mother said, you go to sleep without talking. What I saw this time is that no teenager  can be right in the condition of his parents in the middle of which the young girl is lying on my chest. I was very scared because it is difficult to say when one is trapped. Maria’s face was quite pall, yet both my fear and shame were at work. But maria is not leaving, for the first time in my life I have to give up on any girl. Maria’s mother again say to me you have fulfill demand of Maria any wanted. So far I am maria. The hope of the mind is forward to maria’s wanted. before that, she sucked my penis and made me unconscious, I became numb. Once out my semen inside me started falling in maria’s mouth, she ate it. Started again, this time she lay down under me, I continued to do every thing without fear, I saw gap in it. The elders are also engaged in same position, meanwhile, in the morning we washed our hands and had breakfast again. Maria’s taste did not fade. So she sent his parents to another room and closed the door. This time I also took the opportunity to hug him arbitrarily which she could not even hunk of now she cannot stand up straight, I said how is it, Maria said I no hobbies anymore.then she called his parents came with him, maria whispered to her mother.

Already the image of Dhaka stored up, maria’s mom found out the details of where and how in live Dhaka and said stay at their house today. Then go to my house tomorrow. When I refused, maria is insisted again togo their house, her father is also requesting, anyway, I agreed.

The train came to a half at kamalapur railway station, this time I saw their car driver come and take their bags. We got in a private car, then realized, uncle is a big officer.

We have reached very quick their house, it is true that maria was a beautiful girl. Her body was very nice for sexy. His plump look drove me crazy.she is always happy for my friendship. Then their house mad thought I was a workaholic because I did not have well dressed cloths.the working girl will also be a little more handsome than maria, who is the quiet lamp. I noticed than maria, who also groaning for me inside, And when she would give me the final treat as a work boy, just then maria sat me down at dining  table and look care of the food, and told the work girl he is your brother in law, that means my lover, who would take care of every time every things. She let out a long sigh and said, it is so good your lover now you can make dulabhai comfortable. The girl is have beautiful figre to look at, but everyone in maria’s family loves her very much is she do not look the boy. After finishing  the meal, I went to bed and sent my to maid sarvent for press my body, I am laying bed wondering what the hell I am going to get out of here. The house maid is pressing my feet, no ten years old boy can be right by observing her face. She presses my feet and says, dulabhai, you have not slept all night, you sleep, I will caress you with my hands everywhere, there is no problem. Then I pet ended to be a sleep and closed my eyes, because when I looked at his face, I was tamped to swallow him too. Any person who sees her lips, breast and body will be mad to get close to her.

Her name was Sazu, when sazu press my legs and touches my thugs, my penis becomes longer. I am in a state of great excitement. But I am controlling myself because, it is not maria, whatever can be done is happy sazu is very happy to see my long penis, she even puts his hand inside the lungi and starts to have fun holding the penis unable to control his grade, she puts in his mouth and stars licking it, very swept.

This situation continued for twenty minutes, I was also having sun pretending to be asleep. Maria has already entered the room, and she did not get angry at the bad behavior and said, sazu ,what are you doing, is this monster catches you, the father will call and leave, she replied, “did you eat this monster’s sex ? yes, that’s why I am warning you. Sazu sat down and challenge me. If he can overcome me, I will gave ten thousand taka. They woke me up to face this challenge, annie heard at all. Maria kept pushing me and I pretended to be alert.

Maria said to me, can’t make sazu’s vagina swell like in the morning? I said it will not happen, if you gave me money, I will take part in this challenge or not. Maria agreed to pay, and I told sazu to be ready. We will have sex and maria will be a spectator. I took sazu’s breast in my mouth and suck it for long time, I touched her nipple gently with my tungue, kissed her hole body. Then I put my cock in her vagina and start to fuck her.  Sazu release her semen after twenty minutes hard fuck. Now sazu began to enjoy and releasing various kind of sound while she cumming. Now maria said for the sake of sazu “sazu you are a looser coz can’t hold ur semen and also you are bleeding. Now you understand how many days in a month?

Sazu is very happy to have such a hard fuck in her new youth. Anyway, this time maria sucked and kissed my cock and put it in sazu’s pussy. I am also having fun without making sazus semen out again and again. After releasing her semen number of  time and she become numb. Maria, this time it’s your turn to make sazu’s faint with a few steps.Tight pussy, fine up and down, brother in law I apologies, now let me go. Then  I graved maria without saying award, she cried as soon as she started fucking him.maria tried to calm me down even though she was incapacitated, but my angry intention was to fuck maria so hard that she would not pussy’s me.this time sazu is thinking about his deeds as a spectator. Because she has lost the bet and is repeatedly watching to see if her pussy is torn. At one point maria also apologizes to me, and says, I will pay twenty thousand taka, not ten thousand taka, but back for my life. If I attack maria more this time, she also becomes numb. I realized  when maria was senseless. Even then I did not ejaculate. I set up to save Maria, I wanted to remember, I continue to fuck saju again, but she was incapable then. Then I forgave them both and sat down on sofa to rest. The village boy has strength on this body, so I gave education and satisfaction to both of them.

In the afternoon I sat on their roof, the two storied house looked good all around, saju and maria were both engaged my service.My brother will  think that he will return from office near Maria's house.

At that time Mari's mother came up to to the roof, He filled us with various humorous words to increase our happiness. She knows every thing we do. I won , you know that too, and I will win again at night to see who wins? On hearing this, Sazu started apologizing in advice. Then Mari's mother said, you can do it, I am here. hearing this statement, lightning struck my head. Is this possible ? what is the activity mother and daughter together !

let us uncle came and said let's go to the market. Everyone got up and started walking towards the market arriving at the market, they bought only 3 set cloths for me and we all ate. Will not cook at night.

Everyone ate to their hearts content. Maria's  father put us in the car and left. we happily stepped towards the house. As soon as I entered the house , Maria dressed me in new cloths, and repeatedly telling Sazu, Sazu will leave you with the news in the new dress. Sazu said I in fear, I will escape at night. 


VILLAGE LIFE CHILDHOOD

Our house was in a secluded area by a canal. Home settlements in places that or who do, they settle in danger. My father was a lazy person, and it was very difficult for him to work. So he sold the land given to him by his father in just ten years. I am going through a hard day. I am studyuing in the seventh grade, the study is going on in the midst of big trouble. especially to describe our house. Mastabar canal on the west side, east the road was on the side, north side was banana's land. there was a big shimul tree on the south side, and the other house was far away. At night it was often heard someone scared under the shimul tree. when ever my father  heard some one screaming, he would come out with a stick to help. 

when dad left, we would all gather and read, and we would go silent in fear. my mother used to tell us, know that there is a gene in this tree, it will not harm us, you will walk fearlessly and if no one urinates under the tree, it will hurt. 

 

LOVE

LOVE IS GREATER THAN LIFE

IT SHOULD LONGER THAN THIEF

NEW COMER SHORT FROM LOVE

THEY ARE NOT SUCCESS FOR DOVE.

WHO BACK TO FROM THE LOVE

SUCCESS MANY SUCCESS FOR LIFE.

LOVE IS MISTAKE FOR GOOD LIFE

WHO SHOULD BECOME THE ADVICE

I THOUGHT THAT YOU ARE HAPPY

WHO LEAVE THE LOVE FOR SOLVENCY

SEA IS LIKE FOR OVER FLOW

BUT IT KINGDOM  DAMAGE HUMAN BELOW

SO THE YOUNG LIKE THE LOVE BEST

THEY WHEN FAILD STOOD FAST NEXT

WE ARE GREATEST FLOWER OF ALLAH

SO WE LOVE FOR ANYBODY COULD LILLAH.

SUCCES

YOU SHOULD NOT TARGET ANY WRONG
LEGAL WAY DONE HAPPY FOR NOT ALONG

WHO ARE GONE TO CHANGE WRONG
VERY LIES TROUGH ANY WAY GONE.
 
IT IS N'T TO HAPPENED YOUR LIFE
HARDLY HARD WORK DONE WITH DRIVE 
 
A CHILD HAD NOT BECOME TO WORK 
 FAMILY MEMBERS IS HIS TEACHER.
 
THEY ARE SHOULD BE DONE THE WORK
CHILD IDEAS SHOW FROM THE  VARIOUS

 WHO CAN GO SOLVE ANY SYSTEM
CHILD LIKE THE OTHER WISE HABIT

MY FULL MIND CRYING FOR BEST
                                                  BUT I HAVE NT SUCCESS ANY WAY.



শনিবার, ২০ মার্চ, ২০২১

ইসলামিক কালচার কোরআন


 [২২:১] আল হাজ্জ্ব


বায়ান ফাউন্ডেশন:

হে মানুষ, তোমরা তোমাদের রবকে ভয় কর। নিশ্চয় কিয়ামতের প্রকম্পন এক ভয়ঙ্কর ব্যাপার।

ইসলামিক কালচার হাদিস

 বিস্ মিল্লাহির রামানির রাহিম

“হাদীসে কুদসী” ও কুরআনুল কারীমের মধ্যে পার্থক্য:

১. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট জিবরীল আলাইহিস সালাম কুরআনুল কারীম নিয়ে অবতরণ করেছেন, কিন্তু হাদীসে কুদসী তিনি লাভ করেছেন কখনো জিবরীল, কখনো এলহাম, কখনো অন্য মাধ্যমে।

২. সম্পূর্ণ কুরআন মুতাওয়াতির সনদে বর্ণিত, কিন্তু হাদীসে কুদসী অনুরূপ নয়।

৩. কুরআনুল কারীমে ভুল অনুপ্রবেশ করতে পারে না, কিন্তু হাদীসে কুদসীতে কখনো কোনো বর্ণনাকারী ধারণার বশবর্তী হয়ে বর্ণনা করার সময় ভুল করতে পারে।

৪. সালাতে কুরআনুল কারীম তিলাওয়াত করতে হয়, কিন্তু হাদীস কুদসী তিলাওয়াত করা বৈধ নয়।

৫. কুরআনুল কারীম সূরা, আয়াত, পারা ও অংশ ইত্যাদিতে বিভক্ত, কিন্তু হাদীসে কুদসী অনুরূপ নয়।

৬. কুরআনুল কারীম তিলাওয়াত করলে সাওয়াব রয়েছে, কিন্তু হাদীসে কুদসীতে অনুরূপ ফযীলত নেই।

৭. কুরআনুল কারীম কিয়ামত পর্যন্ত সর্বকালের জন্য মু‘জিযা।

৮. কুরাআনুল কারীম অস্বীকারকারী কাফির, কিন্তু হাদীসে কুদসী অস্বীকারকারী অনুরূপ নয়। (কারণ, তার মনে হতে পারে যে, এটি দুর্বল)।

৯. হাদীসে কুদসীর শুধু ভাব বর্ণনা করা বৈধ, কিন্তু কুরআনুল কারীমের ভাবকে কুরআন হিসেবে বর্ণনা করা বৈধ নয়; অনুরূপভাবে কুরআনের অর্থের তিলাওয়াতও বৈধ নয়।

এ হচ্ছে কুরআন ও হাদীসে কুদসীর মধ্যে মৌলিক ও গুরুত্বপূর্ণ কতক পার্থক্য, এ ছাড়া উভয়ের আরো কিছু পার্থক্য রয়েছে।
 
 
 
 
 
 
 . আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

1- «يَقُولُ اللَّهُ: إِذَا أَرَادَ عَبْدِي أَنْ يَعْمَلَ سَيِّئَةً فَلَا تَكْتُبُوهَا عَلَيْهِ حَتَّى يَعْمَلَهَا، فَإِنْ عَمِلَهَا فَاكْتُبُوهَا بِمِثْلِهَا، وَإِنْ تَرَكَهَا مِنْ أَجْلِي، فَاكْتُبُوهَا لَهُ حَسَنَةً، وَإِذَا أَرَادَ أَنْ يَعْمَلَ حَسَنَةً فَلَمْ يَعْمَلْهَا، فَاكْتُبُوهَا لَهُ حَسَنَةً، فَإِنْ عَمِلَهَا فَاكْتُبُوهَا لَهُ بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا إِلَى سَبْعمِائَةِ ضِعْفٍ».



“আল্লাহ বলেন: আমার বান্দা যখন কোনো পাপ করার ইচ্ছা করে, তখন তোমরা তা লিখ না যতক্ষণ না সে তা করে। যদি সে তা করে সমান পাপ লিখ। আর যদি সে তা আমার কারণে ত্যাগ করে[1], তাহলে তার জন্য তা নেকি হিসেবে লিখ। আর যদি সে নেকি করার ইচ্ছা করে কিন্তু সে তা করে নি, তার জন্য তা নেকি হিসেবে লিখ। অতঃপর যদি সে তা করে তাহলে তার জন্য তা দশগুণ থেকে সাতশো গুণ পর্যন্ত লিখ”। (সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম) হাদীসটি সহীহ।

 আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

6- «قَالَ اللَّهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى: أَنَا أَغْنَى الشُّرَكَاءِ عَنْ الشِّرْكِ، مَنْ عَمِلَ عَمَلاً أَشْرَكَ فِيهِ مَعِي غَيْرِي تَرَكْتُهُ وَشِرْكَه».



“আল্লাহ তা‘আলা বলেন: শরীকদের মধ্যে অংশীদারির অংশ (শির্ক) থেকে আমিই অধিক অমুখাপেক্ষী, যে কেউ এমন আমল করল যাতে আমার সাথে অপরকে শরীক করেছে, আমি তাকে ও তার শির্ককে প্রত্যাখ্যান করি”।[3] (সহীহ মুসলিম) হাদীসটি হাসান।
 

৫৮. মাসরুক থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

58- «سَأَلْنَا عَبْدَ اللَّهِ (هو ابن مسعود -رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ-) عَنْ هَذِهِ الْآيَة:ِ ﴿وَلَا تَحۡسَبَنَّ ٱلَّذِينَ قُتِلُواْ فِي سَبِيلِ ٱللَّهِ أَمۡوَٰتَۢاۚ بَلۡ أَحۡيَآءٌ عِندَ رَبِّهِمۡ يُرۡزَقُونَ ١٦٩﴾ [ال عمران: ١٦٩] قَالَ: أَمَا إِنَّا قَدْ سَأَلْنَا عَنْ ذَلِكَ فَقَالَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم : «أَرْوَاحُهُمْ فِي جَوْفِ طَيْرٍ خُضْرٍ لَهَا قَنَادِيلُ مُعَلَّقَةٌ بِالْعَرْشِ تَسْرَحُ مِنْ الْجَنَّةِ حَيْثُ شَاءَتْ ثُمَّ تَأْوِي إِلَى تِلْكَ الْقَنَادِيلِ فَاطَّلَعَ إِلَيْهِمْ رَبُّهُمْ اطِّلَاعَةً فَقَالَ: هَلْ تَشْتَهُونَ شَيْئًا؟ قَالُوا: أَيَّ شَيْءٍ نَشْتَهِي؟ وَنَحْنُ نَسْرَحُ مِنْ الْجَنَّةِ حَيْثُ شِئْنَا، فَفَعَلَ ذَلِكَ بِهِمْ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ فَلَمَّا رَأَوْا أَنَّهُمْ لَنْ يُتْرَكُوا مِنْ أَنْ يُسْأَلُوا قَالُوا: يَا رَبِّ نُرِيدُ أَنْ تَرُدَّ أَرْوَاحَنَا فِي أَجْسَادِنَا حَتَّى نُقْتَلَ فِي سَبِيلِكَ مَرَّةً أُخْرَى، فَلَمَّا رَأَى أَنْ لَيْسَ لَهُمْ حَاجَةٌ تُرِكُوا».



“আমরা আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদকে এ আয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছি: ﴿وَلَا تَحۡسَبَنَّ ٱلَّذِينَ قُتِلُواْ فِي سَبِيلِ ٱللَّهِ أَمۡوَٰتَۢاۚ بَلۡ أَحۡيَآءٌ عِندَ رَبِّهِمۡ يُرۡزَقُونَ ١٦٩﴾ [ال عمران: ١٦٩] “আর যারা আল্লাহর পথে জীবন দিয়েছে, ‎তাদেরকে তুমি মৃত মনে কর না, বরং তারা ‎তাদের রবের নিকট জীবিত। তাদেরকে রিযিক ‎‎দেওয়া হয়”। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৬৯] তিনি বলেন: জেনে রেখ, আমরাও এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছি, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “তাদের রূহসমূহ সবুজ পাখির পেটে, যার জন্য রয়েছে আরশের সাথে ঝুলন্ত প্রদীপ, সে জান্নাতের যেখানে ইচ্ছা ভ্রমণ করে, অতঃপর উক্ত প্রদীপে এসে আশ্রয় গ্রহণ করে। একদা তাদের দিকে তাদের রব দৃষ্টি দেন অতঃপর বলেন: তোমরা কিছু চাও? তারা বলবে: আমরা কি চাইব, অথচ আমরা জান্নাতের যেখানে ইচ্ছা বিচরণ করি? এভাবে তাদেরকে তিনবার জিজ্ঞাসা করবেন, যখন তারা দেখবে যে কোনো কিছু চাওয়া ব্যতীত তাদেরকে নিস্তার দেওয়া হবে না, তারা বলবে: হে রব আমরা চাই আমাদের রুহগুলো আমাদের শরীরে ফিরিয়ে দিন, যেন দ্বিতীয়বার আপনার রাস্তায় শহীদ হতে পারি। যখন তিনি দেখবেন যে তাদের কোনো চাহিদা নেই তাদের অব্যাহতি দেওয়া হবে”। (সহীহ মুসলিম, নাসাঈ ও ইবন মাজাহ) হাদীসটি সহীহ।আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

60- «يُؤْتَى بِالرَّجُلِ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ فَيَقُولُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ: يَا ابْنَ آدَمَ كَيْفَ وَجَدْتَ مَنْزِلَكَ؟ فَيَقُولُ: أَيْ رَبِّ خَيْرَ مَنْزِلٍ, فَيَقُولُ: سَلْ وَتَمَنَّ، فَيَقُولُ: أَسْأَلُكَ أَنْ تَرُدَّنِي إِلَى الدُّنْيَا فَأُقْتَلَ فِي سَبِيلِكِ عَشْرَ مَرَّات،ٍ لِمَا يَرَى مِنْ فَضْلِ الشَّهَادَةِ».



“জান্নাতি এক ব্যক্তিকে আনা হবে, অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা বলবেন: হে বনি আদম তোমার স্থান কি রকম পেয়েছ? সে বলবে: হে আমার রব সবচেয়ে উত্তম। তিনি বলবেন: চাও, আশা কর। সে বলবে: তোমার নিকট প্রার্থনা করছি তুমি আমাকে দুনিয়াতে ফিরিয়ে দাও, যেন তোমার রাস্তায় আমি দশবার শহীদ হতে পারি, যেহেতু সে শাহাদাতের মর্যাদা প্রত্যক্ষ করবে”। (নাসাঈ, আহমদ ও হাকেম) হাদীসটি সহীহ।



পরিচ্ছেদঃ ৮২/১৫. (আল্লাহর বাণী) : আল্লাহ আমাদের জন্য যা নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন তাছাড়া অন্য কিছুই আমাদের ঘটবে না - (সূরাহ আত্-তাওবাহ ৯/৫১)। قَضَى قَالَ مُجَاهِدٌ (بِفَاتِنِينَ) بِمُضِلِّينَ إِلاَّ مَنْ كَتَبَ اللهُ أَنَّهُ يَصْلَى الْجَحِيمَ (قَدَّرَ فَهَدَى) قَدَّرَ الشَّقَاءَ وَالسَّعَادَةَ وَهَدَى الأَنْعَامَ لِمَرَاتِعِهَا كَتَبَ নির্দিষ্ট করেছেন- (সূরাহ আস্ সাফফাত ৩৭/১৬২)। মুজাহিদ (রহ.) বলেছেন (بِفَاتِنِينَ) যারা পথভ্রষ্ট হয়, হ্যাঁ যার ব্যাপারে আল্লাহ্ লিখে দিয়েছেন যে, সে জাহান্নামে যাবে- (সূরাহ আ’লা ৮৭/৩)। (قَدَّرَ فَهَدَى) দুর্ভাগ্য ও সৌভাগ্য নির্দিষ্ট করেছেন। জীব-জন্তুকে চারণভূমিতে পৌঁছে দেয়া। ৬৬১৯ ‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি একবার রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে প্লেগ রোগ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। তিনি বললেনঃ এটা একটা ‘আযাব। আল্লাহ্ যার উপর ইচ্ছে তা পাঠান। আল্লাহ্ এটা মুসলিমের জন্য রহমত করে দিয়েছেন। প্লেগে আক্রান্ত শহরে কোন বান্দা যদি ধৈর্য ধরে বিশ্বাসের সাথে অবস্থান করে, সেখান থেকে বের না হয়, আল্লাহ্ তার জন্য যা লিখেছেন তা ছাড়া কিছুই তাকে স্পর্শ করবে না, সে অবস্থায় সে শহীদের সাওয়াব পাবে।[1] [৩৪৭৪] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬১৫৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৬৬) [1] যারা প্লেগে আক্রান্ত স্থানে অবস্থান করছে তারা যেন সেখান থেকে বেরিয়ে অন্যত্র চলে না যায়। কারণ সেখানে যারা থাকবে সবারই মৃত্যু হবে না, যার মৃত্যু প্লেগে হবে নির্ধারিত আছে তারই মৃত্যু হবে। আক্রান্ত এলাকার বাইরে চলে গেলেও প্লেগে মৃত্যু হতে পারে যদি তা সেভাবেই নির্ধারিত থাকে। তবে বিপদ-ব্যাধি মুক্ত এলাকা ছেড়ে বিপদ-ব্যাধি আক্রান্ত স্থানে যাওয়া নিষিদ্ধ।পরিচ্ছেদঃ ৮২/১৫. (আল্লাহর বাণী) : আল্লাহ আমাদের জন্য যা নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন তাছাড়া অন্য কিছুই আমাদের ঘটবে না - (সূরাহ আত্-তাওবাহ ৯/৫১)। قَضَى قَالَ مُجَاهِدٌ (بِفَاتِنِينَ) بِمُضِلِّينَ إِلاَّ مَنْ كَتَبَ اللهُ أَنَّهُ يَصْلَى الْجَحِيمَ (قَدَّرَ فَهَدَى) قَدَّرَ الشَّقَاءَ وَالسَّعَادَةَ وَهَدَى الأَنْعَامَ لِمَرَاتِعِهَا كَتَبَ নির্দিষ্ট করেছেন- (সূরাহ আস্ সাফফাত ৩৭/১৬২)। মুজাহিদ (রহ.) বলেছেন (بِفَاتِنِينَ) যারা পথভ্রষ্ট হয়, হ্যাঁ যার ব্যাপারে আল্লাহ্ লিখে দিয়েছেন যে, সে জাহান্নামে যাবে- (সূরাহ আ’লা ৮৭/৩)। (قَدَّرَ فَهَدَى) দুর্ভাগ্য ও সৌভাগ্য নির্দিষ্ট করেছেন। জীব-জন্তুকে চারণভূমিতে পৌঁছে দেয়া। ৬৬১৯ ‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি একবার রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে প্লেগ রোগ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। তিনি বললেনঃ এটা একটা ‘আযাব। আল্লাহ্ যার উপর ইচ্ছে তা পাঠান। আল্লাহ্ এটা মুসলিমের জন্য রহমত করে দিয়েছেন। প্লেগে আক্রান্ত শহরে কোন বান্দা যদি ধৈর্য ধরে বিশ্বাসের সাথে অবস্থান করে, সেখান থেকে বের না হয়, আল্লাহ্ তার জন্য যা লিখেছেন তা ছাড়া কিছুই তাকে স্পর্শ করবে না, সে অবস্থায় সে শহীদের সাওয়াব পাবে।[1] [৩৪৭৪] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬১৫৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৬৬) [1] যারা প্লেগে আক্রান্ত স্থানে অবস্থান করছে তারা যেন সেখান থেকে বেরিয়ে অন্যত্র চলে না যায়। কারণ সেখানে যারা থাকবে সবারই মৃত্যু হবে না, যার মৃত্যু প্লেগে হবে নির্ধারিত আছে তারই মৃত্যু হবে। আক্রান্ত এলাকার বাইরে চলে গেলেও প্লেগে মৃত্যু হতে পারে যদি তা সেভাবেই নির্ধারিত থাকে। তবে বিপদ-ব্যাধি মুক্ত এলাকা ছেড়ে বিপদ-ব্যাধি আক্রান্ত স্থানে যাওয়া নিষিদ্ধ।পরিচ্ছেদঃ ৮২/১৫. (আল্লাহর বাণী) : আল্লাহ আমাদের জন্য যা নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন তাছাড়া অন্য কিছুই আমাদের ঘটবে না - (সূরাহ আত্-তাওবাহ ৯/৫১)। قَضَى قَالَ مُجَاهِدٌ (بِفَاتِنِينَ) بِمُضِلِّينَ إِلاَّ مَنْ كَتَبَ اللهُ أَنَّهُ يَصْلَى الْجَحِيمَ (قَدَّرَ فَهَدَى) قَدَّرَ الشَّقَاءَ وَالسَّعَادَةَ وَهَدَى الأَنْعَامَ لِمَرَاتِعِهَا كَتَبَ নির্দিষ্ট করেছেন- (সূরাহ আস্ সাফফাত ৩৭/১৬২)। মুজাহিদ (রহ.) বলেছেন (بِفَاتِنِينَ) যারা পথভ্রষ্ট হয়, হ্যাঁ যার ব্যাপারে আল্লাহ্ লিখে দিয়েছেন যে, সে জাহান্নামে যাবে- (সূরাহ আ’লা ৮৭/৩)। (قَدَّرَ فَهَدَى) দুর্ভাগ্য ও সৌভাগ্য নির্দিষ্ট করেছেন। জীব-জন্তুকে চারণভূমিতে পৌঁছে দেয়া। ৬৬১৯ ‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি একবার রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে প্লেগ রোগ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। তিনি বললেনঃ এটা একটা ‘আযাব। আল্লাহ্ যার উপর ইচ্ছে তা পাঠান। আল্লাহ্ এটা মুসলিমের জন্য রহমত করে দিয়েছেন। প্লেগে আক্রান্ত শহরে কোন বান্দা যদি ধৈর্য ধরে বিশ্বাসের সাথে অবস্থান করে, সেখান থেকে বের না হয়, আল্লাহ্ তার জন্য যা লিখেছেন তা ছাড়া কিছুই তাকে স্পর্শ করবে না, সে অবস্থায় সে শহীদের সাওয়াব পাবে।[1] [৩৪৭৪] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬১৫৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৬৬) [1] যারা প্লেগে আক্রান্ত স্থানে অবস্থান করছে তারা যেন সেখান থেকে বেরিয়ে অন্যত্র চলে না যায়। কারণ সেখানে যারা থাকবে সবারই মৃত্যু হবে না, যার মৃত্যু প্লেগে হবে নির্ধারিত আছে তারই মৃত্যু হবে। আক্রান্ত এলাকার বাইরে চলে গেলেও প্লেগে মৃত্যু হতে পারে যদি তা সেভাবেই নির্ধারিত থাকে। তবে বিপদ-ব্যাধি মুক্ত এলাকা ছেড়ে বিপদ-ব্যাধি আক্রান্ত স্থানে যাওয়া নিষিদ্ধ।পরিচ্ছেদঃ ৮২/১৫. (আল্লাহর বাণী) : আল্লাহ আমাদের জন্য যা নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন তাছাড়া অন্য কিছুই আমাদের ঘটবে না - (সূরাহ আত্-তাওবাহ ৯/৫১)। قَضَى قَالَ مُجَاهِدٌ (بِفَاتِنِينَ) بِمُضِلِّينَ إِلاَّ مَنْ كَتَبَ اللهُ أَنَّهُ يَصْلَى الْجَحِيمَ (قَدَّرَ فَهَدَى) قَدَّرَ الشَّقَاءَ وَالسَّعَادَةَ وَهَدَى الأَنْعَامَ لِمَرَاتِعِهَا كَتَبَ নির্দিষ্ট করেছেন- (সূরাহ আস্ সাফফাত ৩৭/১৬২)। মুজাহিদ (রহ.) বলেছেন (بِفَاتِنِينَ) যারা পথভ্রষ্ট হয়, হ্যাঁ যার ব্যাপারে আল্লাহ্ লিখে দিয়েছেন যে, সে জাহান্নামে যাবে- (সূরাহ আ’লা ৮৭/৩)। (قَدَّرَ فَهَدَى) দুর্ভাগ্য ও সৌভাগ্য নির্দিষ্ট করেছেন। জীব-জন্তুকে চারণভূমিতে পৌঁছে দেয়া। ৬৬১৯ ‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি একবার রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে প্লেগ রোগ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। তিনি বললেনঃ এটা একটা ‘আযাব। আল্লাহ্ যার উপর ইচ্ছে তা পাঠান। আল্লাহ্ এটা মুসলিমের জন্য রহমত করে দিয়েছেন। প্লেগে আক্রান্ত শহরে কোন বান্দা যদি ধৈর্য ধরে বিশ্বাসের সাথে অবস্থান করে, সেখান থেকে বের না হয়, আল্লাহ্ তার জন্য যা লিখেছেন তা ছাড়া কিছুই তাকে স্পর্শ করবে না, সে অবস্থায় সে শহীদের সাওয়াব পাবে।[1] [৩৪৭৪] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬১৫৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৬৬) [1] যারা প্লেগে আক্রান্ত স্থানে অবস্থান করছে তারা যেন সেখান থেকে বেরিয়ে অন্যত্র চলে না যায়। কারণ সেখানে যারা থাকবে সবারই মৃত্যু হবে না, যার মৃত্যু প্লেগে হবে নির্ধারিত আছে তারই মৃত্যু হবে। আক্রান্ত এলাকার বাইরে চলে গেলেও প্লেগে মৃত্যু হতে পারে যদি তা সেভাবেই নির্ধারিত থাকে। তবে বিপদ-ব্যাধি মুক্ত এলাকা ছেড়ে বিপদ-ব্যাধি আক্রান্ত স্থানে যাওয়া নিষিদ্ধ।

 


৭. ‘‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, আবূ সুফইয়ান ইবনু হরব তাকে বলেছেন, রাজা হিরাক্লিয়াস একদা তাঁর নিকট লোক প্রেরণ করলেন। তিনি তখন ব্যবসা উপলক্ষে কুরাইশদের কাফেলায় সিরিয়ায় ছিলেন। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে সময় আবূ সুফইয়ান ও কুরাইশদের সঙ্গে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সন্ধিতে আবদ্ধ ছিলেন। আবূ সুফইয়ান তার সাথী সহ হিরাক্লিয়াসের নিকট আসলেন এবং তখন হিরাক্লিয়াস জেরুযালেমে ছিলেন। হিরাক্লিয়াস তাদেরকে তাঁর নিকটে ডেকে পাঠালেন। তাঁর নিকটে তখন রোমের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিল। অতঃপর তাদের নিকটে ডাকলেন এবং দোভাষীকে ডাকলেন। অতঃপর জিজ্ঞেস করলেন, ‘এই যে ব্যক্তি নিজেকে নবী বলে দাবী করে-তোমাদের মাঝে বংশের দিক হতে তাঁর সবচেয়ে নিকটাত্মীয় কে’? আবূ সুফইয়ান বলেন, ‘আমি বললাম, বংশের দিক দিয়ে আমিই তাঁর নিকটাত্মীয়।’ তিনি বললেন, ‘তাঁকে আমার অতি নিকটে আন এবং তাঁর সাথীদেরকেও তার পেছনে বসিয়ে দাও।’

অতঃপর তাঁর দোভাষীকে বললেন, ‘তাদের বলে দাও, আমি এর নিকট সে ব্যক্তি সম্পর্কে কিছু জিজ্ঞেস করব, যদি সে আমার নিকট মিথ্যা বলে, তখন সঙ্গে সঙ্গে তোমরা তাকে মিথ্যুক বলবে। আবূ সুফ্ইয়ান বলেন, ‘আল্লাহর কসম! আমার যদি এ লজ্জা না থাকত যে, তারা আমাকে মিথ্যাবাদী বলে প্রচার করবে, তবে আমি অবশ্যই তাঁর সম্পর্কে মিথ্যা বলতাম।’

অতঃপর তিনি তাঁর সম্পর্কে আমাকে সর্বপ্রথম যে প্রশ্ন করেন তা হলো, ‘বংশমর্যাদার দিক দিয়ে তোমাদের মধ্যে সে কিরূপ?’ আমি বললাম, ‘তিনি আমাদের মধ্যে খুব সম্ভ্রান্ত বংশের।’ তিনি বললেন, ‘তোমাদের মধ্যে এর পূর্বে আর কখনো কি কেউ এরূপ কথা বলেছে?’ আমি বললাম, ‘না।’ তিনি বললেন, ‘তাঁর পূর্বপুরুষের মধ্যে কেউ কি বাদশাহ ছিলেন?’ আমি বললাম, ‘না।’ তিনি বললেন, ‘সম্ভ্রান্ত মর্যাদাবান শ্রেণীর লোকেরা তাঁর অনুসরণ করে, নাকি দুর্বল লোকেরা?’ আমি বললাম, ‘দুর্বল লোকেরা।’ তিনি বললেন, ‘তাদের সংখ্যা কি বাড়ছে, না কমছে?’ আমি বললাম, ‘তারা বেড়েই চলেছে।’ তিনি বললেন, ‘তাঁর ধর্মে ঢুকে কেউ কি অসন্তুষ্ট হয়ে তা ত্যাগ করে?’ আমি বললাম, ‘না।’ তিনি বললেন, ‘তার দাবীর পূর্বে তোমরা কি কখনো তাঁকে মিথ্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছ?’ আমি বললাম, ‘না।’ তিনি বললেন, ‘তিনি কি সন্ধি ভঙ্গ করেন?’ আমি বললাম, ‘না। তবে আমরা তাঁর সঙ্গে একটি নির্দিষ্ট সময়ের সন্ধিতে আবদ্ধ আছি। জানি না, এর মধ্যে তিনি কী করবেন।’ আবূ সুফ্ইয়ান বলেন, ‘এ কথাটি ব্যতীত নিজের পক্ষ হতে আর কোন কথা যোগ করার সুযোগই আমি পাইনি।’ তিনি বললেন, ‘তোমরা তাঁর সঙ্গে কখনো যুদ্ধ করেছ কি?’ আমি বললাম, ‘হ্যাঁ।’ তিনি বললেন, ‘তাঁর সঙ্গে তোমাদের যুদ্ধের পরিণাম কি হয়েছে?’ আমি বললাম, ‘তাঁর ও আমাদের মধ্যে যুদ্ধের ফলাফল কুপের বালতির ন্যায়।’ কখনো তাঁর পক্ষে যায়, আবার কখনো আমাদের পক্ষে আসে।’ তিনি বললেন, ‘তিনি তোমাদের কিসের আদেশ দেন?’ আমি বললাম, ‘তিনি বলেনঃ তোমরা এক আল্লাহর ইবাদত কর এবং তাঁর সঙ্গে কোন কিছুর অংশীদার সাব্যস্ত করো না এবং তোমাদের পূর্বপুরুষরা যা বলে তা ত্যাগ কর। আর তিনি আমাদের সালাত আদায়ের, সত্য বলার, চারিত্রিক নিষ্কলুষতার এবং আত্মীয়দের সঙ্গে সদাচরণ করার নির্দেশ দেন।’

অতঃপর তিনি দোভাষীকে বললেন, ‘তুমি তাকে বল, আমি তোমার নিকট তাঁর বংশ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছি। তুমি তার জবাবে উল্লেখ করেছ যে, তিনি তোমাদের মধ্যে সম্ভ্রান্ত বংশের। প্রকৃতপক্ষে রাসূলগণকে তাঁদের কওমের উচ্চ বংশেই পাঠানো হয়ে থাকে। তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, এ কথা তোমাদের মধ্যে ইতিপূর্বে আর কেউ বলেছে কিনা? তুমি বলেছ, ‘না।’ তাই আমি বলছি, পূর্বে যদি কেউ এরূপ বলত, তবে আমি অবশ্যই বলতাম, ইনি এমন এক ব্যক্তি, যিনি তাঁর পূর্বসূরীর কথারই অনুসরণ করছেন। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, তাঁর পূর্বপুরুষের মধ্যে কোন বাদশাহ ছিলেন কি না? তুমি তার জবাবে বলেছ, ‘না।’ তাই আমি বলছি যে, তাঁর পূর্বপুরুষের মধ্যে যদি কোন বাদশাহ থাকতেন, তবে আমি বলতাম, ইনি এমন এক ব্যক্তি যিনি তাঁর বাপ-দাদার বাদশাহী ফিরে পেতে চান। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি-এর পূর্বে কখনো তোমরা তাঁকে মিথ্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছ কিনা? তুমি বলেছ, ‘না।’ এতে আমি বুঝলাম, এমনটি হতে পারে না যে, কেউ মানুষের ব্যাপারে মিথ্যা পরিত্যাগ করবে আর আল্লাহর ব্যাপারে মিথ্যা বলবে। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, সম্ভ্রান্ত লোক তাঁর অনুসরণ করে, না সাধারণ লোক? তুমি বলেছ, সাধারণ লোকই তাঁর অনুসরণ করে। আর বাস্তবেও এই শ্রেণীর লোকেরাই হন রাসূলগণের অনুসারী। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, তারা সংখ্যায় বাড়ছে না কমছে? তুমি বলেছ, বাড়ছে। প্রকৃতপক্ষে ঈমানে পূর্ণতা লাভ করা পর্যন্ত এ রকমই হয়ে থাকে। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, তাঁর দ্বীনে প্রবেশ করে কেউ কি অসন্তুষ্ট হয়ে তা ত্যাগ করে? তুমি বলেছ, ‘না।’ ঈমানের স্নিগ্ধতা অন্তরের সঙ্গে মিশে গেলে ঈমান এরূপই হয়। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, তিনি সন্ধি ভঙ্গ করেন কিনা? তুমি বলেছ, ‘না।’ প্রকৃতপক্ষে রাসূলগণ এরূপই, সন্ধি ভঙ্গ করেন না। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, তিনি তোমাদের কিসের আদেশ দেন? তুমি বলেছ, তিনি তোমাদের এক আল্লাহর বন্দেগী করা ও তাঁর সঙ্গে অন্য কিছুর অংশীদার স্থাপন না করার নির্দেশ দেন। তিনি তোমাদের নিষেধ করেন মূর্তিপূজা করতে আর তোমাদের আদেশ করেন সালাত আদায় করতে, সত্য বলতে ও সচ্চরিত্র থাকতে। তুমি যা বলেছ তা যদি সত্য হয়, তবে শীঘ্রই তিনি আমার এ দু’পায়ের নীচের জায়গার অধিকারী হবেন। আমি নিশ্চিত জানতাম, তাঁর আবির্ভাব হবে; কিন্তু তিনি যে তোমাদের মধ্য হতে হবেন, এ কথা ভাবতে পারিনি। যদি জানতাম, আমি তাঁর নিকট পৌঁছতে পারব, তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য আমি যে কোন কষ্ট সহ্য করে নিতাম। আর আমি যদি তাঁর নিকট থাকতাম তবে অবশ্যই তাঁর দু’খানা পা ধৌত করে দিতাম। অতঃপর তিনি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সেই পত্রখানি আনার নির্দেশ দিলেন, যা তিনি দিহ্ইয়াতুল কালবী (রাঃ)-কে দিয়ে বসরার শাসকের মাধ্যমে হিরাক্লিয়াসের নিকট প্রেরণ করেছিলেন। তিনি তা পড়লেন। তাতে (লেখা) ছিলঃ

বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম (পরম করুণাময় দয়ালু আল্লাহর নামে)। আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর পক্ষ হতে রোম সম্রাট হিরাক্লিয়াসের প্রতি। - শান্তি (বর্ষিত হোক) তার প্রতি, যে হিদায়াতের অনুসরণ করে। তারপর আমি আপনাকে ইসলামের দাওয়াত দিচ্ছি। ইসলাম গ্রহণ করুন, শান্তিতে থাকবেন। আল্লাহ্ আপনাকে দ্বিগুণ প্রতিদান দান করবেন। আর যদি মুখ ফিরিয়ে নেন, তবে সকল প্রজার পাপই আপনার উপর বর্তাবে।

‘‘হে আহলে কিতাব! এসো সে কথায় যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে এক ও অভিন্ন। তা হল, আমরা যেন আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ইবাদাত না করি , কোন কিছুকেই যেন তাঁর শরীক সাব্যস্ত না করি এবং আমাদের কেউ যেন কাউকে পালনকর্তারূপে গ্রহণ না করে আল্লাহকে ত্যাগ করে। যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে তোমরা বল, ‘‘তোমরা সাক্ষী থাক, আমরা তো মুসলিম।’’ (সূরাহ্ আলে-‘ইমরান ৩/৬৪)

আবূ সুফইয়ান বলেন, ‘হিরাক্লিয়াস যখন তাঁর বক্তব্য শেষ করলেন এবং পত্র পাঠও শেষ করলেন, তখন সেখানে হট্টগোল শুরু হয়ে গেল, চীৎকার ও হৈ-হল্লা চরমে পৌঁছল এবং আমাদেরকে বের করে দেয়া হলো। আমাদেরকে বের করে দিলে আমি আমার সাথীদের বললাম, আবূ কাবশার* ছেলের বিষয় তো শক্তিশালী হয়ে উঠেছে, বনূ আসফার (রোম)-এর বাদশাহও তাকে ভয় পাচ্ছে! তখন থেকে আমি বিশ্বাস রাখতাম, তিনি শীঘ্রই জয়ী হবেন। অবশেষে আল্লাহ্ তা‘আলা আমাকে ইসলাম গ্রহণের তাওফীক দান করলেন।

ইবনু নাতূর ছিলেন জেরুযালেমের শাসনকর্তা এবং হিরাক্লিয়াসের বন্ধু ও সিরিয়ার খৃস্টানদের পাদ্রী। তিনি বলেন, ‘হিরাক্লিয়াস যখন জেরুযালেম আসেন, তখন একদা তাঁকে অত্যন্ত মলিন দেখাচ্ছিল। তাঁর একজন বিশিষ্ট সহচর বলল, ‘আমরা আপনার চেহারা আজ এত মলিন দেখছি, ইবনু নাতূর বলেন, হিরাক্লিয়াস ছিলেন জ্যোতির্বিদ, জ্যোতির্বিদ্যায় তাঁর দক্ষতা ছিল। তারা জিজ্ঞেস করলে তিনি তাদের বললেন, ‘আজ রাতে আমি তারকারাজির দিকে তাকিয়ে দেখতে পেলাম, খতনাকারীদের বাদশাহ আবির্ভূত হয়েছেন। বর্তমান যুগে কোন্ জাতি খাতনা করে’? তারা বলল, ‘ইয়াহূদ জাতি ব্যতীত কেউ খাতনা করে না। কিন্তু তাদের ব্যাপারে আপনি মোটেও চিন্তাগ্রস্থ হবেন না। আপনার রাজ্যের শহরগুলোতে লিখে পাঠান, তারা যেন সেখানকার সকল ইয়াহূদীকে কতল করে ফেলে।’ তারা যখন এ ব্যাপারে ব্যতিব্যস্ত ছিল, তখন হিরাক্লিয়াসের নিকট জনৈক ব্যক্তিকে হাযির করা হলো, যাকে গাস্সানের শাসনকর্তা পাঠিয়েছিল। সে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে খবর দিচ্ছিল। হিরাক্লিয়াস তার কাছ থেকে খবর জেনে নিয়ে বললেন, ‘তোমরা একে নিয়ে গিয়ে দেখ, তার খাতনা হয়েছে কি-না।’ তারা তাকে নিয়ে গিয়ে দেখে এসে সংবাদ দিল, তার খাতনা হয়েছে। হিরাক্লিয়াস তাকে আরবদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে সে জওয়াব দিল, ‘তারা খাতনা করে।’ অতঃপর হিরাক্লিয়াস তাদের বললেন, ‘ইনি [আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ] এ উম্মতের বাদশাহ। তিনি আবির্ভূত হয়েছেন।’ অতঃপর হিরাক্লিয়াস রোমে তাঁর বন্ধুর নিকট লিখলেন। তিনি জ্ঞানে তাঁর সমকক্ষ ছিলেন। পরে হিরাক্লিয়াস হিমস চলে গেলেন। হিমসে থাকতেই তাঁর নিকট তাঁর বন্ধুর চিঠি এলো, যা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর আবির্ভাব এবং তিনিই যে প্রকৃত নবী, এ ব্যাপারে হিরাক্লিয়াসের মতকে সমর্থন করছিল। তারপর হিরাক্লিয়াস তাঁর হিমসের প্রাসাদে রোমের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের ডাকলেন এবং প্রাসাদের সকল দরজা বন্ধ করার আদেশ দিলে দরজা বন্ধ করা হলো। অতঃপর তিনি সম্মুখে এসে বললেন, হে রোমের অধিবাসী! তোমরা কি মঙ্গল, হিদায়াত এবং তোমাদের রাষ্ট্রের স্থায়িত্ব চাও? তাহলে এই নবীর বায়’আত গ্রহণ কর।’ এ কথা শুনে তারা বন্য গাধার ন্যায় দ্রুত নিঃশ্বাস ফেলতে ফেলতে দরজার দিকে ছুটল, কিন্তু তারা তা বন্ধ দেখতে পেল। হিরাক্লিয়াস যখন তাদের অনীহা লক্ষ্য করলেন এবং তাদের ঈমান থেকে নিরাশ হয়ে গেলেন, তখন বললেন, ‘ওদের আমার নিকট ফিরিয়ে আন।’ তিনি বললেন, ‘আমি একটু পূর্বে যে কথা বলেছি, তা দিয়ে তোমরা তোমাদের দ্বীনের উপর কতটুকু অটল, কেবল তার পরীক্ষা করছিলাম। এখন তা দেখে নিলাম।’ একথা শুনে তারা তাঁকে সিজদা করল এবং তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট হলো। এটাই ছিল হিরাক্লিয়াসের সর্বশেষ অবস্থা।

আবূ ‘আবদুল্লাহ [বুখারী (রহ.)] বলেন, সালিহ ইবনু কায়সান (রহ.), ইউনুস (রহ.) ও মা’মার (রহ.) এ হাদীস যুহরী (রহ.) থেকে রিওয়ায়াত করেছেন। (৫১, ২৬৮১, ২৮০৪, ২৯৪১, ২৯৭৮, ৩১৭৪, ৪৫৫৩, ৫৯৮০, ৬২৬০, ৭১৯৬, ৭৫৪১ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৬)

باب

حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ الْحَكَمُ بْنُ نَافِعٍ، قَالَ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ أَخْبَرَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ بْنِ مَسْعُودٍ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَبَّاسٍ، أَخْبَرَهُ أَنَّ أَبَا سُفْيَانَ بْنَ حَرْبٍ أَخْبَرَهُ أَنَّ هِرَقْلَ أَرْسَلَ إِلَيْهِ فِي رَكْبٍ مِنْ قُرَيْشٍ ـ وَكَانُوا تُجَّارًا بِالشَّأْمِ ـ فِي الْمُدَّةِ الَّتِي كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَادَّ فِيهَا أَبَا سُفْيَانَ وَكُفَّارَ قُرَيْشٍ، فَأَتَوْهُ وَهُمْ بِإِيلِيَاءَ فَدَعَاهُمْ فِي مَجْلِسِهِ، وَحَوْلَهُ عُظَمَاءُ الرُّومِ ثُمَّ دَعَاهُمْ وَدَعَا بِتَرْجُمَانِهِ فَقَالَ أَيُّكُمْ أَقْرَبُ نَسَبًا بِهَذَا الرَّجُلِ الَّذِي يَزْعُمُ أَنَّهُ نَبِيٌّ فَقَالَ أَبُو سُفْيَانَ فَقُلْتُ أَنَا أَقْرَبُهُمْ نَسَبًا‏.‏ فَقَالَ أَدْنُوهُ مِنِّي، وَقَرِّبُوا أَصْحَابَهُ، فَاجْعَلُوهُمْ عِنْدَ ظَهْرِهِ‏.‏ ثُمَّ قَالَ لِتَرْجُمَانِهِ قُلْ لَهُمْ إِنِّي سَائِلٌ هَذَا عَنْ هَذَا الرَّجُلِ، فَإِنْ كَذَبَنِي فَكَذِّبُوهُ‏.‏ فَوَاللَّهِ لَوْلاَ الْحَيَاءُ مِنْ أَنْ يَأْثِرُوا عَلَىَّ كَذِبًا لَكَذَبْتُ عَنْهُ، ثُمَّ كَانَ أَوَّلَ مَا سَأَلَنِي عَنْهُ أَنْ قَالَ كَيْفَ نَسَبُهُ فِيكُمْ قُلْتُ هُوَ فِينَا ذُو نَسَبٍ‏.‏ قَالَ فَهَلْ قَالَ هَذَا الْقَوْلَ مِنْكُمْ أَحَدٌ قَطُّ قَبْلَهُ قُلْتُ لاَ‏.‏ قَالَ فَهَلْ كَانَ مِنْ آبَائِهِ مِنْ مَلِكٍ قُلْتُ لاَ‏.‏ قَالَ فَأَشْرَافُ النَّاسِ يَتَّبِعُونَهُ أَمْ ضُعَفَاؤُهُمْ فَقُلْتُ بَلْ ضُعَفَاؤُهُمْ‏.‏ قَالَ أَيَزِيدُونَ أَمْ يَنْقُصُونَ قُلْتُ بَلْ يَزِيدُونَ‏.‏ قَالَ فَهَلْ يَرْتَدُّ أَحَدٌ مِنْهُمْ سَخْطَةً لِدِينِهِ بَعْدَ أَنْ يَدْخُلَ فِيهِ قُلْتُ لاَ‏.‏ قَالَ فَهَلْ كُنْتُمْ تَتَّهِمُونَهُ بِالْكَذِبِ قَبْلَ أَنْ يَقُولَ مَا قَالَ قُلْتُ لاَ‏.‏ قَالَ فَهَلْ يَغْدِرُ قُلْتُ لاَ، وَنَحْنُ مِنْهُ فِي مُدَّةٍ لاَ نَدْرِي مَا هُوَ فَاعِلٌ فِيهَا‏.‏ قَالَ وَلَمْ تُمْكِنِّي كَلِمَةٌ أُدْخِلُ فِيهَا شَيْئًا غَيْرُ هَذِهِ الْكَلِمَةِ‏.‏ قَالَ فَهَلْ قَاتَلْتُمُوهُ قُلْتُ نَعَمْ‏.‏ قَالَ فَكَيْفَ كَانَ قِتَالُكُمْ إِيَّاهُ قُلْتُ الْحَرْبُ بَيْنَنَا وَبَيْنَهُ سِجَالٌ، يَنَالُ مِنَّا وَنَنَالُ مِنْهُ‏.‏ قَالَ مَاذَا يَأْمُرُكُمْ قُلْتُ يَقُولُ اعْبُدُوا اللَّهَ وَحْدَهُ، وَلاَ تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا، وَاتْرُكُوا مَا يَقُولُ آبَاؤُكُمْ، وَيَأْمُرُنَا بِالصَّلاَةِ وَالصِّدْقِ وَالْعَفَافِ وَالصِّلَةِ‏.‏ فَقَالَ لِلتَّرْجُمَانِ قُلْ لَهُ سَأَلْتُكَ عَنْ نَسَبِهِ، فَذَكَرْتَ أَنَّهُ فِيكُمْ ذُو نَسَبٍ، فَكَذَلِكَ الرُّسُلُ تُبْعَثُ فِي نَسَبِ قَوْمِهَا، وَسَأَلْتُكَ هَلْ قَالَ أَحَدٌ مِنْكُمْ هَذَا الْقَوْلَ فَذَكَرْتَ أَنْ لاَ، فَقُلْتُ لَوْ كَانَ أَحَدٌ قَالَ هَذَا الْقَوْلَ قَبْلَهُ لَقُلْتُ رَجُلٌ يَأْتَسِي بِقَوْلٍ قِيلَ قَبْلَهُ، وَسَأَلْتُكَ هَلْ كَانَ مِنْ آبَائِهِ مِنْ مَلِكٍ فَذَكَرْتَ أَنْ لاَ، قُلْتُ فَلَوْ كَانَ مِنْ آبَائِهِ مِنْ مَلِكٍ قُلْتُ رَجُلٌ يَطْلُبُ مُلْكَ أَبِيهِ، وَسَأَلْتُكَ هَلْ كُنْتُمْ تَتَّهِمُونَهُ بِالْكَذِبِ قَبْلَ أَنْ يَقُولَ مَا قَالَ فَذَكَرْتَ أَنْ لاَ، فَقَدْ أَعْرِفُ أَنَّهُ لَمْ يَكُنْ لِيَذَرَ الْكَذِبَ عَلَى النَّاسِ وَيَكْذِبَ عَلَى اللَّهِ، وَسَأَلْتُكَ أَشْرَافُ النَّاسِ اتَّبَعُوهُ أَمْ ضُعَفَاؤُهُمْ فَذَكَرْتَ أَنَّ ضُعَفَاءَهُمُ اتَّبَعُوهُ، وَهُمْ أَتْبَاعُ الرُّسُلِ، وَسَأَلْتُكَ أَيَزِيدُونَ أَمْ يَنْقُصُونَ فَذَكَرْتَ أَنَّهُمْ يَزِيدُونَ، وَكَذَلِكَ أَمْرُ الإِيمَانِ حَتَّى يَتِمَّ، وَسَأَلْتُكَ أَيَرْتَدُّ أَحَدٌ سَخْطَةً لِدِينِهِ بَعْدَ أَنْ يَدْخُلَ فِيهِ فَذَكَرْتَ أَنْ لاَ، وَكَذَلِكَ الإِيمَانُ حِينَ تُخَالِطُ بَشَاشَتُهُ الْقُلُوبَ، وَسَأَلْتُكَ هَلْ يَغْدِرُ فَذَكَرْتَ أَنْ لاَ، وَكَذَلِكَ الرُّسُلُ لاَ تَغْدِرُ، وَسَأَلْتُكَ بِمَا يَأْمُرُكُمْ، فَذَكَرْتَ أَنَّهُ يَأْمُرُكُمْ أَنْ تَعْبُدُوا اللَّهَ، وَلاَ تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا، وَيَنْهَاكُمْ عَنْ عِبَادَةِ الأَوْثَانِ، وَيَأْمُرُكُمْ بِالصَّلاَةِ وَالصِّدْقِ وَالْعَفَافِ‏.‏ فَإِنْ كَانَ مَا تَقُولُ حَقًّا فَسَيَمْلِكُ مَوْضِعَ قَدَمَىَّ هَاتَيْنِ، وَقَدْ كُنْتُ أَعْلَمُ أَنَّهُ خَارِجٌ، لَمْ أَكُنْ أَظُنُّ أَنَّهُ مِنْكُمْ، فَلَوْ أَنِّي أَعْلَمُ أَنِّي أَخْلُصُ إِلَيْهِ لَتَجَشَّمْتُ لِقَاءَهُ، وَلَوْ كُنْتُ عِنْدَهُ لَغَسَلْتُ عَنْ قَدَمِهِ‏.‏ ثُمَّ دَعَا بِكِتَابِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الَّذِي بَعَثَ بِهِ دِحْيَةُ إِلَى عَظِيمِ بُصْرَى، فَدَفَعَهُ إِلَى هِرَقْلَ فَقَرَأَهُ فَإِذَا فِيهِ بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ‏.‏ مِنْ مُحَمَّدٍ عَبْدِ اللَّهِ وَرَسُولِهِ إِلَى هِرَقْلَ عَظِيمِ الرُّومِ‏.‏ سَلاَمٌ عَلَى مَنِ اتَّبَعَ الْهُدَى، أَمَّا بَعْدُ فَإِنِّي أَدْعُوكَ بِدِعَايَةِ الإِسْلاَمِ، أَسْلِمْ تَسْلَمْ، يُؤْتِكَ اللَّهُ أَجْرَكَ مَرَّتَيْنِ، فَإِنْ تَوَلَّيْتَ فَإِنَّ عَلَيْكَ إِثْمَ الأَرِيسِيِّينَ وَ‏(‏يَا أَهْلَ الْكِتَابِ تَعَالَوْا إِلَى كَلِمَةٍ سَوَاءٍ بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمْ أَنْ لاَ نَعْبُدَ إِلاَّ اللَّهَ وَلاَ نُشْرِكَ بِهِ شَيْئًا وَلاَ يَتَّخِذَ بَعْضُنَا بَعْضًا أَرْبَابًا مِنْ دُونِ اللَّهِ فَإِنْ تَوَلَّوْا فَقُولُوا اشْهَدُوا بِأَنَّا مُسْلِمُونَ‏)‏ قَالَ أَبُو سُفْيَانَ فَلَمَّا قَالَ مَا قَالَ، وَفَرَغَ مِنْ قِرَاءَةِ الْكِتَابِ كَثُرَ عِنْدَهُ الصَّخَبُ، وَارْتَفَعَتِ الأَصْوَاتُ وَأُخْرِجْنَا، فَقُلْتُ لأَصْحَابِي حِينَ أُخْرِجْنَا لَقَدْ أَمِرَ أَمْرُ ابْنِ أَبِي كَبْشَةَ، إِنَّهُ يَخَافُهُ مَلِكُ بَنِي الأَصْفَرِ‏.‏ فَمَا زِلْتُ مُوقِنًا أَنَّهُ سَيَظْهَرُ حَتَّى أَدْخَلَ اللَّهُ عَلَىَّ الإِسْلاَمَ‏.‏ وَكَانَ ابْنُ النَّاظُورِ صَاحِبُ إِيلِيَاءَ وَهِرَقْلَ سُقُفًّا عَلَى نَصَارَى الشَّأْمِ، يُحَدِّثُ أَنَّ هِرَقْلَ حِينَ قَدِمَ إِيلِيَاءَ أَصْبَحَ يَوْمًا خَبِيثَ النَّفْسِ، فَقَالَ بَعْضُ بَطَارِقَتِهِ قَدِ اسْتَنْكَرْنَا هَيْئَتَكَ‏.‏ قَالَ ابْنُ النَّاظُورِ وَكَانَ هِرَقْلُ حَزَّاءً يَنْظُرُ فِي النُّجُومِ، فَقَالَ لَهُمْ حِينَ سَأَلُوهُ إِنِّي رَأَيْتُ اللَّيْلَةَ حِينَ نَظَرْتُ فِي النُّجُومِ مَلِكَ الْخِتَانِ قَدْ ظَهَرَ، فَمَنْ يَخْتَتِنُ مِنْ هَذِهِ الأُمَّةِ قَالُوا لَيْسَ يَخْتَتِنُ إِلاَّ الْيَهُودُ فَلاَ يُهِمَّنَّكَ شَأْنُهُمْ وَاكْتُبْ إِلَى مَدَايِنِ مُلْكِكَ، فَيَقْتُلُوا مَنْ فِيهِمْ مِنَ الْيَهُودِ‏.‏ فَبَيْنَمَا هُمْ عَلَى أَمْرِهِمْ أُتِيَ هِرَقْلُ بِرَجُلٍ أَرْسَلَ بِهِ مَلِكُ غَسَّانَ، يُخْبِرُ عَنْ خَبَرِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا اسْتَخْبَرَهُ هِرَقْلُ قَالَ اذْهَبُوا فَانْظُرُوا أَمُخْتَتِنٌ هُوَ أَمْ لاَ‏.‏ فَنَظَرُوا إِلَيْهِ، فَحَدَّثُوهُ أَنَّهُ مُخْتَتِنٌ، وَسَأَلَهُ عَنِ الْعَرَبِ فَقَالَ هُمْ يَخْتَتِنُونَ‏.‏ فَقَالَ هِرَقْلُ هَذَا مَلِكُ هَذِهِ الأُمَّةِ قَدْ ظَهَرَ‏.‏ ثُمَّ كَتَبَ هِرَقْلُ إِلَى صَاحِبٍ لَهُ بِرُومِيَةَ، وَكَانَ نَظِيرَهُ فِي الْعِلْمِ، وَسَارَ هِرَقْلُ إِلَى حِمْصَ، فَلَمْ يَرِمْ حِمْصَ حَتَّى أَتَاهُ كِتَابٌ مِنْ صَاحِبِهِ يُوَافِقُ رَأْىَ هِرَقْلَ عَلَى خُرُوجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم وَأَنَّهُ نَبِيٌّ، فَأَذِنَ هِرَقْلُ لِعُظَمَاءِ الرُّومِ فِي دَسْكَرَةٍ لَهُ بِحِمْصَ ثُمَّ أَمَرَ بِأَبْوَابِهَا فَغُلِّقَتْ، ثُمَّ اطَّلَعَ فَقَالَ يَا مَعْشَرَ الرُّومِ، هَلْ لَكُمْ فِي الْفَلاَحِ وَالرُّشْدِ وَأَنْ يَثْبُتَ مُلْكُكُمْ فَتُبَايِعُوا هَذَا النَّبِيَّ، فَحَاصُوا حَيْصَةَ حُمُرِ الْوَحْشِ إِلَى الأَبْوَابِ، فَوَجَدُوهَا قَدْ غُلِّقَتْ، فَلَمَّا رَأَى هِرَقْلُ نَفْرَتَهُمْ، وَأَيِسَ مِنَ الإِيمَانِ قَالَ رُدُّوهُمْ عَلَىَّ‏.‏ وَقَالَ إِنِّي قُلْتُ مَقَالَتِي آنِفًا أَخْتَبِرُ بِهَا شِدَّتَكُمْ عَلَى دِينِكُمْ، فَقَدْ رَأَيْتُ‏.‏ فَسَجَدُوا لَهُ وَرَضُوا عَنْهُ، فَكَانَ ذَلِكَ آخِرَ شَأْنِ هِرَقْلَ‏.‏ رَوَاهُ صَالِحُ بْنُ كَيْسَانَ وَيُونُسُ وَمَعْمَرٌ عَنِ الزُّهْرِيِّ‏.


৭. ‘‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, আবূ সুফইয়ান ইবনু হরব তাকে বলেছেন, রাজা হিরাক্লিয়াস একদা তাঁর নিকট লোক প্রেরণ করলেন। তিনি তখন ব্যবসা উপলক্ষে কুরাইশদের কাফেলায় সিরিয়ায় ছিলেন। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে সময় আবূ সুফইয়ান ও কুরাইশদের সঙ্গে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সন্ধিতে আবদ্ধ ছিলেন। আবূ সুফইয়ান তার সাথী সহ হিরাক্লিয়াসের নিকট আসলেন এবং তখন হিরাক্লিয়াস জেরুযালেমে ছিলেন। হিরাক্লিয়াস তাদেরকে তাঁর নিকটে ডেকে পাঠালেন। তাঁর নিকটে তখন রোমের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিল। অতঃপর তাদের নিকটে ডাকলেন এবং দোভাষীকে ডাকলেন। অতঃপর জিজ্ঞেস করলেন, ‘এই যে ব্যক্তি নিজেকে নবী বলে দাবী করে-তোমাদের মাঝে বংশের দিক হতে তাঁর সবচেয়ে নিকটাত্মীয় কে’? আবূ সুফইয়ান বলেন, ‘আমি বললাম, বংশের দিক দিয়ে আমিই তাঁর নিকটাত্মীয়।’ তিনি বললেন, ‘তাঁকে আমার অতি নিকটে আন এবং তাঁর সাথীদেরকেও তার পেছনে বসিয়ে দাও।’

অতঃপর তাঁর দোভাষীকে বললেন, ‘তাদের বলে দাও, আমি এর নিকট সে ব্যক্তি সম্পর্কে কিছু জিজ্ঞেস করব, যদি সে আমার নিকট মিথ্যা বলে, তখন সঙ্গে সঙ্গে তোমরা তাকে মিথ্যুক বলবে। আবূ সুফ্ইয়ান বলেন, ‘আল্লাহর কসম! আমার যদি এ লজ্জা না থাকত যে, তারা আমাকে মিথ্যাবাদী বলে প্রচার করবে, তবে আমি অবশ্যই তাঁর সম্পর্কে মিথ্যা বলতাম।’

অতঃপর তিনি তাঁর সম্পর্কে আমাকে সর্বপ্রথম যে প্রশ্ন করেন তা হলো, ‘বংশমর্যাদার দিক দিয়ে তোমাদের মধ্যে সে কিরূপ?’ আমি বললাম, ‘তিনি আমাদের মধ্যে খুব সম্ভ্রান্ত বংশের।’ তিনি বললেন, ‘তোমাদের মধ্যে এর পূর্বে আর কখনো কি কেউ এরূপ কথা বলেছে?’ আমি বললাম, ‘না।’ তিনি বললেন, ‘তাঁর পূর্বপুরুষের মধ্যে কেউ কি বাদশাহ ছিলেন?’ আমি বললাম, ‘না।’ তিনি বললেন, ‘সম্ভ্রান্ত মর্যাদাবান শ্রেণীর লোকেরা তাঁর অনুসরণ করে, নাকি দুর্বল লোকেরা?’ আমি বললাম, ‘দুর্বল লোকেরা।’ তিনি বললেন, ‘তাদের সংখ্যা কি বাড়ছে, না কমছে?’ আমি বললাম, ‘তারা বেড়েই চলেছে।’ তিনি বললেন, ‘তাঁর ধর্মে ঢুকে কেউ কি অসন্তুষ্ট হয়ে তা ত্যাগ করে?’ আমি বললাম, ‘না।’ তিনি বললেন, ‘তার দাবীর পূর্বে তোমরা কি কখনো তাঁকে মিথ্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছ?’ আমি বললাম, ‘না।’ তিনি বললেন, ‘তিনি কি সন্ধি ভঙ্গ করেন?’ আমি বললাম, ‘না। তবে আমরা তাঁর সঙ্গে একটি নির্দিষ্ট সময়ের সন্ধিতে আবদ্ধ আছি। জানি না, এর মধ্যে তিনি কী করবেন।’ আবূ সুফ্ইয়ান বলেন, ‘এ কথাটি ব্যতীত নিজের পক্ষ হতে আর কোন কথা যোগ করার সুযোগই আমি পাইনি।’ তিনি বললেন, ‘তোমরা তাঁর সঙ্গে কখনো যুদ্ধ করেছ কি?’ আমি বললাম, ‘হ্যাঁ।’ তিনি বললেন, ‘তাঁর সঙ্গে তোমাদের যুদ্ধের পরিণাম কি হয়েছে?’ আমি বললাম, ‘তাঁর ও আমাদের মধ্যে যুদ্ধের ফলাফল কুপের বালতির ন্যায়।’ কখনো তাঁর পক্ষে যায়, আবার কখনো আমাদের পক্ষে আসে।’ তিনি বললেন, ‘তিনি তোমাদের কিসের আদেশ দেন?’ আমি বললাম, ‘তিনি বলেনঃ তোমরা এক আল্লাহর ইবাদত কর এবং তাঁর সঙ্গে কোন কিছুর অংশীদার সাব্যস্ত করো না এবং তোমাদের পূর্বপুরুষরা যা বলে তা ত্যাগ কর। আর তিনি আমাদের সালাত আদায়ের, সত্য বলার, চারিত্রিক নিষ্কলুষতার এবং আত্মীয়দের সঙ্গে সদাচরণ করার নির্দেশ দেন।’

অতঃপর তিনি দোভাষীকে বললেন, ‘তুমি তাকে বল, আমি তোমার নিকট তাঁর বংশ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছি। তুমি তার জবাবে উল্লেখ করেছ যে, তিনি তোমাদের মধ্যে সম্ভ্রান্ত বংশের। প্রকৃতপক্ষে রাসূলগণকে তাঁদের কওমের উচ্চ বংশেই পাঠানো হয়ে থাকে। তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, এ কথা তোমাদের মধ্যে ইতিপূর্বে আর কেউ বলেছে কিনা? তুমি বলেছ, ‘না।’ তাই আমি বলছি, পূর্বে যদি কেউ এরূপ বলত, তবে আমি অবশ্যই বলতাম, ইনি এমন এক ব্যক্তি, যিনি তাঁর পূর্বসূরীর কথারই অনুসরণ করছেন। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, তাঁর পূর্বপুরুষের মধ্যে কোন বাদশাহ ছিলেন কি না? তুমি তার জবাবে বলেছ, ‘না।’ তাই আমি বলছি যে, তাঁর পূর্বপুরুষের মধ্যে যদি কোন বাদশাহ থাকতেন, তবে আমি বলতাম, ইনি এমন এক ব্যক্তি যিনি তাঁর বাপ-দাদার বাদশাহী ফিরে পেতে চান। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি-এর পূর্বে কখনো তোমরা তাঁকে মিথ্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছ কিনা? তুমি বলেছ, ‘না।’ এতে আমি বুঝলাম, এমনটি হতে পারে না যে, কেউ মানুষের ব্যাপারে মিথ্যা পরিত্যাগ করবে আর আল্লাহর ব্যাপারে মিথ্যা বলবে। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, সম্ভ্রান্ত লোক তাঁর অনুসরণ করে, না সাধারণ লোক? তুমি বলেছ, সাধারণ লোকই তাঁর অনুসরণ করে। আর বাস্তবেও এই শ্রেণীর লোকেরাই হন রাসূলগণের অনুসারী। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, তারা সংখ্যায় বাড়ছে না কমছে? তুমি বলেছ, বাড়ছে। প্রকৃতপক্ষে ঈমানে পূর্ণতা লাভ করা পর্যন্ত এ রকমই হয়ে থাকে। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, তাঁর দ্বীনে প্রবেশ করে কেউ কি অসন্তুষ্ট হয়ে তা ত্যাগ করে? তুমি বলেছ, ‘না।’ ঈমানের স্নিগ্ধতা অন্তরের সঙ্গে মিশে গেলে ঈমান এরূপই হয়। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, তিনি সন্ধি ভঙ্গ করেন কিনা? তুমি বলেছ, ‘না।’ প্রকৃতপক্ষে রাসূলগণ এরূপই, সন্ধি ভঙ্গ করেন না। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, তিনি তোমাদের কিসের আদেশ দেন? তুমি বলেছ, তিনি তোমাদের এক আল্লাহর বন্দেগী করা ও তাঁর সঙ্গে অন্য কিছুর অংশীদার স্থাপন না করার নির্দেশ দেন। তিনি তোমাদের নিষেধ করেন মূর্তিপূজা করতে আর তোমাদের আদেশ করেন সালাত আদায় করতে, সত্য বলতে ও সচ্চরিত্র থাকতে। তুমি যা বলেছ তা যদি সত্য হয়, তবে শীঘ্রই তিনি আমার এ দু’পায়ের নীচের জায়গার অধিকারী হবেন। আমি নিশ্চিত জানতাম, তাঁর আবির্ভাব হবে; কিন্তু তিনি যে তোমাদের মধ্য হতে হবেন, এ কথা ভাবতে পারিনি। যদি জানতাম, আমি তাঁর নিকট পৌঁছতে পারব, তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য আমি যে কোন কষ্ট সহ্য করে নিতাম। আর আমি যদি তাঁর নিকট থাকতাম তবে অবশ্যই তাঁর দু’খানা পা ধৌত করে দিতাম। অতঃপর তিনি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সেই পত্রখানি আনার নির্দেশ দিলেন, যা তিনি দিহ্ইয়াতুল কালবী (রাঃ)-কে দিয়ে বসরার শাসকের মাধ্যমে হিরাক্লিয়াসের নিকট প্রেরণ করেছিলেন। তিনি তা পড়লেন। তাতে (লেখা) ছিলঃ

বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম (পরম করুণাময় দয়ালু আল্লাহর নামে)। আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর পক্ষ হতে রোম সম্রাট হিরাক্লিয়াসের প্রতি। - শান্তি (বর্ষিত হোক) তার প্রতি, যে হিদায়াতের অনুসরণ করে। তারপর আমি আপনাকে ইসলামের দাওয়াত দিচ্ছি। ইসলাম গ্রহণ করুন, শান্তিতে থাকবেন। আল্লাহ্ আপনাকে দ্বিগুণ প্রতিদান দান করবেন। আর যদি মুখ ফিরিয়ে নেন, তবে সকল প্রজার পাপই আপনার উপর বর্তাবে।

‘‘হে আহলে কিতাব! এসো সে কথায় যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে এক ও অভিন্ন। তা হল, আমরা যেন আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ইবাদাত না করি , কোন কিছুকেই যেন তাঁর শরীক সাব্যস্ত না করি এবং আমাদের কেউ যেন কাউকে পালনকর্তারূপে গ্রহণ না করে আল্লাহকে ত্যাগ করে। যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে তোমরা বল, ‘‘তোমরা সাক্ষী থাক, আমরা তো মুসলিম।’’ (সূরাহ্ আলে-‘ইমরান ৩/৬৪)

আবূ সুফইয়ান বলেন, ‘হিরাক্লিয়াস যখন তাঁর বক্তব্য শেষ করলেন এবং পত্র পাঠও শেষ করলেন, তখন সেখানে হট্টগোল শুরু হয়ে গেল, চীৎকার ও হৈ-হল্লা চরমে পৌঁছল এবং আমাদেরকে বের করে দেয়া হলো। আমাদেরকে বের করে দিলে আমি আমার সাথীদের বললাম, আবূ কাবশার* ছেলের বিষয় তো শক্তিশালী হয়ে উঠেছে, বনূ আসফার (রোম)-এর বাদশাহও তাকে ভয় পাচ্ছে! তখন থেকে আমি বিশ্বাস রাখতাম, তিনি শীঘ্রই জয়ী হবেন। অবশেষে আল্লাহ্ তা‘আলা আমাকে ইসলাম গ্রহণের তাওফীক দান করলেন।

ইবনু নাতূর ছিলেন জেরুযালেমের শাসনকর্তা এবং হিরাক্লিয়াসের বন্ধু ও সিরিয়ার খৃস্টানদের পাদ্রী। তিনি বলেন, ‘হিরাক্লিয়াস যখন জেরুযালেম আসেন, তখন একদা তাঁকে অত্যন্ত মলিন দেখাচ্ছিল। তাঁর একজন বিশিষ্ট সহচর বলল, ‘আমরা আপনার চেহারা আজ এত মলিন দেখছি, ইবনু নাতূর বলেন, হিরাক্লিয়াস ছিলেন জ্যোতির্বিদ, জ্যোতির্বিদ্যায় তাঁর দক্ষতা ছিল। তারা জিজ্ঞেস করলে তিনি তাদের বললেন, ‘আজ রাতে আমি তারকারাজির দিকে তাকিয়ে দেখতে পেলাম, খতনাকারীদের বাদশাহ আবির্ভূত হয়েছেন। বর্তমান যুগে কোন্ জাতি খাতনা করে’? তারা বলল, ‘ইয়াহূদ জাতি ব্যতীত কেউ খাতনা করে না। কিন্তু তাদের ব্যাপারে আপনি মোটেও চিন্তাগ্রস্থ হবেন না। আপনার রাজ্যের শহরগুলোতে লিখে পাঠান, তারা যেন সেখানকার সকল ইয়াহূদীকে কতল করে ফেলে।’ তারা যখন এ ব্যাপারে ব্যতিব্যস্ত ছিল, তখন হিরাক্লিয়াসের নিকট জনৈক ব্যক্তিকে হাযির করা হলো, যাকে গাস্সানের শাসনকর্তা পাঠিয়েছিল। সে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে খবর দিচ্ছিল। হিরাক্লিয়াস তার কাছ থেকে খবর জেনে নিয়ে বললেন, ‘তোমরা একে নিয়ে গিয়ে দেখ, তার খাতনা হয়েছে কি-না।’ তারা তাকে নিয়ে গিয়ে দেখে এসে সংবাদ দিল, তার খাতনা হয়েছে। হিরাক্লিয়াস তাকে আরবদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে সে জওয়াব দিল, ‘তারা খাতনা করে।’ অতঃপর হিরাক্লিয়াস তাদের বললেন, ‘ইনি [আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ] এ উম্মতের বাদশাহ। তিনি আবির্ভূত হয়েছেন।’ অতঃপর হিরাক্লিয়াস রোমে তাঁর বন্ধুর নিকট লিখলেন। তিনি জ্ঞানে তাঁর সমকক্ষ ছিলেন। পরে হিরাক্লিয়াস হিমস চলে গেলেন। হিমসে থাকতেই তাঁর নিকট তাঁর বন্ধুর চিঠি এলো, যা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর আবির্ভাব এবং তিনিই যে প্রকৃত নবী, এ ব্যাপারে হিরাক্লিয়াসের মতকে সমর্থন করছিল। তারপর হিরাক্লিয়াস তাঁর হিমসের প্রাসাদে রোমের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের ডাকলেন এবং প্রাসাদের সকল দরজা বন্ধ করার আদেশ দিলে দরজা বন্ধ করা হলো। অতঃপর তিনি সম্মুখে এসে বললেন, হে রোমের অধিবাসী! তোমরা কি মঙ্গল, হিদায়াত এবং তোমাদের রাষ্ট্রের স্থায়িত্ব চাও? তাহলে এই নবীর বায়’আত গ্রহণ কর।’ এ কথা শুনে তারা বন্য গাধার ন্যায় দ্রুত নিঃশ্বাস ফেলতে ফেলতে দরজার দিকে ছুটল, কিন্তু তারা তা বন্ধ দেখতে পেল। হিরাক্লিয়াস যখন তাদের অনীহা লক্ষ্য করলেন এবং তাদের ঈমান থেকে নিরাশ হয়ে গেলেন, তখন বললেন, ‘ওদের আমার নিকট ফিরিয়ে আন।’ তিনি বললেন, ‘আমি একটু পূর্বে যে কথা বলেছি, তা দিয়ে তোমরা তোমাদের দ্বীনের উপর কতটুকু অটল, কেবল তার পরীক্ষা করছিলাম। এখন তা দেখে নিলাম।’ একথা শুনে তারা তাঁকে সিজদা করল এবং তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট হলো। এটাই ছিল হিরাক্লিয়াসের সর্বশেষ অবস্থা।

আবূ ‘আবদুল্লাহ [বুখারী (রহ.)] বলেন, সালিহ ইবনু কায়সান (রহ.), ইউনুস (রহ.) ও মা’মার (রহ.) এ হাদীস যুহরী (রহ.) থেকে রিওয়ায়াত করেছেন। (৫১, ২৬৮১, ২৮০৪, ২৯৪১, ২৯৭৮, ৩১৭৪, ৪৫৫৩, ৫৯৮০, ৬২৬০, ৭১৯৬, ৭৫৪১ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৬)

باب

حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ الْحَكَمُ بْنُ نَافِعٍ، قَالَ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ أَخْبَرَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ بْنِ مَسْعُودٍ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَبَّاسٍ، أَخْبَرَهُ أَنَّ أَبَا سُفْيَانَ بْنَ حَرْبٍ أَخْبَرَهُ أَنَّ هِرَقْلَ أَرْسَلَ إِلَيْهِ فِي رَكْبٍ مِنْ قُرَيْشٍ ـ وَكَانُوا تُجَّارًا بِالشَّأْمِ ـ فِي الْمُدَّةِ الَّتِي كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَادَّ فِيهَا أَبَا سُفْيَانَ وَكُفَّارَ قُرَيْشٍ، فَأَتَوْهُ وَهُمْ بِإِيلِيَاءَ فَدَعَاهُمْ فِي مَجْلِسِهِ، وَحَوْلَهُ عُظَمَاءُ الرُّومِ ثُمَّ دَعَاهُمْ وَدَعَا بِتَرْجُمَانِهِ فَقَالَ أَيُّكُمْ أَقْرَبُ نَسَبًا بِهَذَا الرَّجُلِ الَّذِي يَزْعُمُ أَنَّهُ نَبِيٌّ فَقَالَ أَبُو سُفْيَانَ فَقُلْتُ أَنَا أَقْرَبُهُمْ نَسَبًا‏.‏ فَقَالَ أَدْنُوهُ مِنِّي، وَقَرِّبُوا أَصْحَابَهُ، فَاجْعَلُوهُمْ عِنْدَ ظَهْرِهِ‏.‏ ثُمَّ قَالَ لِتَرْجُمَانِهِ قُلْ لَهُمْ إِنِّي سَائِلٌ هَذَا عَنْ هَذَا الرَّجُلِ، فَإِنْ كَذَبَنِي فَكَذِّبُوهُ‏.‏ فَوَاللَّهِ لَوْلاَ الْحَيَاءُ مِنْ أَنْ يَأْثِرُوا عَلَىَّ كَذِبًا لَكَذَبْتُ عَنْهُ، ثُمَّ كَانَ أَوَّلَ مَا سَأَلَنِي عَنْهُ أَنْ قَالَ كَيْفَ نَسَبُهُ فِيكُمْ قُلْتُ هُوَ فِينَا ذُو نَسَبٍ‏.‏ قَالَ فَهَلْ قَالَ هَذَا الْقَوْلَ مِنْكُمْ أَحَدٌ قَطُّ قَبْلَهُ قُلْتُ لاَ‏.‏ قَالَ فَهَلْ كَانَ مِنْ آبَائِهِ مِنْ مَلِكٍ قُلْتُ لاَ‏.‏ قَالَ فَأَشْرَافُ النَّاسِ يَتَّبِعُونَهُ أَمْ ضُعَفَاؤُهُمْ فَقُلْتُ بَلْ ضُعَفَاؤُهُمْ‏.‏ قَالَ أَيَزِيدُونَ أَمْ يَنْقُصُونَ قُلْتُ بَلْ يَزِيدُونَ‏.‏ قَالَ فَهَلْ يَرْتَدُّ أَحَدٌ مِنْهُمْ سَخْطَةً لِدِينِهِ بَعْدَ أَنْ يَدْخُلَ فِيهِ قُلْتُ لاَ‏.‏ قَالَ فَهَلْ كُنْتُمْ تَتَّهِمُونَهُ بِالْكَذِبِ قَبْلَ أَنْ يَقُولَ مَا قَالَ قُلْتُ لاَ‏.‏ قَالَ فَهَلْ يَغْدِرُ قُلْتُ لاَ، وَنَحْنُ مِنْهُ فِي مُدَّةٍ لاَ نَدْرِي مَا هُوَ فَاعِلٌ فِيهَا‏.‏ قَالَ وَلَمْ تُمْكِنِّي كَلِمَةٌ أُدْخِلُ فِيهَا شَيْئًا غَيْرُ هَذِهِ الْكَلِمَةِ‏.‏ قَالَ فَهَلْ قَاتَلْتُمُوهُ قُلْتُ نَعَمْ‏.‏ قَالَ فَكَيْفَ كَانَ قِتَالُكُمْ إِيَّاهُ قُلْتُ الْحَرْبُ بَيْنَنَا وَبَيْنَهُ سِجَالٌ، يَنَالُ مِنَّا وَنَنَالُ مِنْهُ‏.‏ قَالَ مَاذَا يَأْمُرُكُمْ قُلْتُ يَقُولُ اعْبُدُوا اللَّهَ وَحْدَهُ، وَلاَ تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا، وَاتْرُكُوا مَا يَقُولُ آبَاؤُكُمْ، وَيَأْمُرُنَا بِالصَّلاَةِ وَالصِّدْقِ وَالْعَفَافِ وَالصِّلَةِ‏.‏ فَقَالَ لِلتَّرْجُمَانِ قُلْ لَهُ سَأَلْتُكَ عَنْ نَسَبِهِ، فَذَكَرْتَ أَنَّهُ فِيكُمْ ذُو نَسَبٍ، فَكَذَلِكَ الرُّسُلُ تُبْعَثُ فِي نَسَبِ قَوْمِهَا، وَسَأَلْتُكَ هَلْ قَالَ أَحَدٌ مِنْكُمْ هَذَا الْقَوْلَ فَذَكَرْتَ أَنْ لاَ، فَقُلْتُ لَوْ كَانَ أَحَدٌ قَالَ هَذَا الْقَوْلَ قَبْلَهُ لَقُلْتُ رَجُلٌ يَأْتَسِي بِقَوْلٍ قِيلَ قَبْلَهُ، وَسَأَلْتُكَ هَلْ كَانَ مِنْ آبَائِهِ مِنْ مَلِكٍ فَذَكَرْتَ أَنْ لاَ، قُلْتُ فَلَوْ كَانَ مِنْ آبَائِهِ مِنْ مَلِكٍ قُلْتُ رَجُلٌ يَطْلُبُ مُلْكَ أَبِيهِ، وَسَأَلْتُكَ هَلْ كُنْتُمْ تَتَّهِمُونَهُ بِالْكَذِبِ قَبْلَ أَنْ يَقُولَ مَا قَالَ فَذَكَرْتَ أَنْ لاَ، فَقَدْ أَعْرِفُ أَنَّهُ لَمْ يَكُنْ لِيَذَرَ الْكَذِبَ عَلَى النَّاسِ وَيَكْذِبَ عَلَى اللَّهِ، وَسَأَلْتُكَ أَشْرَافُ النَّاسِ اتَّبَعُوهُ أَمْ ضُعَفَاؤُهُمْ فَذَكَرْتَ أَنَّ ضُعَفَاءَهُمُ اتَّبَعُوهُ، وَهُمْ أَتْبَاعُ الرُّسُلِ، وَسَأَلْتُكَ أَيَزِيدُونَ أَمْ يَنْقُصُونَ فَذَكَرْتَ أَنَّهُمْ يَزِيدُونَ، وَكَذَلِكَ أَمْرُ الإِيمَانِ حَتَّى يَتِمَّ، وَسَأَلْتُكَ أَيَرْتَدُّ أَحَدٌ سَخْطَةً لِدِينِهِ بَعْدَ أَنْ يَدْخُلَ فِيهِ فَذَكَرْتَ أَنْ لاَ، وَكَذَلِكَ الإِيمَانُ حِينَ تُخَالِطُ بَشَاشَتُهُ الْقُلُوبَ، وَسَأَلْتُكَ هَلْ يَغْدِرُ فَذَكَرْتَ أَنْ لاَ، وَكَذَلِكَ الرُّسُلُ لاَ تَغْدِرُ، وَسَأَلْتُكَ بِمَا يَأْمُرُكُمْ، فَذَكَرْتَ أَنَّهُ يَأْمُرُكُمْ أَنْ تَعْبُدُوا اللَّهَ، وَلاَ تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا، وَيَنْهَاكُمْ عَنْ عِبَادَةِ الأَوْثَانِ، وَيَأْمُرُكُمْ بِالصَّلاَةِ وَالصِّدْقِ وَالْعَفَافِ‏.‏ فَإِنْ كَانَ مَا تَقُولُ حَقًّا فَسَيَمْلِكُ مَوْضِعَ قَدَمَىَّ هَاتَيْنِ، وَقَدْ كُنْتُ أَعْلَمُ أَنَّهُ خَارِجٌ، لَمْ أَكُنْ أَظُنُّ أَنَّهُ مِنْكُمْ، فَلَوْ أَنِّي أَعْلَمُ أَنِّي أَخْلُصُ إِلَيْهِ لَتَجَشَّمْتُ لِقَاءَهُ، وَلَوْ كُنْتُ عِنْدَهُ لَغَسَلْتُ عَنْ قَدَمِهِ‏.‏ ثُمَّ دَعَا بِكِتَابِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الَّذِي بَعَثَ بِهِ دِحْيَةُ إِلَى عَظِيمِ بُصْرَى، فَدَفَعَهُ إِلَى هِرَقْلَ فَقَرَأَهُ فَإِذَا فِيهِ بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ‏.‏ مِنْ مُحَمَّدٍ عَبْدِ اللَّهِ وَرَسُولِهِ إِلَى هِرَقْلَ عَظِيمِ الرُّومِ‏.‏ سَلاَمٌ عَلَى مَنِ اتَّبَعَ الْهُدَى، أَمَّا بَعْدُ فَإِنِّي أَدْعُوكَ بِدِعَايَةِ الإِسْلاَمِ، أَسْلِمْ تَسْلَمْ، يُؤْتِكَ اللَّهُ أَجْرَكَ مَرَّتَيْنِ، فَإِنْ تَوَلَّيْتَ فَإِنَّ عَلَيْكَ إِثْمَ الأَرِيسِيِّينَ وَ‏(‏يَا أَهْلَ الْكِتَابِ تَعَالَوْا إِلَى كَلِمَةٍ سَوَاءٍ بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمْ أَنْ لاَ نَعْبُدَ إِلاَّ اللَّهَ وَلاَ نُشْرِكَ بِهِ شَيْئًا وَلاَ يَتَّخِذَ بَعْضُنَا بَعْضًا أَرْبَابًا مِنْ دُونِ اللَّهِ فَإِنْ تَوَلَّوْا فَقُولُوا اشْهَدُوا بِأَنَّا مُسْلِمُونَ‏)‏ قَالَ أَبُو سُفْيَانَ فَلَمَّا قَالَ مَا قَالَ، وَفَرَغَ مِنْ قِرَاءَةِ الْكِتَابِ كَثُرَ عِنْدَهُ الصَّخَبُ، وَارْتَفَعَتِ الأَصْوَاتُ وَأُخْرِجْنَا، فَقُلْتُ لأَصْحَابِي حِينَ أُخْرِجْنَا لَقَدْ أَمِرَ أَمْرُ ابْنِ أَبِي كَبْشَةَ، إِنَّهُ يَخَافُهُ مَلِكُ بَنِي الأَصْفَرِ‏.‏ فَمَا زِلْتُ مُوقِنًا أَنَّهُ سَيَظْهَرُ حَتَّى أَدْخَلَ اللَّهُ عَلَىَّ الإِسْلاَمَ‏.‏ وَكَانَ ابْنُ النَّاظُورِ صَاحِبُ إِيلِيَاءَ وَهِرَقْلَ سُقُفًّا عَلَى نَصَارَى الشَّأْمِ، يُحَدِّثُ أَنَّ هِرَقْلَ حِينَ قَدِمَ إِيلِيَاءَ أَصْبَحَ يَوْمًا خَبِيثَ النَّفْسِ، فَقَالَ بَعْضُ بَطَارِقَتِهِ قَدِ اسْتَنْكَرْنَا هَيْئَتَكَ‏.‏ قَالَ ابْنُ النَّاظُورِ وَكَانَ هِرَقْلُ حَزَّاءً يَنْظُرُ فِي النُّجُومِ، فَقَالَ لَهُمْ حِينَ سَأَلُوهُ إِنِّي رَأَيْتُ اللَّيْلَةَ حِينَ نَظَرْتُ فِي النُّجُومِ مَلِكَ الْخِتَانِ قَدْ ظَهَرَ، فَمَنْ يَخْتَتِنُ مِنْ هَذِهِ الأُمَّةِ قَالُوا لَيْسَ يَخْتَتِنُ إِلاَّ الْيَهُودُ فَلاَ يُهِمَّنَّكَ شَأْنُهُمْ وَاكْتُبْ إِلَى مَدَايِنِ مُلْكِكَ، فَيَقْتُلُوا مَنْ فِيهِمْ مِنَ الْيَهُودِ‏.‏ فَبَيْنَمَا هُمْ عَلَى أَمْرِهِمْ أُتِيَ هِرَقْلُ بِرَجُلٍ أَرْسَلَ بِهِ مَلِكُ غَسَّانَ، يُخْبِرُ عَنْ خَبَرِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا اسْتَخْبَرَهُ هِرَقْلُ قَالَ اذْهَبُوا فَانْظُرُوا أَمُخْتَتِنٌ هُوَ أَمْ لاَ‏.‏ فَنَظَرُوا إِلَيْهِ، فَحَدَّثُوهُ أَنَّهُ مُخْتَتِنٌ، وَسَأَلَهُ عَنِ الْعَرَبِ فَقَالَ هُمْ يَخْتَتِنُونَ‏.‏ فَقَالَ هِرَقْلُ هَذَا مَلِكُ هَذِهِ الأُمَّةِ قَدْ ظَهَرَ‏.‏ ثُمَّ كَتَبَ هِرَقْلُ إِلَى صَاحِبٍ لَهُ بِرُومِيَةَ، وَكَانَ نَظِيرَهُ فِي الْعِلْمِ، وَسَارَ هِرَقْلُ إِلَى حِمْصَ، فَلَمْ يَرِمْ حِمْصَ حَتَّى أَتَاهُ كِتَابٌ مِنْ صَاحِبِهِ يُوَافِقُ رَأْىَ هِرَقْلَ عَلَى خُرُوجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم وَأَنَّهُ نَبِيٌّ، فَأَذِنَ هِرَقْلُ لِعُظَمَاءِ الرُّومِ فِي دَسْكَرَةٍ لَهُ بِحِمْصَ ثُمَّ أَمَرَ بِأَبْوَابِهَا فَغُلِّقَتْ، ثُمَّ اطَّلَعَ فَقَالَ يَا مَعْشَرَ الرُّومِ، هَلْ لَكُمْ فِي الْفَلاَحِ وَالرُّشْدِ وَأَنْ يَثْبُتَ مُلْكُكُمْ فَتُبَايِعُوا هَذَا النَّبِيَّ، فَحَاصُوا حَيْصَةَ حُمُرِ الْوَحْشِ إِلَى الأَبْوَابِ، فَوَجَدُوهَا قَدْ غُلِّقَتْ، فَلَمَّا رَأَى هِرَقْلُ نَفْرَتَهُمْ، وَأَيِسَ مِنَ الإِيمَانِ قَالَ رُدُّوهُمْ عَلَىَّ‏.‏ وَقَالَ إِنِّي قُلْتُ مَقَالَتِي آنِفًا أَخْتَبِرُ بِهَا شِدَّتَكُمْ عَلَى دِينِكُمْ، فَقَدْ رَأَيْتُ‏.‏ فَسَجَدُوا لَهُ وَرَضُوا عَنْهُ، فَكَانَ ذَلِكَ آخِرَ شَأْنِ هِرَقْلَ‏.‏ رَوَاهُ صَالِحُ بْنُ كَيْسَانَ وَيُونُسُ وَمَعْمَرٌ عَنِ الزُّهْرِيِّ‏.


৭. ‘‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, আবূ সুফইয়ান ইবনু হরব তাকে বলেছেন, রাজা হিরাক্লিয়াস একদা তাঁর নিকট লোক প্রেরণ করলেন। তিনি তখন ব্যবসা উপলক্ষে কুরাইশদের কাফেলায় সিরিয়ায় ছিলেন। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে সময় আবূ সুফইয়ান ও কুরাইশদের সঙ্গে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সন্ধিতে আবদ্ধ ছিলেন। আবূ সুফইয়ান তার সাথী সহ হিরাক্লিয়াসের নিকট আসলেন এবং তখন হিরাক্লিয়াস জেরুযালেমে ছিলেন। হিরাক্লিয়াস তাদেরকে তাঁর নিকটে ডেকে পাঠালেন। তাঁর নিকটে তখন রোমের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিল। অতঃপর তাদের নিকটে ডাকলেন এবং দোভাষীকে ডাকলেন। অতঃপর জিজ্ঞেস করলেন, ‘এই যে ব্যক্তি নিজেকে নবী বলে দাবী করে-তোমাদের মাঝে বংশের দিক হতে তাঁর সবচেয়ে নিকটাত্মীয় কে’? আবূ সুফইয়ান বলেন, ‘আমি বললাম, বংশের দিক দিয়ে আমিই তাঁর নিকটাত্মীয়।’ তিনি বললেন, ‘তাঁকে আমার অতি নিকটে আন এবং তাঁর সাথীদেরকেও তার পেছনে বসিয়ে দাও।’

অতঃপর তাঁর দোভাষীকে বললেন, ‘তাদের বলে দাও, আমি এর নিকট সে ব্যক্তি সম্পর্কে কিছু জিজ্ঞেস করব, যদি সে আমার নিকট মিথ্যা বলে, তখন সঙ্গে সঙ্গে তোমরা তাকে মিথ্যুক বলবে। আবূ সুফ্ইয়ান বলেন, ‘আল্লাহর কসম! আমার যদি এ লজ্জা না থাকত যে, তারা আমাকে মিথ্যাবাদী বলে প্রচার করবে, তবে আমি অবশ্যই তাঁর সম্পর্কে মিথ্যা বলতাম।’

অতঃপর তিনি তাঁর সম্পর্কে আমাকে সর্বপ্রথম যে প্রশ্ন করেন তা হলো, ‘বংশমর্যাদার দিক দিয়ে তোমাদের মধ্যে সে কিরূপ?’ আমি বললাম, ‘তিনি আমাদের মধ্যে খুব সম্ভ্রান্ত বংশের।’ তিনি বললেন, ‘তোমাদের মধ্যে এর পূর্বে আর কখনো কি কেউ এরূপ কথা বলেছে?’ আমি বললাম, ‘না।’ তিনি বললেন, ‘তাঁর পূর্বপুরুষের মধ্যে কেউ কি বাদশাহ ছিলেন?’ আমি বললাম, ‘না।’ তিনি বললেন, ‘সম্ভ্রান্ত মর্যাদাবান শ্রেণীর লোকেরা তাঁর অনুসরণ করে, নাকি দুর্বল লোকেরা?’ আমি বললাম, ‘দুর্বল লোকেরা।’ তিনি বললেন, ‘তাদের সংখ্যা কি বাড়ছে, না কমছে?’ আমি বললাম, ‘তারা বেড়েই চলেছে।’ তিনি বললেন, ‘তাঁর ধর্মে ঢুকে কেউ কি অসন্তুষ্ট হয়ে তা ত্যাগ করে?’ আমি বললাম, ‘না।’ তিনি বললেন, ‘তার দাবীর পূর্বে তোমরা কি কখনো তাঁকে মিথ্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছ?’ আমি বললাম, ‘না।’ তিনি বললেন, ‘তিনি কি সন্ধি ভঙ্গ করেন?’ আমি বললাম, ‘না। তবে আমরা তাঁর সঙ্গে একটি নির্দিষ্ট সময়ের সন্ধিতে আবদ্ধ আছি। জানি না, এর মধ্যে তিনি কী করবেন।’ আবূ সুফ্ইয়ান বলেন, ‘এ কথাটি ব্যতীত নিজের পক্ষ হতে আর কোন কথা যোগ করার সুযোগই আমি পাইনি।’ তিনি বললেন, ‘তোমরা তাঁর সঙ্গে কখনো যুদ্ধ করেছ কি?’ আমি বললাম, ‘হ্যাঁ।’ তিনি বললেন, ‘তাঁর সঙ্গে তোমাদের যুদ্ধের পরিণাম কি হয়েছে?’ আমি বললাম, ‘তাঁর ও আমাদের মধ্যে যুদ্ধের ফলাফল কুপের বালতির ন্যায়।’ কখনো তাঁর পক্ষে যায়, আবার কখনো আমাদের পক্ষে আসে।’ তিনি বললেন, ‘তিনি তোমাদের কিসের আদেশ দেন?’ আমি বললাম, ‘তিনি বলেনঃ তোমরা এক আল্লাহর ইবাদত কর এবং তাঁর সঙ্গে কোন কিছুর অংশীদার সাব্যস্ত করো না এবং তোমাদের পূর্বপুরুষরা যা বলে তা ত্যাগ কর। আর তিনি আমাদের সালাত আদায়ের, সত্য বলার, চারিত্রিক নিষ্কলুষতার এবং আত্মীয়দের সঙ্গে সদাচরণ করার নির্দেশ দেন।’

অতঃপর তিনি দোভাষীকে বললেন, ‘তুমি তাকে বল, আমি তোমার নিকট তাঁর বংশ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছি। তুমি তার জবাবে উল্লেখ করেছ যে, তিনি তোমাদের মধ্যে সম্ভ্রান্ত বংশের। প্রকৃতপক্ষে রাসূলগণকে তাঁদের কওমের উচ্চ বংশেই পাঠানো হয়ে থাকে। তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, এ কথা তোমাদের মধ্যে ইতিপূর্বে আর কেউ বলেছে কিনা? তুমি বলেছ, ‘না।’ তাই আমি বলছি, পূর্বে যদি কেউ এরূপ বলত, তবে আমি অবশ্যই বলতাম, ইনি এমন এক ব্যক্তি, যিনি তাঁর পূর্বসূরীর কথারই অনুসরণ করছেন। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, তাঁর পূর্বপুরুষের মধ্যে কোন বাদশাহ ছিলেন কি না? তুমি তার জবাবে বলেছ, ‘না।’ তাই আমি বলছি যে, তাঁর পূর্বপুরুষের মধ্যে যদি কোন বাদশাহ থাকতেন, তবে আমি বলতাম, ইনি এমন এক ব্যক্তি যিনি তাঁর বাপ-দাদার বাদশাহী ফিরে পেতে চান। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি-এর পূর্বে কখনো তোমরা তাঁকে মিথ্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছ কিনা? তুমি বলেছ, ‘না।’ এতে আমি বুঝলাম, এমনটি হতে পারে না যে, কেউ মানুষের ব্যাপারে মিথ্যা পরিত্যাগ করবে আর আল্লাহর ব্যাপারে মিথ্যা বলবে। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, সম্ভ্রান্ত লোক তাঁর অনুসরণ করে, না সাধারণ লোক? তুমি বলেছ, সাধারণ লোকই তাঁর অনুসরণ করে। আর বাস্তবেও এই শ্রেণীর লোকেরাই হন রাসূলগণের অনুসারী। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, তারা সংখ্যায় বাড়ছে না কমছে? তুমি বলেছ, বাড়ছে। প্রকৃতপক্ষে ঈমানে পূর্ণতা লাভ করা পর্যন্ত এ রকমই হয়ে থাকে। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, তাঁর দ্বীনে প্রবেশ করে কেউ কি অসন্তুষ্ট হয়ে তা ত্যাগ করে? তুমি বলেছ, ‘না।’ ঈমানের স্নিগ্ধতা অন্তরের সঙ্গে মিশে গেলে ঈমান এরূপই হয়। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, তিনি সন্ধি ভঙ্গ করেন কিনা? তুমি বলেছ, ‘না।’ প্রকৃতপক্ষে রাসূলগণ এরূপই, সন্ধি ভঙ্গ করেন না। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, তিনি তোমাদের কিসের আদেশ দেন? তুমি বলেছ, তিনি তোমাদের এক আল্লাহর বন্দেগী করা ও তাঁর সঙ্গে অন্য কিছুর অংশীদার স্থাপন না করার নির্দেশ দেন। তিনি তোমাদের নিষেধ করেন মূর্তিপূজা করতে আর তোমাদের আদেশ করেন সালাত আদায় করতে, সত্য বলতে ও সচ্চরিত্র থাকতে। তুমি যা বলেছ তা যদি সত্য হয়, তবে শীঘ্রই তিনি আমার এ দু’পায়ের নীচের জায়গার অধিকারী হবেন। আমি নিশ্চিত জানতাম, তাঁর আবির্ভাব হবে; কিন্তু তিনি যে তোমাদের মধ্য হতে হবেন, এ কথা ভাবতে পারিনি। যদি জানতাম, আমি তাঁর নিকট পৌঁছতে পারব, তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য আমি যে কোন কষ্ট সহ্য করে নিতাম। আর আমি যদি তাঁর নিকট থাকতাম তবে অবশ্যই তাঁর দু’খানা পা ধৌত করে দিতাম। অতঃপর তিনি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সেই পত্রখানি আনার নির্দেশ দিলেন, যা তিনি দিহ্ইয়াতুল কালবী (রাঃ)-কে দিয়ে বসরার শাসকের মাধ্যমে হিরাক্লিয়াসের নিকট প্রেরণ করেছিলেন। তিনি তা পড়লেন। তাতে (লেখা) ছিলঃ

বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম (পরম করুণাময় দয়ালু আল্লাহর নামে)। আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর পক্ষ হতে রোম সম্রাট হিরাক্লিয়াসের প্রতি। - শান্তি (বর্ষিত হোক) তার প্রতি, যে হিদায়াতের অনুসরণ করে। তারপর আমি আপনাকে ইসলামের দাওয়াত দিচ্ছি। ইসলাম গ্রহণ করুন, শান্তিতে থাকবেন। আল্লাহ্ আপনাকে দ্বিগুণ প্রতিদান দান করবেন। আর যদি মুখ ফিরিয়ে নেন, তবে সকল প্রজার পাপই আপনার উপর বর্তাবে।

‘‘হে আহলে কিতাব! এসো সে কথায় যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে এক ও অভিন্ন। তা হল, আমরা যেন আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ইবাদাত না করি , কোন কিছুকেই যেন তাঁর শরীক সাব্যস্ত না করি এবং আমাদের কেউ যেন কাউকে পালনকর্তারূপে গ্রহণ না করে আল্লাহকে ত্যাগ করে। যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে তোমরা বল, ‘‘তোমরা সাক্ষী থাক, আমরা তো মুসলিম।’’ (সূরাহ্ আলে-‘ইমরান ৩/৬৪)

আবূ সুফইয়ান বলেন, ‘হিরাক্লিয়াস যখন তাঁর বক্তব্য শেষ করলেন এবং পত্র পাঠও শেষ করলেন, তখন সেখানে হট্টগোল শুরু হয়ে গেল, চীৎকার ও হৈ-হল্লা চরমে পৌঁছল এবং আমাদেরকে বের করে দেয়া হলো। আমাদেরকে বের করে দিলে আমি আমার সাথীদের বললাম, আবূ কাবশার* ছেলের বিষয় তো শক্তিশালী হয়ে উঠেছে, বনূ আসফার (রোম)-এর বাদশাহও তাকে ভয় পাচ্ছে! তখন থেকে আমি বিশ্বাস রাখতাম, তিনি শীঘ্রই জয়ী হবেন। অবশেষে আল্লাহ্ তা‘আলা আমাকে ইসলাম গ্রহণের তাওফীক দান করলেন।

ইবনু নাতূর ছিলেন জেরুযালেমের শাসনকর্তা এবং হিরাক্লিয়াসের বন্ধু ও সিরিয়ার খৃস্টানদের পাদ্রী। তিনি বলেন, ‘হিরাক্লিয়াস যখন জেরুযালেম আসেন, তখন একদা তাঁকে অত্যন্ত মলিন দেখাচ্ছিল। তাঁর একজন বিশিষ্ট সহচর বলল, ‘আমরা আপনার চেহারা আজ এত মলিন দেখছি, ইবনু নাতূর বলেন, হিরাক্লিয়াস ছিলেন জ্যোতির্বিদ, জ্যোতির্বিদ্যায় তাঁর দক্ষতা ছিল। তারা জিজ্ঞেস করলে তিনি তাদের বললেন, ‘আজ রাতে আমি তারকারাজির দিকে তাকিয়ে দেখতে পেলাম, খতনাকারীদের বাদশাহ আবির্ভূত হয়েছেন। বর্তমান যুগে কোন্ জাতি খাতনা করে’? তারা বলল, ‘ইয়াহূদ জাতি ব্যতীত কেউ খাতনা করে না। কিন্তু তাদের ব্যাপারে আপনি মোটেও চিন্তাগ্রস্থ হবেন না। আপনার রাজ্যের শহরগুলোতে লিখে পাঠান, তারা যেন সেখানকার সকল ইয়াহূদীকে কতল করে ফেলে।’ তারা যখন এ ব্যাপারে ব্যতিব্যস্ত ছিল, তখন হিরাক্লিয়াসের নিকট জনৈক ব্যক্তিকে হাযির করা হলো, যাকে গাস্সানের শাসনকর্তা পাঠিয়েছিল। সে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে খবর দিচ্ছিল। হিরাক্লিয়াস তার কাছ থেকে খবর জেনে নিয়ে বললেন, ‘তোমরা একে নিয়ে গিয়ে দেখ, তার খাতনা হয়েছে কি-না।’ তারা তাকে নিয়ে গিয়ে দেখে এসে সংবাদ দিল, তার খাতনা হয়েছে। হিরাক্লিয়াস তাকে আরবদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে সে জওয়াব দিল, ‘তারা খাতনা করে।’ অতঃপর হিরাক্লিয়াস তাদের বললেন, ‘ইনি [আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ] এ উম্মতের বাদশাহ। তিনি আবির্ভূত হয়েছেন।’ অতঃপর হিরাক্লিয়াস রোমে তাঁর বন্ধুর নিকট লিখলেন। তিনি জ্ঞানে তাঁর সমকক্ষ ছিলেন। পরে হিরাক্লিয়াস হিমস চলে গেলেন। হিমসে থাকতেই তাঁর নিকট তাঁর বন্ধুর চিঠি এলো, যা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর আবির্ভাব এবং তিনিই যে প্রকৃত নবী, এ ব্যাপারে হিরাক্লিয়াসের মতকে সমর্থন করছিল। তারপর হিরাক্লিয়াস তাঁর হিমসের প্রাসাদে রোমের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের ডাকলেন এবং প্রাসাদের সকল দরজা বন্ধ করার আদেশ দিলে দরজা বন্ধ করা হলো। অতঃপর তিনি সম্মুখে এসে বললেন, হে রোমের অধিবাসী! তোমরা কি মঙ্গল, হিদায়াত এবং তোমাদের রাষ্ট্রের স্থায়িত্ব চাও? তাহলে এই নবীর বায়’আত গ্রহণ কর।’ এ কথা শুনে তারা বন্য গাধার ন্যায় দ্রুত নিঃশ্বাস ফেলতে ফেলতে দরজার দিকে ছুটল, কিন্তু তারা তা বন্ধ দেখতে পেল। হিরাক্লিয়াস যখন তাদের অনীহা লক্ষ্য করলেন এবং তাদের ঈমান থেকে নিরাশ হয়ে গেলেন, তখন বললেন, ‘ওদের আমার নিকট ফিরিয়ে আন।’ তিনি বললেন, ‘আমি একটু পূর্বে যে কথা বলেছি, তা দিয়ে তোমরা তোমাদের দ্বীনের উপর কতটুকু অটল, কেবল তার পরীক্ষা করছিলাম। এখন তা দেখে নিলাম।’ একথা শুনে তারা তাঁকে সিজদা করল এবং তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট হলো। এটাই ছিল হিরাক্লিয়াসের সর্বশেষ অবস্থা।

আবূ ‘আবদুল্লাহ [বুখারী (রহ.)] বলেন, সালিহ ইবনু কায়সান (রহ.), ইউনুস (রহ.) ও মা’মার (রহ.) এ হাদীস যুহরী (রহ.) থেকে রিওয়ায়াত করেছেন। (৫১, ২৬৮১, ২৮০৪, ২৯৪১, ২৯৭৮, ৩১৭৪, ৪৫৫৩, ৫৯৮০, ৬২৬০, ৭১৯৬, ৭৫৪১ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৬)

باب

حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ الْحَكَمُ بْنُ نَافِعٍ، قَالَ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ أَخْبَرَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ بْنِ مَسْعُودٍ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَبَّاسٍ، أَخْبَرَهُ أَنَّ أَبَا سُفْيَانَ بْنَ حَرْبٍ أَخْبَرَهُ أَنَّ هِرَقْلَ أَرْسَلَ إِلَيْهِ فِي رَكْبٍ مِنْ قُرَيْشٍ ـ وَكَانُوا تُجَّارًا بِالشَّأْمِ ـ فِي الْمُدَّةِ الَّتِي كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَادَّ فِيهَا أَبَا سُفْيَانَ وَكُفَّارَ قُرَيْشٍ، فَأَتَوْهُ وَهُمْ بِإِيلِيَاءَ فَدَعَاهُمْ فِي مَجْلِسِهِ، وَحَوْلَهُ عُظَمَاءُ الرُّومِ ثُمَّ دَعَاهُمْ وَدَعَا بِتَرْجُمَانِهِ فَقَالَ أَيُّكُمْ أَقْرَبُ نَسَبًا بِهَذَا الرَّجُلِ الَّذِي يَزْعُمُ أَنَّهُ نَبِيٌّ فَقَالَ أَبُو سُفْيَانَ فَقُلْتُ أَنَا أَقْرَبُهُمْ نَسَبًا‏.‏ فَقَالَ أَدْنُوهُ مِنِّي، وَقَرِّبُوا أَصْحَابَهُ، فَاجْعَلُوهُمْ عِنْدَ ظَهْرِهِ‏.‏ ثُمَّ قَالَ لِتَرْجُمَانِهِ قُلْ لَهُمْ إِنِّي سَائِلٌ هَذَا عَنْ هَذَا الرَّجُلِ، فَإِنْ كَذَبَنِي فَكَذِّبُوهُ‏.‏ فَوَاللَّهِ لَوْلاَ الْحَيَاءُ مِنْ أَنْ يَأْثِرُوا عَلَىَّ كَذِبًا لَكَذَبْتُ عَنْهُ، ثُمَّ كَانَ أَوَّلَ مَا سَأَلَنِي عَنْهُ أَنْ قَالَ كَيْفَ نَسَبُهُ فِيكُمْ قُلْتُ هُوَ فِينَا ذُو نَسَبٍ‏.‏ قَالَ فَهَلْ قَالَ هَذَا الْقَوْلَ مِنْكُمْ أَحَدٌ قَطُّ قَبْلَهُ قُلْتُ لاَ‏.‏ قَالَ فَهَلْ كَانَ مِنْ آبَائِهِ مِنْ مَلِكٍ قُلْتُ لاَ‏.‏ قَالَ فَأَشْرَافُ النَّاسِ يَتَّبِعُونَهُ أَمْ ضُعَفَاؤُهُمْ فَقُلْتُ بَلْ ضُعَفَاؤُهُمْ‏.‏ قَالَ أَيَزِيدُونَ أَمْ يَنْقُصُونَ قُلْتُ بَلْ يَزِيدُونَ‏.‏ قَالَ فَهَلْ يَرْتَدُّ أَحَدٌ مِنْهُمْ سَخْطَةً لِدِينِهِ بَعْدَ أَنْ يَدْخُلَ فِيهِ قُلْتُ لاَ‏.‏ قَالَ فَهَلْ كُنْتُمْ تَتَّهِمُونَهُ بِالْكَذِبِ قَبْلَ أَنْ يَقُولَ مَا قَالَ قُلْتُ لاَ‏.‏ قَالَ فَهَلْ يَغْدِرُ قُلْتُ لاَ، وَنَحْنُ مِنْهُ فِي مُدَّةٍ لاَ نَدْرِي مَا هُوَ فَاعِلٌ فِيهَا‏.‏ قَالَ وَلَمْ تُمْكِنِّي كَلِمَةٌ أُدْخِلُ فِيهَا شَيْئًا غَيْرُ هَذِهِ الْكَلِمَةِ‏.‏ قَالَ فَهَلْ قَاتَلْتُمُوهُ قُلْتُ نَعَمْ‏.‏ قَالَ فَكَيْفَ كَانَ قِتَالُكُمْ إِيَّاهُ قُلْتُ الْحَرْبُ بَيْنَنَا وَبَيْنَهُ سِجَالٌ، يَنَالُ مِنَّا وَنَنَالُ مِنْهُ‏.‏ قَالَ مَاذَا يَأْمُرُكُمْ قُلْتُ يَقُولُ اعْبُدُوا اللَّهَ وَحْدَهُ، وَلاَ تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا، وَاتْرُكُوا مَا يَقُولُ آبَاؤُكُمْ، وَيَأْمُرُنَا بِالصَّلاَةِ وَالصِّدْقِ وَالْعَفَافِ وَالصِّلَةِ‏.‏ فَقَالَ لِلتَّرْجُمَانِ قُلْ لَهُ سَأَلْتُكَ عَنْ نَسَبِهِ، فَذَكَرْتَ أَنَّهُ فِيكُمْ ذُو نَسَبٍ، فَكَذَلِكَ الرُّسُلُ تُبْعَثُ فِي نَسَبِ قَوْمِهَا، وَسَأَلْتُكَ هَلْ قَالَ أَحَدٌ مِنْكُمْ هَذَا الْقَوْلَ فَذَكَرْتَ أَنْ لاَ، فَقُلْتُ لَوْ كَانَ أَحَدٌ قَالَ هَذَا الْقَوْلَ قَبْلَهُ لَقُلْتُ رَجُلٌ يَأْتَسِي بِقَوْلٍ قِيلَ قَبْلَهُ، وَسَأَلْتُكَ هَلْ كَانَ مِنْ آبَائِهِ مِنْ مَلِكٍ فَذَكَرْتَ أَنْ لاَ، قُلْتُ فَلَوْ كَانَ مِنْ آبَائِهِ مِنْ مَلِكٍ قُلْتُ رَجُلٌ يَطْلُبُ مُلْكَ أَبِيهِ، وَسَأَلْتُكَ هَلْ كُنْتُمْ تَتَّهِمُونَهُ بِالْكَذِبِ قَبْلَ أَنْ يَقُولَ مَا قَالَ فَذَكَرْتَ أَنْ لاَ، فَقَدْ أَعْرِفُ أَنَّهُ لَمْ يَكُنْ لِيَذَرَ الْكَذِبَ عَلَى النَّاسِ وَيَكْذِبَ عَلَى اللَّهِ، وَسَأَلْتُكَ أَشْرَافُ النَّاسِ اتَّبَعُوهُ أَمْ ضُعَفَاؤُهُمْ فَذَكَرْتَ أَنَّ ضُعَفَاءَهُمُ اتَّبَعُوهُ، وَهُمْ أَتْبَاعُ الرُّسُلِ، وَسَأَلْتُكَ أَيَزِيدُونَ أَمْ يَنْقُصُونَ فَذَكَرْتَ أَنَّهُمْ يَزِيدُونَ، وَكَذَلِكَ أَمْرُ الإِيمَانِ حَتَّى يَتِمَّ، وَسَأَلْتُكَ أَيَرْتَدُّ أَحَدٌ سَخْطَةً لِدِينِهِ بَعْدَ أَنْ يَدْخُلَ فِيهِ فَذَكَرْتَ أَنْ لاَ، وَكَذَلِكَ الإِيمَانُ حِينَ تُخَالِطُ بَشَاشَتُهُ الْقُلُوبَ، وَسَأَلْتُكَ هَلْ يَغْدِرُ فَذَكَرْتَ أَنْ لاَ، وَكَذَلِكَ الرُّسُلُ لاَ تَغْدِرُ، وَسَأَلْتُكَ بِمَا يَأْمُرُكُمْ، فَذَكَرْتَ أَنَّهُ يَأْمُرُكُمْ أَنْ تَعْبُدُوا اللَّهَ، وَلاَ تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا، وَيَنْهَاكُمْ عَنْ عِبَادَةِ الأَوْثَانِ، وَيَأْمُرُكُمْ بِالصَّلاَةِ وَالصِّدْقِ وَالْعَفَافِ‏.‏ فَإِنْ كَانَ مَا تَقُولُ حَقًّا فَسَيَمْلِكُ مَوْضِعَ قَدَمَىَّ هَاتَيْنِ، وَقَدْ كُنْتُ أَعْلَمُ أَنَّهُ خَارِجٌ، لَمْ أَكُنْ أَظُنُّ أَنَّهُ مِنْكُمْ، فَلَوْ أَنِّي أَعْلَمُ أَنِّي أَخْلُصُ إِلَيْهِ لَتَجَشَّمْتُ لِقَاءَهُ، وَلَوْ كُنْتُ عِنْدَهُ لَغَسَلْتُ عَنْ قَدَمِهِ‏.‏ ثُمَّ دَعَا بِكِتَابِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الَّذِي بَعَثَ بِهِ دِحْيَةُ إِلَى عَظِيمِ بُصْرَى، فَدَفَعَهُ إِلَى هِرَقْلَ فَقَرَأَهُ فَإِذَا فِيهِ بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ‏.‏ مِنْ مُحَمَّدٍ عَبْدِ اللَّهِ وَرَسُولِهِ إِلَى هِرَقْلَ عَظِيمِ الرُّومِ‏.‏ سَلاَمٌ عَلَى مَنِ اتَّبَعَ الْهُدَى، أَمَّا بَعْدُ فَإِنِّي أَدْعُوكَ بِدِعَايَةِ الإِسْلاَمِ، أَسْلِمْ تَسْلَمْ، يُؤْتِكَ اللَّهُ أَجْرَكَ مَرَّتَيْنِ، فَإِنْ تَوَلَّيْتَ فَإِنَّ عَلَيْكَ إِثْمَ الأَرِيسِيِّينَ وَ‏(‏يَا أَهْلَ الْكِتَابِ تَعَالَوْا إِلَى كَلِمَةٍ سَوَاءٍ بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمْ أَنْ لاَ نَعْبُدَ إِلاَّ اللَّهَ وَلاَ نُشْرِكَ بِهِ شَيْئًا وَلاَ يَتَّخِذَ بَعْضُنَا بَعْضًا أَرْبَابًا مِنْ دُونِ اللَّهِ فَإِنْ تَوَلَّوْا فَقُولُوا اشْهَدُوا بِأَنَّا مُسْلِمُونَ‏)‏ قَالَ أَبُو سُفْيَانَ فَلَمَّا قَالَ مَا قَالَ، وَفَرَغَ مِنْ قِرَاءَةِ الْكِتَابِ كَثُرَ عِنْدَهُ الصَّخَبُ، وَارْتَفَعَتِ الأَصْوَاتُ وَأُخْرِجْنَا، فَقُلْتُ لأَصْحَابِي حِينَ أُخْرِجْنَا لَقَدْ أَمِرَ أَمْرُ ابْنِ أَبِي كَبْشَةَ، إِنَّهُ يَخَافُهُ مَلِكُ بَنِي الأَصْفَرِ‏.‏ فَمَا زِلْتُ مُوقِنًا أَنَّهُ سَيَظْهَرُ حَتَّى أَدْخَلَ اللَّهُ عَلَىَّ الإِسْلاَمَ‏.‏ وَكَانَ ابْنُ النَّاظُورِ صَاحِبُ إِيلِيَاءَ وَهِرَقْلَ سُقُفًّا عَلَى نَصَارَى الشَّأْمِ، يُحَدِّثُ أَنَّ هِرَقْلَ حِينَ قَدِمَ إِيلِيَاءَ أَصْبَحَ يَوْمًا خَبِيثَ النَّفْسِ، فَقَالَ بَعْضُ بَطَارِقَتِهِ قَدِ اسْتَنْكَرْنَا هَيْئَتَكَ‏.‏ قَالَ ابْنُ النَّاظُورِ وَكَانَ هِرَقْلُ حَزَّاءً يَنْظُرُ فِي النُّجُومِ، فَقَالَ لَهُمْ حِينَ سَأَلُوهُ إِنِّي رَأَيْتُ اللَّيْلَةَ حِينَ نَظَرْتُ فِي النُّجُومِ مَلِكَ الْخِتَانِ قَدْ ظَهَرَ، فَمَنْ يَخْتَتِنُ مِنْ هَذِهِ الأُمَّةِ قَالُوا لَيْسَ يَخْتَتِنُ إِلاَّ الْيَهُودُ فَلاَ يُهِمَّنَّكَ شَأْنُهُمْ وَاكْتُبْ إِلَى مَدَايِنِ مُلْكِكَ، فَيَقْتُلُوا مَنْ فِيهِمْ مِنَ الْيَهُودِ‏.‏ فَبَيْنَمَا هُمْ عَلَى أَمْرِهِمْ أُتِيَ هِرَقْلُ بِرَجُلٍ أَرْسَلَ بِهِ مَلِكُ غَسَّانَ، يُخْبِرُ عَنْ خَبَرِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا اسْتَخْبَرَهُ هِرَقْلُ قَالَ اذْهَبُوا فَانْظُرُوا أَمُخْتَتِنٌ هُوَ أَمْ لاَ‏.‏ فَنَظَرُوا إِلَيْهِ، فَحَدَّثُوهُ أَنَّهُ مُخْتَتِنٌ، وَسَأَلَهُ عَنِ الْعَرَبِ فَقَالَ هُمْ يَخْتَتِنُونَ‏.‏ فَقَالَ هِرَقْلُ هَذَا مَلِكُ هَذِهِ الأُمَّةِ قَدْ ظَهَرَ‏.‏ ثُمَّ كَتَبَ هِرَقْلُ إِلَى صَاحِبٍ لَهُ بِرُومِيَةَ، وَكَانَ نَظِيرَهُ فِي الْعِلْمِ، وَسَارَ هِرَقْلُ إِلَى حِمْصَ، فَلَمْ يَرِمْ حِمْصَ حَتَّى أَتَاهُ كِتَابٌ مِنْ صَاحِبِهِ يُوَافِقُ رَأْىَ هِرَقْلَ عَلَى خُرُوجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم وَأَنَّهُ نَبِيٌّ، فَأَذِنَ هِرَقْلُ لِعُظَمَاءِ الرُّومِ فِي دَسْكَرَةٍ لَهُ بِحِمْصَ ثُمَّ أَمَرَ بِأَبْوَابِهَا فَغُلِّقَتْ، ثُمَّ اطَّلَعَ فَقَالَ يَا مَعْشَرَ الرُّومِ، هَلْ لَكُمْ فِي الْفَلاَحِ وَالرُّشْدِ وَأَنْ يَثْبُتَ مُلْكُكُمْ فَتُبَايِعُوا هَذَا النَّبِيَّ، فَحَاصُوا حَيْصَةَ حُمُرِ الْوَحْشِ إِلَى الأَبْوَابِ، فَوَجَدُوهَا قَدْ غُلِّقَتْ، فَلَمَّا رَأَى هِرَقْلُ نَفْرَتَهُمْ، وَأَيِسَ مِنَ الإِيمَانِ قَالَ رُدُّوهُمْ عَلَىَّ‏.‏ وَقَالَ إِنِّي قُلْتُ مَقَالَتِي آنِفًا أَخْتَبِرُ بِهَا شِدَّتَكُمْ عَلَى دِينِكُمْ، فَقَدْ رَأَيْتُ‏.‏ فَسَجَدُوا لَهُ وَرَضُوا عَنْهُ، فَكَانَ ذَلِكَ آخِرَ شَأْنِ هِرَقْلَ‏.‏ رَوَاهُ صَالِحُ بْنُ كَيْسَانَ وَيُونُسُ وَمَعْمَرٌ عَنِ الزُّهْرِيِّ‏.


৭. ‘‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, আবূ সুফইয়ান ইবনু হরব তাকে বলেছেন, রাজা হিরাক্লিয়াস একদা তাঁর নিকট লোক প্রেরণ করলেন। তিনি তখন ব্যবসা উপলক্ষে কুরাইশদের কাফেলায় সিরিয়ায় ছিলেন। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে সময় আবূ সুফইয়ান ও কুরাইশদের সঙ্গে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সন্ধিতে আবদ্ধ ছিলেন। আবূ সুফইয়ান তার সাথী সহ হিরাক্লিয়াসের নিকট আসলেন এবং তখন হিরাক্লিয়াস জেরুযালেমে ছিলেন। হিরাক্লিয়াস তাদেরকে তাঁর নিকটে ডেকে পাঠালেন। তাঁর নিকটে তখন রোমের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিল। অতঃপর তাদের নিকটে ডাকলেন এবং দোভাষীকে ডাকলেন। অতঃপর জিজ্ঞেস করলেন, ‘এই যে ব্যক্তি নিজেকে নবী বলে দাবী করে-তোমাদের মাঝে বংশের দিক হতে তাঁর সবচেয়ে নিকটাত্মীয় কে’? আবূ সুফইয়ান বলেন, ‘আমি বললাম, বংশের দিক দিয়ে আমিই তাঁর নিকটাত্মীয়।’ তিনি বললেন, ‘তাঁকে আমার অতি নিকটে আন এবং তাঁর সাথীদেরকেও তার পেছনে বসিয়ে দাও।’

অতঃপর তাঁর দোভাষীকে বললেন, ‘তাদের বলে দাও, আমি এর নিকট সে ব্যক্তি সম্পর্কে কিছু জিজ্ঞেস করব, যদি সে আমার নিকট মিথ্যা বলে, তখন সঙ্গে সঙ্গে তোমরা তাকে মিথ্যুক বলবে। আবূ সুফ্ইয়ান বলেন, ‘আল্লাহর কসম! আমার যদি এ লজ্জা না থাকত যে, তারা আমাকে মিথ্যাবাদী বলে প্রচার করবে, তবে আমি অবশ্যই তাঁর সম্পর্কে মিথ্যা বলতাম।’

অতঃপর তিনি তাঁর সম্পর্কে আমাকে সর্বপ্রথম যে প্রশ্ন করেন তা হলো, ‘বংশমর্যাদার দিক দিয়ে তোমাদের মধ্যে সে কিরূপ?’ আমি বললাম, ‘তিনি আমাদের মধ্যে খুব সম্ভ্রান্ত বংশের।’ তিনি বললেন, ‘তোমাদের মধ্যে এর পূর্বে আর কখনো কি কেউ এরূপ কথা বলেছে?’ আমি বললাম, ‘না।’ তিনি বললেন, ‘তাঁর পূর্বপুরুষের মধ্যে কেউ কি বাদশাহ ছিলেন?’ আমি বললাম, ‘না।’ তিনি বললেন, ‘সম্ভ্রান্ত মর্যাদাবান শ্রেণীর লোকেরা তাঁর অনুসরণ করে, নাকি দুর্বল লোকেরা?’ আমি বললাম, ‘দুর্বল লোকেরা।’ তিনি বললেন, ‘তাদের সংখ্যা কি বাড়ছে, না কমছে?’ আমি বললাম, ‘তারা বেড়েই চলেছে।’ তিনি বললেন, ‘তাঁর ধর্মে ঢুকে কেউ কি অসন্তুষ্ট হয়ে তা ত্যাগ করে?’ আমি বললাম, ‘না।’ তিনি বললেন, ‘তার দাবীর পূর্বে তোমরা কি কখনো তাঁকে মিথ্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছ?’ আমি বললাম, ‘না।’ তিনি বললেন, ‘তিনি কি সন্ধি ভঙ্গ করেন?’ আমি বললাম, ‘না। তবে আমরা তাঁর সঙ্গে একটি নির্দিষ্ট সময়ের সন্ধিতে আবদ্ধ আছি। জানি না, এর মধ্যে তিনি কী করবেন।’ আবূ সুফ্ইয়ান বলেন, ‘এ কথাটি ব্যতীত নিজের পক্ষ হতে আর কোন কথা যোগ করার সুযোগই আমি পাইনি।’ তিনি বললেন, ‘তোমরা তাঁর সঙ্গে কখনো যুদ্ধ করেছ কি?’ আমি বললাম, ‘হ্যাঁ।’ তিনি বললেন, ‘তাঁর সঙ্গে তোমাদের যুদ্ধের পরিণাম কি হয়েছে?’ আমি বললাম, ‘তাঁর ও আমাদের মধ্যে যুদ্ধের ফলাফল কুপের বালতির ন্যায়।’ কখনো তাঁর পক্ষে যায়, আবার কখনো আমাদের পক্ষে আসে।’ তিনি বললেন, ‘তিনি তোমাদের কিসের আদেশ দেন?’ আমি বললাম, ‘তিনি বলেনঃ তোমরা এক আল্লাহর ইবাদত কর এবং তাঁর সঙ্গে কোন কিছুর অংশীদার সাব্যস্ত করো না এবং তোমাদের পূর্বপুরুষরা যা বলে তা ত্যাগ কর। আর তিনি আমাদের সালাত আদায়ের, সত্য বলার, চারিত্রিক নিষ্কলুষতার এবং আত্মীয়দের সঙ্গে সদাচরণ করার নির্দেশ দেন।’

অতঃপর তিনি দোভাষীকে বললেন, ‘তুমি তাকে বল, আমি তোমার নিকট তাঁর বংশ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছি। তুমি তার জবাবে উল্লেখ করেছ যে, তিনি তোমাদের মধ্যে সম্ভ্রান্ত বংশের। প্রকৃতপক্ষে রাসূলগণকে তাঁদের কওমের উচ্চ বংশেই পাঠানো হয়ে থাকে। তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, এ কথা তোমাদের মধ্যে ইতিপূর্বে আর কেউ বলেছে কিনা? তুমি বলেছ, ‘না।’ তাই আমি বলছি, পূর্বে যদি কেউ এরূপ বলত, তবে আমি অবশ্যই বলতাম, ইনি এমন এক ব্যক্তি, যিনি তাঁর পূর্বসূরীর কথারই অনুসরণ করছেন। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, তাঁর পূর্বপুরুষের মধ্যে কোন বাদশাহ ছিলেন কি না? তুমি তার জবাবে বলেছ, ‘না।’ তাই আমি বলছি যে, তাঁর পূর্বপুরুষের মধ্যে যদি কোন বাদশাহ থাকতেন, তবে আমি বলতাম, ইনি এমন এক ব্যক্তি যিনি তাঁর বাপ-দাদার বাদশাহী ফিরে পেতে চান। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি-এর পূর্বে কখনো তোমরা তাঁকে মিথ্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছ কিনা? তুমি বলেছ, ‘না।’ এতে আমি বুঝলাম, এমনটি হতে পারে না যে, কেউ মানুষের ব্যাপারে মিথ্যা পরিত্যাগ করবে আর আল্লাহর ব্যাপারে মিথ্যা বলবে। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, সম্ভ্রান্ত লোক তাঁর অনুসরণ করে, না সাধারণ লোক? তুমি বলেছ, সাধারণ লোকই তাঁর অনুসরণ করে। আর বাস্তবেও এই শ্রেণীর লোকেরাই হন রাসূলগণের অনুসারী। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, তারা সংখ্যায় বাড়ছে না কমছে? তুমি বলেছ, বাড়ছে। প্রকৃতপক্ষে ঈমানে পূর্ণতা লাভ করা পর্যন্ত এ রকমই হয়ে থাকে। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, তাঁর দ্বীনে প্রবেশ করে কেউ কি অসন্তুষ্ট হয়ে তা ত্যাগ করে? তুমি বলেছ, ‘না।’ ঈমানের স্নিগ্ধতা অন্তরের সঙ্গে মিশে গেলে ঈমান এরূপই হয়। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, তিনি সন্ধি ভঙ্গ করেন কিনা? তুমি বলেছ, ‘না।’ প্রকৃতপক্ষে রাসূলগণ এরূপই, সন্ধি ভঙ্গ করেন না। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, তিনি তোমাদের কিসের আদেশ দেন? তুমি বলেছ, তিনি তোমাদের এক আল্লাহর বন্দেগী করা ও তাঁর সঙ্গে অন্য কিছুর অংশীদার স্থাপন না করার নির্দেশ দেন। তিনি তোমাদের নিষেধ করেন মূর্তিপূজা করতে আর তোমাদের আদেশ করেন সালাত আদায় করতে, সত্য বলতে ও সচ্চরিত্র থাকতে। তুমি যা বলেছ তা যদি সত্য হয়, তবে শীঘ্রই তিনি আমার এ দু’পায়ের নীচের জায়গার অধিকারী হবেন। আমি নিশ্চিত জানতাম, তাঁর আবির্ভাব হবে; কিন্তু তিনি যে তোমাদের মধ্য হতে হবেন, এ কথা ভাবতে পারিনি। যদি জানতাম, আমি তাঁর নিকট পৌঁছতে পারব, তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য আমি যে কোন কষ্ট সহ্য করে নিতাম। আর আমি যদি তাঁর নিকট থাকতাম তবে অবশ্যই তাঁর দু’খানা পা ধৌত করে দিতাম। অতঃপর তিনি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সেই পত্রখানি আনার নির্দেশ দিলেন, যা তিনি দিহ্ইয়াতুল কালবী (রাঃ)-কে দিয়ে বসরার শাসকের মাধ্যমে হিরাক্লিয়াসের নিকট প্রেরণ করেছিলেন। তিনি তা পড়লেন। তাতে (লেখা) ছিলঃ

বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম (পরম করুণাময় দয়ালু আল্লাহর নামে)। আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর পক্ষ হতে রোম সম্রাট হিরাক্লিয়াসের প্রতি। - শান্তি (বর্ষিত হোক) তার প্রতি, যে হিদায়াতের অনুসরণ করে। তারপর আমি আপনাকে ইসলামের দাওয়াত দিচ্ছি। ইসলাম গ্রহণ করুন, শান্তিতে থাকবেন। আল্লাহ্ আপনাকে দ্বিগুণ প্রতিদান দান করবেন। আর যদি মুখ ফিরিয়ে নেন, তবে সকল প্রজার পাপই আপনার উপর বর্তাবে।

‘‘হে আহলে কিতাব! এসো সে কথায় যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে এক ও অভিন্ন। তা হল, আমরা যেন আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ইবাদাত না করি , কোন কিছুকেই যেন তাঁর শরীক সাব্যস্ত না করি এবং আমাদের কেউ যেন কাউকে পালনকর্তারূপে গ্রহণ না করে আল্লাহকে ত্যাগ করে। যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে তোমরা বল, ‘‘তোমরা সাক্ষী থাক, আমরা তো মুসলিম।’’ (সূরাহ্ আলে-‘ইমরান ৩/৬৪)

আবূ সুফইয়ান বলেন, ‘হিরাক্লিয়াস যখন তাঁর বক্তব্য শেষ করলেন এবং পত্র পাঠও শেষ করলেন, তখন সেখানে হট্টগোল শুরু হয়ে গেল, চীৎকার ও হৈ-হল্লা চরমে পৌঁছল এবং আমাদেরকে বের করে দেয়া হলো। আমাদেরকে বের করে দিলে আমি আমার সাথীদের বললাম, আবূ কাবশার* ছেলের বিষয় তো শক্তিশালী হয়ে উঠেছে, বনূ আসফার (রোম)-এর বাদশাহও তাকে ভয় পাচ্ছে! তখন থেকে আমি বিশ্বাস রাখতাম, তিনি শীঘ্রই জয়ী হবেন। অবশেষে আল্লাহ্ তা‘আলা আমাকে ইসলাম গ্রহণের তাওফীক দান করলেন।

ইবনু নাতূর ছিলেন জেরুযালেমের শাসনকর্তা এবং হিরাক্লিয়াসের বন্ধু ও সিরিয়ার খৃস্টানদের পাদ্রী। তিনি বলেন, ‘হিরাক্লিয়াস যখন জেরুযালেম আসেন, তখন একদা তাঁকে অত্যন্ত মলিন দেখাচ্ছিল। তাঁর একজন বিশিষ্ট সহচর বলল, ‘আমরা আপনার চেহারা আজ এত মলিন দেখছি, ইবনু নাতূর বলেন, হিরাক্লিয়াস ছিলেন জ্যোতির্বিদ, জ্যোতির্বিদ্যায় তাঁর দক্ষতা ছিল। তারা জিজ্ঞেস করলে তিনি তাদের বললেন, ‘আজ রাতে আমি তারকারাজির দিকে তাকিয়ে দেখতে পেলাম, খতনাকারীদের বাদশাহ আবির্ভূত হয়েছেন। বর্তমান যুগে কোন্ জাতি খাতনা করে’? তারা বলল, ‘ইয়াহূদ জাতি ব্যতীত কেউ খাতনা করে না। কিন্তু তাদের ব্যাপারে আপনি মোটেও চিন্তাগ্রস্থ হবেন না। আপনার রাজ্যের শহরগুলোতে লিখে পাঠান, তারা যেন সেখানকার সকল ইয়াহূদীকে কতল করে ফেলে।’ তারা যখন এ ব্যাপারে ব্যতিব্যস্ত ছিল, তখন হিরাক্লিয়াসের নিকট জনৈক ব্যক্তিকে হাযির করা হলো, যাকে গাস্সানের শাসনকর্তা পাঠিয়েছিল। সে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে খবর দিচ্ছিল। হিরাক্লিয়াস তার কাছ থেকে খবর জেনে নিয়ে বললেন, ‘তোমরা একে নিয়ে গিয়ে দেখ, তার খাতনা হয়েছে কি-না।’ তারা তাকে নিয়ে গিয়ে দেখে এসে সংবাদ দিল, তার খাতনা হয়েছে। হিরাক্লিয়াস তাকে আরবদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে সে জওয়াব দিল, ‘তারা খাতনা করে।’ অতঃপর হিরাক্লিয়াস তাদের বললেন, ‘ইনি [আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ] এ উম্মতের বাদশাহ। তিনি আবির্ভূত হয়েছেন।’ অতঃপর হিরাক্লিয়াস রোমে তাঁর বন্ধুর নিকট লিখলেন। তিনি জ্ঞানে তাঁর সমকক্ষ ছিলেন। পরে হিরাক্লিয়াস হিমস চলে গেলেন। হিমসে থাকতেই তাঁর নিকট তাঁর বন্ধুর চিঠি এলো, যা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর আবির্ভাব এবং তিনিই যে প্রকৃত নবী, এ ব্যাপারে হিরাক্লিয়াসের মতকে সমর্থন করছিল। তারপর হিরাক্লিয়াস তাঁর হিমসের প্রাসাদে রোমের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের ডাকলেন এবং প্রাসাদের সকল দরজা বন্ধ করার আদেশ দিলে দরজা বন্ধ করা হলো। অতঃপর তিনি সম্মুখে এসে বললেন, হে রোমের অধিবাসী! তোমরা কি মঙ্গল, হিদায়াত এবং তোমাদের রাষ্ট্রের স্থায়িত্ব চাও? তাহলে এই নবীর বায়’আত গ্রহণ কর।’ এ কথা শুনে তারা বন্য গাধার ন্যায় দ্রুত নিঃশ্বাস ফেলতে ফেলতে দরজার দিকে ছুটল, কিন্তু তারা তা বন্ধ দেখতে পেল। হিরাক্লিয়াস যখন তাদের অনীহা লক্ষ্য করলেন এবং তাদের ঈমান থেকে নিরাশ হয়ে গেলেন, তখন বললেন, ‘ওদের আমার নিকট ফিরিয়ে আন।’ তিনি বললেন, ‘আমি একটু পূর্বে যে কথা বলেছি, তা দিয়ে তোমরা তোমাদের দ্বীনের উপর কতটুকু অটল, কেবল তার পরীক্ষা করছিলাম। এখন তা দেখে নিলাম।’ একথা শুনে তারা তাঁকে সিজদা করল এবং তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট হলো। এটাই ছিল হিরাক্লিয়াসের সর্বশেষ অবস্থা।

আবূ ‘আবদুল্লাহ [বুখারী (রহ.)] বলেন, সালিহ ইবনু কায়সান (রহ.), ইউনুস (রহ.) ও মা’মার (রহ.) এ হাদীস যুহরী (রহ.) থেকে রিওয়ায়াত করেছেন। (৫১, ২৬৮১, ২৮০৪, ২৯৪১, ২৯৭৮, ৩১৭৪, ৪৫৫৩, ৫৯৮০, ৬২৬০, ৭১৯৬, ৭৫৪১ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৬)

باب

حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ الْحَكَمُ بْنُ نَافِعٍ، قَالَ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ أَخْبَرَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ بْنِ مَسْعُودٍ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَبَّاسٍ، أَخْبَرَهُ أَنَّ أَبَا سُفْيَانَ بْنَ حَرْبٍ أَخْبَرَهُ أَنَّ هِرَقْلَ أَرْسَلَ إِلَيْهِ فِي رَكْبٍ مِنْ قُرَيْشٍ ـ وَكَانُوا تُجَّارًا بِالشَّأْمِ ـ فِي الْمُدَّةِ الَّتِي كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَادَّ فِيهَا أَبَا سُفْيَانَ وَكُفَّارَ قُرَيْشٍ، فَأَتَوْهُ وَهُمْ بِإِيلِيَاءَ فَدَعَاهُمْ فِي مَجْلِسِهِ، وَحَوْلَهُ عُظَمَاءُ الرُّومِ ثُمَّ دَعَاهُمْ وَدَعَا بِتَرْجُمَانِهِ فَقَالَ أَيُّكُمْ أَقْرَبُ نَسَبًا بِهَذَا الرَّجُلِ الَّذِي يَزْعُمُ أَنَّهُ نَبِيٌّ فَقَالَ أَبُو سُفْيَانَ فَقُلْتُ أَنَا أَقْرَبُهُمْ نَسَبًا‏.‏ فَقَالَ أَدْنُوهُ مِنِّي، وَقَرِّبُوا أَصْحَابَهُ، فَاجْعَلُوهُمْ عِنْدَ ظَهْرِهِ‏.‏ ثُمَّ قَالَ لِتَرْجُمَانِهِ قُلْ لَهُمْ إِنِّي سَائِلٌ هَذَا عَنْ هَذَا الرَّجُلِ، فَإِنْ كَذَبَنِي فَكَذِّبُوهُ‏.‏ فَوَاللَّهِ لَوْلاَ الْحَيَاءُ مِنْ أَنْ يَأْثِرُوا عَلَىَّ كَذِبًا لَكَذَبْتُ عَنْهُ، ثُمَّ كَانَ أَوَّلَ مَا سَأَلَنِي عَنْهُ أَنْ قَالَ كَيْفَ نَسَبُهُ فِيكُمْ قُلْتُ هُوَ فِينَا ذُو نَسَبٍ‏.‏ قَالَ فَهَلْ قَالَ هَذَا الْقَوْلَ مِنْكُمْ أَحَدٌ قَطُّ قَبْلَهُ قُلْتُ لاَ‏.‏ قَالَ فَهَلْ كَانَ مِنْ آبَائِهِ مِنْ مَلِكٍ قُلْتُ لاَ‏.‏ قَالَ فَأَشْرَافُ النَّاسِ يَتَّبِعُونَهُ أَمْ ضُعَفَاؤُهُمْ فَقُلْتُ بَلْ ضُعَفَاؤُهُمْ‏.‏ قَالَ أَيَزِيدُونَ أَمْ يَنْقُصُونَ قُلْتُ بَلْ يَزِيدُونَ‏.‏ قَالَ فَهَلْ يَرْتَدُّ أَحَدٌ مِنْهُمْ سَخْطَةً لِدِينِهِ بَعْدَ أَنْ يَدْخُلَ فِيهِ قُلْتُ لاَ‏.‏ قَالَ فَهَلْ كُنْتُمْ تَتَّهِمُونَهُ بِالْكَذِبِ قَبْلَ أَنْ يَقُولَ مَا قَالَ قُلْتُ لاَ‏.‏ قَالَ فَهَلْ يَغْدِرُ قُلْتُ لاَ، وَنَحْنُ مِنْهُ فِي مُدَّةٍ لاَ نَدْرِي مَا هُوَ فَاعِلٌ فِيهَا‏.‏ قَالَ وَلَمْ تُمْكِنِّي كَلِمَةٌ أُدْخِلُ فِيهَا شَيْئًا غَيْرُ هَذِهِ الْكَلِمَةِ‏.‏ قَالَ فَهَلْ قَاتَلْتُمُوهُ قُلْتُ نَعَمْ‏.‏ قَالَ فَكَيْفَ كَانَ قِتَالُكُمْ إِيَّاهُ قُلْتُ الْحَرْبُ بَيْنَنَا وَبَيْنَهُ سِجَالٌ، يَنَالُ مِنَّا وَنَنَالُ مِنْهُ‏.‏ قَالَ مَاذَا يَأْمُرُكُمْ قُلْتُ يَقُولُ اعْبُدُوا اللَّهَ وَحْدَهُ، وَلاَ تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا، وَاتْرُكُوا مَا يَقُولُ آبَاؤُكُمْ، وَيَأْمُرُنَا بِالصَّلاَةِ وَالصِّدْقِ وَالْعَفَافِ وَالصِّلَةِ‏.‏ فَقَالَ لِلتَّرْجُمَانِ قُلْ لَهُ سَأَلْتُكَ عَنْ نَسَبِهِ، فَذَكَرْتَ أَنَّهُ فِيكُمْ ذُو نَسَبٍ، فَكَذَلِكَ الرُّسُلُ تُبْعَثُ فِي نَسَبِ قَوْمِهَا، وَسَأَلْتُكَ هَلْ قَالَ أَحَدٌ مِنْكُمْ هَذَا الْقَوْلَ فَذَكَرْتَ أَنْ لاَ، فَقُلْتُ لَوْ كَانَ أَحَدٌ قَالَ هَذَا الْقَوْلَ قَبْلَهُ لَقُلْتُ رَجُلٌ يَأْتَسِي بِقَوْلٍ قِيلَ قَبْلَهُ، وَسَأَلْتُكَ هَلْ كَانَ مِنْ آبَائِهِ مِنْ مَلِكٍ فَذَكَرْتَ أَنْ لاَ، قُلْتُ فَلَوْ كَانَ مِنْ آبَائِهِ مِنْ مَلِكٍ قُلْتُ رَجُلٌ يَطْلُبُ مُلْكَ أَبِيهِ، وَسَأَلْتُكَ هَلْ كُنْتُمْ تَتَّهِمُونَهُ بِالْكَذِبِ قَبْلَ أَنْ يَقُولَ مَا قَالَ فَذَكَرْتَ أَنْ لاَ، فَقَدْ أَعْرِفُ أَنَّهُ لَمْ يَكُنْ لِيَذَرَ الْكَذِبَ عَلَى النَّاسِ وَيَكْذِبَ عَلَى اللَّهِ، وَسَأَلْتُكَ أَشْرَافُ النَّاسِ اتَّبَعُوهُ أَمْ ضُعَفَاؤُهُمْ فَذَكَرْتَ أَنَّ ضُعَفَاءَهُمُ اتَّبَعُوهُ، وَهُمْ أَتْبَاعُ الرُّسُلِ، وَسَأَلْتُكَ أَيَزِيدُونَ أَمْ يَنْقُصُونَ فَذَكَرْتَ أَنَّهُمْ يَزِيدُونَ، وَكَذَلِكَ أَمْرُ الإِيمَانِ حَتَّى يَتِمَّ، وَسَأَلْتُكَ أَيَرْتَدُّ أَحَدٌ سَخْطَةً لِدِينِهِ بَعْدَ أَنْ يَدْخُلَ فِيهِ فَذَكَرْتَ أَنْ لاَ، وَكَذَلِكَ الإِيمَانُ حِينَ تُخَالِطُ بَشَاشَتُهُ الْقُلُوبَ، وَسَأَلْتُكَ هَلْ يَغْدِرُ فَذَكَرْتَ أَنْ لاَ، وَكَذَلِكَ الرُّسُلُ لاَ تَغْدِرُ، وَسَأَلْتُكَ بِمَا يَأْمُرُكُمْ، فَذَكَرْتَ أَنَّهُ يَأْمُرُكُمْ أَنْ تَعْبُدُوا اللَّهَ، وَلاَ تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا، وَيَنْهَاكُمْ عَنْ عِبَادَةِ الأَوْثَانِ، وَيَأْمُرُكُمْ بِالصَّلاَةِ وَالصِّدْقِ وَالْعَفَافِ‏.‏ فَإِنْ كَانَ مَا تَقُولُ حَقًّا فَسَيَمْلِكُ مَوْضِعَ قَدَمَىَّ هَاتَيْنِ، وَقَدْ كُنْتُ أَعْلَمُ أَنَّهُ خَارِجٌ، لَمْ أَكُنْ أَظُنُّ أَنَّهُ مِنْكُمْ، فَلَوْ أَنِّي أَعْلَمُ أَنِّي أَخْلُصُ إِلَيْهِ لَتَجَشَّمْتُ لِقَاءَهُ، وَلَوْ كُنْتُ عِنْدَهُ لَغَسَلْتُ عَنْ قَدَمِهِ‏.‏ ثُمَّ دَعَا بِكِتَابِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الَّذِي بَعَثَ بِهِ دِحْيَةُ إِلَى عَظِيمِ بُصْرَى، فَدَفَعَهُ إِلَى هِرَقْلَ فَقَرَأَهُ فَإِذَا فِيهِ بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ‏.‏ مِنْ مُحَمَّدٍ عَبْدِ اللَّهِ وَرَسُولِهِ إِلَى هِرَقْلَ عَظِيمِ الرُّومِ‏.‏ سَلاَمٌ عَلَى مَنِ اتَّبَعَ الْهُدَى، أَمَّا بَعْدُ فَإِنِّي أَدْعُوكَ بِدِعَايَةِ الإِسْلاَمِ، أَسْلِمْ تَسْلَمْ، يُؤْتِكَ اللَّهُ أَجْرَكَ مَرَّتَيْنِ، فَإِنْ تَوَلَّيْتَ فَإِنَّ عَلَيْكَ إِثْمَ الأَرِيسِيِّينَ وَ‏(‏يَا أَهْلَ الْكِتَابِ تَعَالَوْا إِلَى كَلِمَةٍ سَوَاءٍ بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمْ أَنْ لاَ نَعْبُدَ إِلاَّ اللَّهَ وَلاَ نُشْرِكَ بِهِ شَيْئًا وَلاَ يَتَّخِذَ بَعْضُنَا بَعْضًا أَرْبَابًا مِنْ دُونِ اللَّهِ فَإِنْ تَوَلَّوْا فَقُولُوا اشْهَدُوا بِأَنَّا مُسْلِمُونَ‏)‏ قَالَ أَبُو سُفْيَانَ فَلَمَّا قَالَ مَا قَالَ، وَفَرَغَ مِنْ قِرَاءَةِ الْكِتَابِ كَثُرَ عِنْدَهُ الصَّخَبُ، وَارْتَفَعَتِ الأَصْوَاتُ وَأُخْرِجْنَا، فَقُلْتُ لأَصْحَابِي حِينَ أُخْرِجْنَا لَقَدْ أَمِرَ أَمْرُ ابْنِ أَبِي كَبْشَةَ، إِنَّهُ يَخَافُهُ مَلِكُ بَنِي الأَصْفَرِ‏.‏ فَمَا زِلْتُ مُوقِنًا أَنَّهُ سَيَظْهَرُ حَتَّى أَدْخَلَ اللَّهُ عَلَىَّ الإِسْلاَمَ‏.‏ وَكَانَ ابْنُ النَّاظُورِ صَاحِبُ إِيلِيَاءَ وَهِرَقْلَ سُقُفًّا عَلَى نَصَارَى الشَّأْمِ، يُحَدِّثُ أَنَّ هِرَقْلَ حِينَ قَدِمَ إِيلِيَاءَ أَصْبَحَ يَوْمًا خَبِيثَ النَّفْسِ، فَقَالَ بَعْضُ بَطَارِقَتِهِ قَدِ اسْتَنْكَرْنَا هَيْئَتَكَ‏.‏ قَالَ ابْنُ النَّاظُورِ وَكَانَ هِرَقْلُ حَزَّاءً يَنْظُرُ فِي النُّجُومِ، فَقَالَ لَهُمْ حِينَ سَأَلُوهُ إِنِّي رَأَيْتُ اللَّيْلَةَ حِينَ نَظَرْتُ فِي النُّجُومِ مَلِكَ الْخِتَانِ قَدْ ظَهَرَ، فَمَنْ يَخْتَتِنُ مِنْ هَذِهِ الأُمَّةِ قَالُوا لَيْسَ يَخْتَتِنُ إِلاَّ الْيَهُودُ فَلاَ يُهِمَّنَّكَ شَأْنُهُمْ وَاكْتُبْ إِلَى مَدَايِنِ مُلْكِكَ، فَيَقْتُلُوا مَنْ فِيهِمْ مِنَ الْيَهُودِ‏.‏ فَبَيْنَمَا هُمْ عَلَى أَمْرِهِمْ أُتِيَ هِرَقْلُ بِرَجُلٍ أَرْسَلَ بِهِ مَلِكُ غَسَّانَ، يُخْبِرُ عَنْ خَبَرِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا اسْتَخْبَرَهُ هِرَقْلُ قَالَ اذْهَبُوا فَانْظُرُوا أَمُخْتَتِنٌ هُوَ أَمْ لاَ‏.‏ فَنَظَرُوا إِلَيْهِ، فَحَدَّثُوهُ أَنَّهُ مُخْتَتِنٌ، وَسَأَلَهُ عَنِ الْعَرَبِ فَقَالَ هُمْ يَخْتَتِنُونَ‏.‏ فَقَالَ هِرَقْلُ هَذَا مَلِكُ هَذِهِ الأُمَّةِ قَدْ ظَهَرَ‏.‏ ثُمَّ كَتَبَ هِرَقْلُ إِلَى صَاحِبٍ لَهُ بِرُومِيَةَ، وَكَانَ نَظِيرَهُ فِي الْعِلْمِ، وَسَارَ هِرَقْلُ إِلَى حِمْصَ، فَلَمْ يَرِمْ حِمْصَ حَتَّى أَتَاهُ كِتَابٌ مِنْ صَاحِبِهِ يُوَافِقُ رَأْىَ هِرَقْلَ عَلَى خُرُوجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم وَأَنَّهُ نَبِيٌّ، فَأَذِنَ هِرَقْلُ لِعُظَمَاءِ الرُّومِ فِي دَسْكَرَةٍ لَهُ بِحِمْصَ ثُمَّ أَمَرَ بِأَبْوَابِهَا فَغُلِّقَتْ، ثُمَّ اطَّلَعَ فَقَالَ يَا مَعْشَرَ الرُّومِ، هَلْ لَكُمْ فِي الْفَلاَحِ وَالرُّشْدِ وَأَنْ يَثْبُتَ مُلْكُكُمْ فَتُبَايِعُوا هَذَا النَّبِيَّ، فَحَاصُوا حَيْصَةَ حُمُرِ الْوَحْشِ إِلَى الأَبْوَابِ، فَوَجَدُوهَا قَدْ غُلِّقَتْ، فَلَمَّا رَأَى هِرَقْلُ نَفْرَتَهُمْ، وَأَيِسَ مِنَ الإِيمَانِ قَالَ رُدُّوهُمْ عَلَىَّ‏.‏ وَقَالَ إِنِّي قُلْتُ مَقَالَتِي آنِفًا أَخْتَبِرُ بِهَا شِدَّتَكُمْ عَلَى دِينِكُمْ، فَقَدْ رَأَيْتُ‏.‏ فَسَجَدُوا لَهُ وَرَضُوا عَنْهُ، فَكَانَ ذَلِكَ آخِرَ شَأْنِ هِرَقْلَ‏.‏ رَوَاهُ صَالِحُ بْنُ كَيْسَانَ وَيُونُسُ وَمَعْمَرٌ عَنِ الزُّهْرِيِّ‏.

 

পরিচ্ছেদঃ ১. সালাত ফরয হওয়ার বর্ণনা

৩৯১। আবূ সুহাইল ইবনু মালিক থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত। তিনি ত্বালহা ইবনু ‘উবায়দুল্লাহ (রাঃ)-কে বলতে শুনেছেন, উস্কখুস্ক চুল বিশিষ্ট নাজদের জনৈক অধিবাসী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আসল। তখন তার মুখ হতে গুনগুন শব্দ শোনা যাচ্ছিল, কিন্তু কথাগুলো বুঝা যাচ্ছিল না। এমতাবস্থায় সে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকটবর্তী হয়ে ইসলাম সম্পর্কে প্রশ্ন করল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ (ইসলাম হচ্ছে) দিবা-রাত্রে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করা। লোকটি বললো, আমার ওপর এছাড়া আরও (সালাত) আছে কি? তিনি বললেন, না, তবে তুমি নফল (সালাত) আদায় করতে পার।

বর্ণনাকারী বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উদ্দেশে রমাযান মাসের সিয়ামের কথা উল্লেখ করলেন। লোকটি বলল, আমার উপর এছাড়া আরও (সিয়াম) আছে কি? তিনি বললেনঃ না, তবে তুমি নফল (সিয়াম) পালন করতে পার। বর্ণনাকারী বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে যাকাতের কথাও বললেন। লোকটি বলল, আমাকে এছাড়াও কোন দান করতে হবে কি? তিনি বললেনঃ না, তবে নফল হিসেবে (দান) করতে পার। অতঃপর লোকটি এই বলতে বলতে চলে যেতে লাগল যে, আল্লাহর শপথ! আমি এর চেয়ে বেশীও করব না কমও করব না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ লোকটি সত্য বলে থাকলে অবশ্যই সফলকাম হয়ে গেল। [1]

সহীহ : বুখারী ও মুসলিম।

باب فَرْضِ الصَّلَاةِ

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ عَمِّهِ أَبِي سُهَيْلِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ سَمِعَ طَلْحَةَ بْنَ عُبَيْبدِ اللهِ، يَقُولُ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى رَسُولِ اللهِ صلي الله عليه وسلم مِنْ أَهْلِ نَجْدٍ ثَائِرَ الرَّأْسِ يُسْمَعُ دَوِيُّ صَوْتِهِ وَلَا يُفْقَهُ مَا يَقُولُ حَتَّى دَنَا فَإِذَا هُوَ يَسْأَلُ عَنِ الإِسْلَامِ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ خَمْسُ صَلَوَاتٍ فِي الْيَوْمِ وَاللَّيْلَةِ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ هَلْ عَلَىَّ غَيْرُهُنَّ قَالَ ‏"‏ لَا إِلَّا أَنْ تَطَّوَّعَ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ وَذَكَرَ لَهُ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صِيَامَ شَهْرِ رَمَضَانَ قَالَ هَلْ عَلَىَّ غَيْرُهُ قَالَ ‏"‏ لَا إِلَّا أَنْ تَطَّوَّعَ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ وَذَكَرَ لَهُ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الصَّدَقَةَ ‏.‏ قَالَ فَهَلْ عَلَىَّ غَيْرُهَا قَالَ ‏"‏ لَا إِلَّا أَنْ تَطَّوَّعَ ‏"‏ ‏.‏ فَأَدْبَرَ الرَّجُلُ وَهُوَ يَقُولُ وَاللهِ لَا أَزِيدُ عَلَى هَذَا وَلَا أَنْقُصُ ‏.‏ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ أَفْلَحَ إِنْ صَدَقَ ‏"‏ ‏.‏

- صحيح : ق

পরিচ্ছেদঃ ১. সালাত ফরয হওয়ার বর্ণনা

৩৯১। আবূ সুহাইল ইবনু মালিক থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত। তিনি ত্বালহা ইবনু ‘উবায়দুল্লাহ (রাঃ)-কে বলতে শুনেছেন, উস্কখুস্ক চুল বিশিষ্ট নাজদের জনৈক অধিবাসী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আসল। তখন তার মুখ হতে গুনগুন শব্দ শোনা যাচ্ছিল, কিন্তু কথাগুলো বুঝা যাচ্ছিল না। এমতাবস্থায় সে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকটবর্তী হয়ে ইসলাম সম্পর্কে প্রশ্ন করল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ (ইসলাম হচ্ছে) দিবা-রাত্রে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করা। লোকটি বললো, আমার ওপর এছাড়া আরও (সালাত) আছে কি? তিনি বললেন, না, তবে তুমি নফল (সালাত) আদায় করতে পার।

বর্ণনাকারী বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উদ্দেশে রমাযান মাসের সিয়ামের কথা উল্লেখ করলেন। লোকটি বলল, আমার উপর এছাড়া আরও (সিয়াম) আছে কি? তিনি বললেনঃ না, তবে তুমি নফল (সিয়াম) পালন করতে পার। বর্ণনাকারী বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে যাকাতের কথাও বললেন। লোকটি বলল, আমাকে এছাড়াও কোন দান করতে হবে কি? তিনি বললেনঃ না, তবে নফল হিসেবে (দান) করতে পার। অতঃপর লোকটি এই বলতে বলতে চলে যেতে লাগল যে, আল্লাহর শপথ! আমি এর চেয়ে বেশীও করব না কমও করব না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ লোকটি সত্য বলে থাকলে অবশ্যই সফলকাম হয়ে গেল। [1]

সহীহ : বুখারী ও মুসলিম।

باب فَرْضِ الصَّلَاةِ

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ عَمِّهِ أَبِي سُهَيْلِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ سَمِعَ طَلْحَةَ بْنَ عُبَيْبدِ اللهِ، يَقُولُ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى رَسُولِ اللهِ صلي الله عليه وسلم مِنْ أَهْلِ نَجْدٍ ثَائِرَ الرَّأْسِ يُسْمَعُ دَوِيُّ صَوْتِهِ وَلَا يُفْقَهُ مَا يَقُولُ حَتَّى دَنَا فَإِذَا هُوَ يَسْأَلُ عَنِ الإِسْلَامِ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ خَمْسُ صَلَوَاتٍ فِي الْيَوْمِ وَاللَّيْلَةِ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ هَلْ عَلَىَّ غَيْرُهُنَّ قَالَ ‏"‏ لَا إِلَّا أَنْ تَطَّوَّعَ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ وَذَكَرَ لَهُ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صِيَامَ شَهْرِ رَمَضَانَ قَالَ هَلْ عَلَىَّ غَيْرُهُ قَالَ ‏"‏ لَا إِلَّا أَنْ تَطَّوَّعَ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ وَذَكَرَ لَهُ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الصَّدَقَةَ ‏.‏ قَالَ فَهَلْ عَلَىَّ غَيْرُهَا قَالَ ‏"‏ لَا إِلَّا أَنْ تَطَّوَّعَ ‏"‏ ‏.‏ فَأَدْبَرَ الرَّجُلُ وَهُوَ يَقُولُ وَاللهِ لَا أَزِيدُ عَلَى هَذَا وَلَا أَنْقُصُ ‏.‏ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ أَفْلَحَ إِنْ صَدَقَ ‏"‏ ‏.‏

- صحيح : ق

পরিচ্ছেদঃ ১. সালাত ফরয হওয়ার বর্ণনা

৩৯১। আবূ সুহাইল ইবনু মালিক থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত। তিনি ত্বালহা ইবনু ‘উবায়দুল্লাহ (রাঃ)-কে বলতে শুনেছেন, উস্কখুস্ক চুল বিশিষ্ট নাজদের জনৈক অধিবাসী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আসল। তখন তার মুখ হতে গুনগুন শব্দ শোনা যাচ্ছিল, কিন্তু কথাগুলো বুঝা যাচ্ছিল না। এমতাবস্থায় সে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকটবর্তী হয়ে ইসলাম সম্পর্কে প্রশ্ন করল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ (ইসলাম হচ্ছে) দিবা-রাত্রে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করা। লোকটি বললো, আমার ওপর এছাড়া আরও (সালাত) আছে কি? তিনি বললেন, না, তবে তুমি নফল (সালাত) আদায় করতে পার।

বর্ণনাকারী বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উদ্দেশে রমাযান মাসের সিয়ামের কথা উল্লেখ করলেন। লোকটি বলল, আমার উপর এছাড়া আরও (সিয়াম) আছে কি? তিনি বললেনঃ না, তবে তুমি নফল (সিয়াম) পালন করতে পার। বর্ণনাকারী বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে যাকাতের কথাও বললেন। লোকটি বলল, আমাকে এছাড়াও কোন দান করতে হবে কি? তিনি বললেনঃ না, তবে নফল হিসেবে (দান) করতে পার। অতঃপর লোকটি এই বলতে বলতে চলে যেতে লাগল যে, আল্লাহর শপথ! আমি এর চেয়ে বেশীও করব না কমও করব না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ লোকটি সত্য বলে থাকলে অবশ্যই সফলকাম হয়ে গেল। [1]

সহীহ : বুখারী ও মুসলিম।

باب فَرْضِ الصَّلَاةِ

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ عَمِّهِ أَبِي سُهَيْلِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ سَمِعَ طَلْحَةَ بْنَ عُبَيْبدِ اللهِ، يَقُولُ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى رَسُولِ اللهِ صلي الله عليه وسلم مِنْ أَهْلِ نَجْدٍ ثَائِرَ الرَّأْسِ يُسْمَعُ دَوِيُّ صَوْتِهِ وَلَا يُفْقَهُ مَا يَقُولُ حَتَّى دَنَا فَإِذَا هُوَ يَسْأَلُ عَنِ الإِسْلَامِ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ خَمْسُ صَلَوَاتٍ فِي الْيَوْمِ وَاللَّيْلَةِ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ هَلْ عَلَىَّ غَيْرُهُنَّ قَالَ ‏"‏ لَا إِلَّا أَنْ تَطَّوَّعَ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ وَذَكَرَ لَهُ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صِيَامَ شَهْرِ رَمَضَانَ قَالَ هَلْ عَلَىَّ غَيْرُهُ قَالَ ‏"‏ لَا إِلَّا أَنْ تَطَّوَّعَ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ وَذَكَرَ لَهُ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الصَّدَقَةَ ‏.‏ قَالَ فَهَلْ عَلَىَّ غَيْرُهَا قَالَ ‏"‏ لَا إِلَّا أَنْ تَطَّوَّعَ ‏"‏ ‏.‏ فَأَدْبَرَ الرَّجُلُ وَهُوَ يَقُولُ وَاللهِ لَا أَزِيدُ عَلَى هَذَا وَلَا أَنْقُصُ ‏.‏ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ أَفْلَحَ إِنْ صَدَقَ ‏"‏ ‏.‏

পরিচ্ছেদঃ ১. সালাত ফরয হওয়ার বর্ণনা

৩৯১। আবূ সুহাইল ইবনু মালিক থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত। তিনি ত্বালহা ইবনু ‘উবায়দুল্লাহ (রাঃ)-কে বলতে শুনেছেন, উস্কখুস্ক চুল বিশিষ্ট নাজদের জনৈক অধিবাসী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আসল। তখন তার মুখ হতে গুনগুন শব্দ শোনা যাচ্ছিল, কিন্তু কথাগুলো বুঝা যাচ্ছিল না। এমতাবস্থায় সে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকটবর্তী হয়ে ইসলাম সম্পর্কে প্রশ্ন করল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ (ইসলাম হচ্ছে) দিবা-রাত্রে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করা। লোকটি বললো, আমার ওপর এছাড়া আরও (সালাত) আছে কি? তিনি বললেন, না, তবে তুমি নফল (সালাত) আদায় করতে পার।

বর্ণনাকারী বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উদ্দেশে রমাযান মাসের সিয়ামের কথা উল্লেখ করলেন। লোকটি বলল, আমার উপর এছাড়া আরও (সিয়াম) আছে কি? তিনি বললেনঃ না, তবে তুমি নফল (সিয়াম) পালন করতে পার। বর্ণনাকারী বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে যাকাতের কথাও বললেন। লোকটি বলল, আমাকে এছাড়াও কোন দান করতে হবে কি? তিনি বললেনঃ না, তবে নফল হিসেবে (দান) করতে পার। অতঃপর লোকটি এই বলতে বলতে চলে যেতে লাগল যে, আল্লাহর শপথ! আমি এর চেয়ে বেশীও করব না কমও করব না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ লোকটি সত্য বলে থাকলে অবশ্যই সফলকাম হয়ে গেল। [1]

সহীহ : বুখারী ও মুসলিম।

باب فَرْضِ الصَّلَاةِ

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ عَمِّهِ أَبِي سُهَيْلِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ سَمِعَ طَلْحَةَ بْنَ عُبَيْبدِ اللهِ، يَقُولُ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى رَسُولِ اللهِ صلي الله عليه وسلم مِنْ أَهْلِ نَجْدٍ ثَائِرَ الرَّأْسِ يُسْمَعُ دَوِيُّ صَوْتِهِ وَلَا يُفْقَهُ مَا يَقُولُ حَتَّى دَنَا فَإِذَا هُوَ يَسْأَلُ عَنِ الإِسْلَامِ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ خَمْسُ صَلَوَاتٍ فِي الْيَوْمِ وَاللَّيْلَةِ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ هَلْ عَلَىَّ غَيْرُهُنَّ قَالَ ‏"‏ لَا إِلَّا أَنْ تَطَّوَّعَ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ وَذَكَرَ لَهُ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صِيَامَ شَهْرِ رَمَضَانَ قَالَ هَلْ عَلَىَّ غَيْرُهُ قَالَ ‏"‏ لَا إِلَّا أَنْ تَطَّوَّعَ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ وَذَكَرَ لَهُ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الصَّدَقَةَ ‏.‏ قَالَ فَهَلْ عَلَىَّ غَيْرُهَا قَالَ ‏"‏ لَا إِلَّا أَنْ تَطَّوَّعَ ‏"‏ ‏.‏ فَأَدْبَرَ الرَّجُلُ وَهُوَ يَقُولُ وَاللهِ لَا أَزِيدُ عَلَى هَذَا وَلَا أَنْقُصُ ‏.‏ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ أَفْلَحَ إِنْ صَدَقَ ‏"‏ ‏.‏

- صحيح : ق