banglarsab.com

শনিবার, ৩০ মার্চ, ২০২৪

টিকটক ভিডিও

 

সকলে  দেখুন শিক্ষা বুড়ো হলেও অপরিহার্য, সো সবাই আল্লাহর 

ওয়াস্তে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি। 

রবিবার, ৩ মার্চ, ২০২৪

ছেকাপোড়া

 

 


 নতুন বেগুনের স্বাদই আলাদা, যার সান্নিধ্য নিতে বহু কষ্টে একটা বেগুন চুরি করে এনেছে, নেহাতই খুব ইচ্ছা ছিল, বেগুনটি ভর্তা বানিয়ে খাবে। খুবি অভাবী সংসার তাদের, কষ্টক্লেশে দিনে একবেলা ভাত জুটে আবার নাও জুটে। ১৯৮০ সালের ঘটনা হবে, সেই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলাম আমি, তখন আমিও যে বেশ সুখে ছিলাম তা বলা যাবে না। আমি তখন সপ্তম শ্রেনীতে পড়ি, আবার এক বাড়ীতে লজিং থাকি। যাহোক আসল ঘটনায় আসা যাক, বেগুন চুরের নাম ছিল রফিক। তার বয়স হবে ১৪/১৫ বছর, কোন কাজ কর্ম পায় না, আবার পাইলেও করে না, পাচ ভাইবোনের মধ্যে সে বড়। বাবা দিন মজুর সারাদিন খেটে আধা কেজি চাউল এনেছে যা রাতে পাক করার জন্য তার মা চুলার কাছে গেলেন, এবং চাল ধুয়ে চুলোয় বসিয়ে দিলেন। এমতাবস্থায় রফিক বেগুনটি বের করে দিয়ে মাকে বলল, বেগুনটি পুড়া দেওয়ার জন্য, মা খুশি হলেন, কারন ভাত খাওয়ার জন্য যে, মরিচ ছাড়া আর কিছু নেই। চুরি করার দায়ে শাসন তো দুরে থাক, অসীম খুশি হল তার মা। তার মা বেগুনটি সযত্নে চুলোর এক কোনে ঝুলিয়ে দিলেন, আর রফিককে বলল থাল বাসন ধুয়ে আনার জন্য। রফিক থালা বাসন ধুতে গিয়ে খেয়াল করে দেখে দুর থেকে বিশাল লাইটের আলো আসছে, তা দেখেই সে ভয় পেয়ে মা বলে চীৎকার দিয়েই ছিটকে পড়ে অজ্ঞান হয়ে যায়, বাবা মা দৌড়ে  এসে তাকে নিয়ে মাথায় পানি ঢালতে থাকে। ভাত আর বেগুন চুলোয় রয়ে গেল, দু'ঘন্টা পর তার জ্ঞান ফিরে, হতভম্ব রফিক তার মাকে জড়িয়ে ধরে তখনও ভয়ে কাপছে, কিছু বলতে চেয়েও বলতে পারছে না। বাবা মা দুজনেই তাকে কথা বলানোর চেষ্টা করছে কিন্তু না সে শুধু চোখের পানি  দিয়ে চলছে, কিছু বলতে পারছে না, সে অভাবের তাড়নায় না খেয়ে থেকে স্ট্রোক করেছে বাক প্রতিবন্ধী হয়ে গেছে, কথা বলতে পারছে না, অঝোরে কাঁদছে। মা তাকে চিল্লাইয়া ডাকছে, সে কোন কথা বলছে না, শুধু ঈশারায় বুঝাচ্ছে তার পেটে খুব ক্ষুধা। মা ভাতের কাছে গিয়ে দেখে কপাল মন্দ এতক্ষনে ভাত পুড়ে ছাই, বেগুনের তো খবরই নাই। এবার মায়ের চেতনা ফিরে সজোরে কাঁদতে থাকে, প্রতিবেশী আগাইয়া দেখে করুন অবস্থা, একজন দৌড়ে যায় ভাত আনার জন্য, আমি মূর্তির মত দাঁড়িয়ে রইলাম, বিধাতা সর্বশ্রেষ্ঠ মাখলুক বানিয়ে কেন এত কষ্টে ফেলিয়া  তামশা দেখে। আর সৃষ্টির রহস্য বিধাতাই ভাল জানেন। ধনী গরীব আছে বলেই তো চাকর চাকরানী খুঁজে পাওয়া যায়। আল্লাহ্ গরীবদের রেহাই দাও, অন্ততঃ দু'বেলা খেয়ে বাঁচার তওফিক দাও। যাহোক প্রতিবেশী কিছু ভাত এনে দিল, সকলে ভাত খাইয়ে রফিককে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য বলতে থাকে, অবস্থার প্রেক্ষিতে আমার লজিংওয়ালা আমাকে রফিকের সাথে এই রাত্রিবেলা হাসপাতালে যাইতে বাধ্য করলেন, তবে বলাবাহুল্য ছাত্র ভাল ছিলাম বলে সকলে ছোট মানুষ হলেও আমাকে বেশ ইজ্জত করত

শনিবার, ২ মার্চ, ২০২৪