banglarsab.com

শনিবার, ২০ মার্চ, ২০২১

বাংলা সংবাদ

 

একমাসে ধর্ষণের শিকার ১০৯ জনের মধ্যে ৭০জনই শিশু

সংবাদ :
  • নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

| ঢাকা , রোববার, ০৪ এপ্রিল ২০২১

মার্চ মাসে ৩৫২ জন নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। পরিষদের কেন্দ্রীয় লিগ্যাল এইড উপ-পরিষদে সংরক্ষিত ১৩টি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। তারা জানিয়েছে, মার্চে ১৫৩ জন কন্যাশিশু নির্যাতন এবং ১৯৯ জন নারী নির্যাতনের শিকার হন। এরমধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১০৯ জন, যার মধ্যে ৭০ জনই কন্যাশিশু। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানায় সংস্থাটি।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ৭০ জন কন্যাশিশুর মধ্যে ৬২ জন কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার, পাঁচজন কন্যাশিশু দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার, একজন কন্যাশিশু ধর্ষণের পর হত্যা এবং দুইজন কন্যাশিশু ধর্ষণের কারণে আত্মহত্যার শিকার হয়েছে। এছাড়া ১০ জন কন্যাশিশুসহ ১৭ জনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে, দুইজন কন্যাশিশুসহ চারজন শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছে, সাতজন শিশুসহ যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছে ১০ জন।

মহিলা পরিষদ জানায়, এসিডদগ্ধের শিকার হয়েছে দুইজন। অগ্নিদগ্ধের শিকার হয়েছে ছয়জন, যার মধ্যে চারজনের অগ্নিদগ্ধের কারণে মৃত্যু হয়েছে। উত্ত্যক্তের শিকার হয়েছে তিনজন। ১০ জন শিশুসহ অপহরণের ঘটনার শিকার মোট ১৬ জন। বিভিন্ন কারণে ১২ জন শিশুসহ ৪৯ জনকে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া ১১ জনকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার হয়েছে ২০ জন, যার মধ্যে ৯ জনকে যৌতুকের কারণে হত্যা করা হয়েছে। শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৭ জন শিশুসহ মোট ৩৩ জন। বিভিন্ন নির্যাতনের কারণে আত্মহত্যা করেছে আটজন শিশুসহ ১৫ জন। ১২ জন শিশুসহ ৪৩ জনের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। বাল্যবিবাহ সংক্রান্ত ঘটনা ঘটেছে পাঁচটি। সাইবার অপরাধের শিকার চারজন শিশুসহ সাতজন।

নারীসহ অবরুদ্ধ হেফাজত নেতা মামুনুলকে ছিনিয়ে নিল কর্মীরা

রিসোর্টে ভাঙচুর

সংবাদ :
  • সৌরভ হোসেন সিয়াম, নারায়ণগঞ্জ

| ঢাকা , রোববার, ০৪ এপ্রিল ২০২১

গতকাল বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টে এক নারীসহ অবরুদ্ধ হন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক। খবর পেয়ে আ’লীগ কার্যালয়, যুবলীগ নেতার রেস্তোরাঁসহ রিসোর্টটিতেও ব্যাপক ভাঙচুর চালায় উত্তেজিত হেফাজতের কয়েকশ’ কর্মী-সমর্থক। পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যান মামুনুল হককে। রিসোর্টে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন ইউএনও, এসিল্যান্ড, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ কয়েকজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা। সোনারগাঁয়ের মোগরাপাড়া চৌরাস্তায় টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে অবস্থান নেয় হেফাজতের কয়েকশ’ কর্মী-সমর্থক। সংবাদ সংগ্রহে যাওয়া সংবাদকর্মীদের ধাওয়া দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে। রাত দশটায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সোনারগাঁয়ে ভীতিকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ফাঁকা গুলি ছুড়েছে পুলিশ।

পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী, রিসোর্টের কর্মকর্তা ও হেফাজতের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অবকাশ যাপনের জন্য দুপুরে সোনারগাঁয়ে আসেন মামুনুল হক। তার সঙ্গে থাকা নারীকে মামুনুল হকের দ্বিতীয় স্ত্রী বলে দাবি করা হচ্ছে। সোনারগাঁয়ের জাদুঘরে ঘোরাঘুরির পর রয়েল রিসোর্টের পঞ্চম তলার ৫০১ নম্বর কক্ষটি ভাড়া করেন। এদিকে মামনুল হক এক নারীকে নিয়ে রয়েল রিসোর্টে অবস্থান করছেন এমন খবর পেয়ে সোনারগাঁ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সোহাগ রনিসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ স্থানীয় এলাকাবাসী সেখানে যায়। পরে মাওলানা মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করে রাখে তারা। তাকে লাঞ্ছিত করারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

হেফাজতে ইসলামের নারায়ণগঞ্জ মহানগর শাখার সভাপতি মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান সংবাদকে বলেন, হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা মামুনুল হক দুটি বিবাহ করেছেন। তিনি তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে গতকাল সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টে এসেছিলেন। পরে স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতা-কর্মীরা তাকে অবরুদ্ধ করে লাঞ্চিত করে। স্থানীয়দের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে মামুনুল হকের পরনে থাকা জামাটিও ছিঁড়ে গেছে বলে জানান এই হেফাজত নেতা। এদিকে এক ভিডিওতে আটক মামুনুল হককে বলতে শোনা যায়, তার সঙ্গে থাকা নারীর নাম আমিনা তাইয়্যেবা। ওই নারী তার দ্বিতীয় স্ত্রী। তিনি খুলনাতে বিয়ে করেছেন। তার শ্বশুরের নাম জাহিদুল ইসলাম বলে জানান মামুনুল হক। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার বক্তব্য পরিষ্কার, আমরা এখানে একটু রিফ্রেশমেন্টের জন্য এসেছিলাম।...এখানে অনেক উচ্ছৃঙ্খল লোক এসেছে। মস্তান প্রকৃতির লোকেরা এসে আমাকে আমার ওয়াইফসহ নাজেহাল করেছে। আমাকে আক্রমণ করেছে। আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবো।’

জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ জায়েদুল আলম গণমাধ্যমকে জানান, রয়েল রিসোর্টের একটি কক্ষে মামুনুল হক নারীসহ অবস্থান করছেন এমন খবরে স্থানীয় লোকজন রিসোর্ট ঘেরাও করে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়। মামুনুল হক পুলিশকে জানিয়েছেন, সঙ্গে থাকা নারী তার দ্বিতীয় স্ত্রী। পরে পুলিশ তাকে নিরাপত্তা দিয়ে কক্ষের ভেতরেই জিজ্ঞাসাবাদ করে।

এদিকে নেতার অবরুদ্ধ হওয়ার খবর পেয়ে হেফাজতে ইসলামের কয়েকশ’ কর্মী-সমর্থক রয়েল রিসোর্টের সামনে এসে জড়ো হন। ঘটনাস্থলে যান জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) টিএম মোশারফ, সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতিকুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) গোলাম মোস্তফাসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তাররাও। সন্ধ্যার পর রিসোর্টের মূল গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে হেফাজতের কয়েকশ’ কর্মী-সমর্থক। তারা পুলিশের হেফাজত থেকে মাওলানা মামুনুল হককে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ সময় সমর্থকদের সঙ্গে মিছিল সহকারে মোগড়াপাড়ার দিকে যান মামুনুল হক। পরে স্থানীয় একটি ঈদগাহ ময়দানে বক্তব্য রাখেন তিনি। মামুনুল হক বলেন, ‘আপনাদের ভালোবাসার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। সাংবাদিক ও পুলিশ আমার সঙ্গে কোন খারাপ আচরণ করেনি। কিছু বাইরের লোক খারাপ আচরণ করেছে। লাগাতার কাজের চাপের কারণে আমার একটু রিফ্রেশমেন্ট দরকার ছিল। এজন্য আমি আমার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে এখানে ঘুরতে এসেছিলাম।’

এদিকে হেফাজতের কর্মী-সমর্থকরা রিসোর্টের ভেতরে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। আগুন দেয়ার চেষ্টা চলে সেখানে। রিসোর্টের চারদিক ঘেরাও করে ফেললে ভেতরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ইউএনও, এসিল্যান্ডসহ অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। তাদের ওপরও হামলা চালানোর খবর পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থলে ছিলেন হেফাজতে ইসলামের নারায়ণগঞ্জ মহানগর শাখার সভাপতি মাওলানা ফেরদাউসুর রহমানসহ জেলার অন্যান্য নেতারা।

রাত আটটার দিকে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে কোনমতে বেরিয়ে আসেন প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। পৌনে নয়টার দিকে ইউএনও আতিকুল ইসলাম সংবাদকে বলেন, ‘পুলিশি হেফাজত থেকে মামুনুল হককে ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। বিক্ষুব্ধ কর্মী-সমর্থকরা আক্রমণ করেছে। আমাদের অবরুদ্ধ করে রেখেছিল। কোনমতে আমরা বেরিয়ে এসেছি।’

সন্ধ্যায়ই মোগরাপাড়া চৌরাস্তা বড় জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মহিউদ্দিন খানের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নেমে আসে। রাতে সড়কে টায়ার ফেলে তাতে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করে। ভাঙচুর চালানো হয়েছে যুবলীগ নেতা রফিকুল ইসলাম নান্নুর রেস্তোরাঁ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়সহ আরও কয়েকটি দোকানে। সংবাদ সংগ্রহের জন্য গেলে সংবাদকর্মীদেরও ধাওয়া দিয়েছে হেফাজতের উত্তেজিত কর্মী-সমর্থকরা। অরক্ষিত হয়ে পড়েছে উপজেলা পরিষদ ও থানা এলাকা। হামলা এড়াতে উপজেলা পরিষদ ও থানা ঘেরাও করে রেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সর্বশেষ দশটার দিকেও সোনারগাঁয়ের মোগরাপাড়া চৌরাস্তা, উদ্ভবগঞ্জ, দীঘিরপাড় এলাকায় লাঠি হাতে মিছিল করতে দেখা গেছে হেফাজতের কর্মীদের। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে ফাঁকা গুলি ছুড়তে দেখা গেছে।

৭ দিনের লকডাউন

অভ্যন্তরীন বিমান ট্রেনসহ বন্ধ থাকবে সব যাত্রীবাহী বাহন

সংবাদ :
  • ইবরাহীম মাহমুদ আকাশ

| ঢাকা , রোববার, ০৪ এপ্রিল ২০২১

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে এবার লকডাউনের দিকে যাচ্ছে সরকার। কাল থেকে শুরু হচ্ছে সারাদেশে পুরোপুরি লকডাউন, প্রাথমিকভাবে এক সপ্তাহের জন্য। পরিস্থিতি বিবেচনা করে তা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গত বছর এই সময়ে সাধারণ ছুটি থাকলেও এবার পুরোপুরি লকডাউন। শিল্প-প্রতিষ্ঠান, কলকারখানা, খাবার, ওষুধের দোকান ও নিত্যপণ্যের বাজার ব্যতীত বন্ধ থাকবে সবকিছু। এ বিষয়ে দুই-একদিনের মধ্যে প্রজ্ঞাপন আকারে নির্দেশনা জারি করা হবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়। তবে সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্যবিধি মানার পাশাপাশি কঠোর লকডাউনের সুপারিশ গণস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের।

লকডাউনে মানুষের চলাফেরা সীমিত করা হবে

মানুষের চলাফেরা একেবারে সীমিত করা হবে উল্লেখ করে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘মানুষের চলাফেরা একেবারে সীমিত করা হবে। যাতে মানুষ ঘর থেকে বের না হয়। প্রজ্ঞাপনে সে বিষয়টি উল্লেখ থাকবে। আমরা আগে থেকে জানাচ্ছি যাতে মানুষ অন্য কোন স্থানে গিয়ে আটকে না পড়েন। প্রস্তুতিটা নিতে পারেন। আমাদের জরুরি সেবা দেয়া এমন সব প্রতিষ্ঠান যেমন-ডিসি অফিস, ইউএনও অফিস, ফায়ার সার্ভিস, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার অফিস, সংবাদপত্রএগুলো খোলা থাকবে। লকডাউনে সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। আদালত ও সব ধরনের মার্কেট বন্ধ থাকবে।’

পোশাক, শিল্প-কলকারখানা চালু থাকবে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সেখানে একাধিক শিফট করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্রমিকরা কাজ করবেন। কলকারখানা বন্ধ করে দিলে অধিক সংক্রমিত জেলা থেকে মানুষ বাড়িতে যাবে। এতে ওইসব জেলাতেও সংক্রমিত হওয়ার সংখ্যা বাড়বে।’

যাত্রীট্রেনসহ বন্ধ থাকবে সব ধরনের যানবাহন

লকডাউনের কারণে আগামী সোমবার থেকে সব ধরনের যানবাহনের পাশাপাশি সারাদেশে যাত্রীবাহী ট্রেন বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন। গতকাল তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ৫ এপ্রিল থেকে সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে প্রয়োজনীয় মালামাল ও খাদ্যপণ্য পরিবহনের জন্য মালবাহী কিছু ট্রেন চালু থাকবে। করোনা প্রতিরোধে সব ধরনের যানবাহন বন্ধের নির্দেশনার কারণে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলও বন্ধ খাকবে, পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত। তবে এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নির্দেশনা দেয়া হবে বলে জানান তিনি।

সারাদেশের যানবাহন বন্ধের বিষয়ে বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার সংবাদকে বলেন, লকডাউন হলে যাত্রীবাহী সব পরিবহন বন্ধ থাকবে এটাই নিয়ম। তবে জনপ্রশাসন থেকে প্রজ্ঞাপনে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হবে।

সারাদেশের নৌযান চলাচল বন্ধ

লকডাউনের কারণে সোমবার সকাল ৬টা থেকে সারাদেশের সব ধনের যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষর (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক। তিনি গতকাল সংবাদকে বলেন, ‘লকডাউনের পণ্যবাহী নৌযান চলাচল করবে। তবে সারাদেশের যাত্রীবাহী নৌযান বন্ধ থাকবে। ইতোমধ্যে সব নদীবন্দরে এই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সোমবার সকাল ৬টা থেকে তা কার্যকর করা হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতামত

করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্যবিধি মানার পাশাপাশি কঠোর লকডাউনের পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। এ বিষয়ে আইইডিসিআর’র সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মোস্তাক হোসেন সংবাদকে বলেন, যতদিন করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না ততদিন দেশ লকডাউন রাখা উচিত। কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তা সম্ভব্য নয়। তাই স্বাস্থ্যবিধি মানার পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ব কঠোরভাবে মেনে চলা উচিত। মানুষের সংস্পর্শ যত কম হবে আক্রান্তের সংখ্যা তত কম হবে। কিন্তু বাংলাদেশে দিন দিন আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর বড় কারণ মানুষ ঘরে থাকে না। তাই যত সম্ভব মানুষদের ঘরে থাকতে হবে। তা না হলে এটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। যতদিন পর্যন্ত সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে না আসবে ততদিন পর্যন্ত মানুষের চলাফেরা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে বলে জানান তিনি।

বৈজ্ঞানিক বিবেচনা থেকে লকডাউন কমপক্ষে ২ সপ্তাহ হওয়া উচিত বলে মনে করেন হেলথ অ্যান্ড হোপ স্পেশালাইজড হাসপাতালের পরিচালক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘সোমবার থেকে সারাদেশে একসপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করা হতে পারে। করোনাভাইরাসের সুপ্তিকাল ১৪ দিন। অর্থাৎ করোনাভাইরাস শরীরে ১৪ দিন পর্যন্ত ঘাপটি দিয়ে থাকতে সমর্থ। শরীরে প্রবেশের ১৪তম দিনেও ভাইরাসটি রোগ তৈরিতে সক্ষম। এজন্য বৈজ্ঞানিক বিবেচনা থেকে লকডাউন দিলে কমপক্ষে ২ সপ্তাহ হওয়া উচিত। এক সপ্তাহের লকডাউন স্বাস্থ্যবিজ্ঞানের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ।’

সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে গত বছর ২৩ মার্চ প্রথমবার ‘সাধারণ ছুটির’ ঘোষণা দিয়েছিল সরকার। শুরুতে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ‘ছুটি’ ঘোষণা হলেও পরে তার মেয়াদ বাড়ে কয়েক দফা। সে সময় সব অফিস আদালত, কল-কারখানা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে সারাদেশে সব ধরনের যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। ছুটির মধ্যে সবকিছু বন্ধ থাকার সেই পরিস্থিতি ‘লকডাউন’ হিসেবে পরিচিত পায়। কিন্তু তাতে নি¤œবিত্তের জীবন-জীবিকা আর দেশের উৎপাদন ব্যবস্থা অস্তিত্ব সংকটে পড়লে বিভিন্ন মহলের দাবিতে সরকার ৩১ মের পর থেকে ধাপে ধাপে বিধিনিষেধ শিথিল করতে থাকে। বছরের শেষে এসে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকা ছাড়া আর সব কড়াকড়িই উঠে যায়।

নারীসহ অবরুদ্ধ হেফাজত নেতা মামুনুলকে ছিনিয়ে নিল কর্মীরা

রিসোর্টে ভাঙচুর

সংবাদ :
  • সৌরভ হোসেন সিয়াম, নারায়ণগঞ্জ

| ঢাকা , রোববার, ০৪ এপ্রিল ২০২১

গতকাল বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টে এক নারীসহ অবরুদ্ধ হন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক। খবর পেয়ে আ’লীগ কার্যালয়, যুবলীগ নেতার রেস্তোরাঁসহ রিসোর্টটিতেও ব্যাপক ভাঙচুর চালায় উত্তেজিত হেফাজতের কয়েকশ’ কর্মী-সমর্থক। পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যান মামুনুল হককে। রিসোর্টে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন ইউএনও, এসিল্যান্ড, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ কয়েকজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা। সোনারগাঁয়ের মোগরাপাড়া চৌরাস্তায় টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে অবস্থান নেয় হেফাজতের কয়েকশ’ কর্মী-সমর্থক। সংবাদ সংগ্রহে যাওয়া সংবাদকর্মীদের ধাওয়া দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে। রাত দশটায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সোনারগাঁয়ে ভীতিকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ফাঁকা গুলি ছুড়েছে পুলিশ।

পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী, রিসোর্টের কর্মকর্তা ও হেফাজতের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অবকাশ যাপনের জন্য দুপুরে সোনারগাঁয়ে আসেন মামুনুল হক। তার সঙ্গে থাকা নারীকে মামুনুল হকের দ্বিতীয় স্ত্রী বলে দাবি করা হচ্ছে। সোনারগাঁয়ের জাদুঘরে ঘোরাঘুরির পর রয়েল রিসোর্টের পঞ্চম তলার ৫০১ নম্বর কক্ষটি ভাড়া করেন। এদিকে মামনুল হক এক নারীকে নিয়ে রয়েল রিসোর্টে অবস্থান করছেন এমন খবর পেয়ে সোনারগাঁ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সোহাগ রনিসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ স্থানীয় এলাকাবাসী সেখানে যায়। পরে মাওলানা মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করে রাখে তারা। তাকে লাঞ্ছিত করারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

হেফাজতে ইসলামের নারায়ণগঞ্জ মহানগর শাখার সভাপতি মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান সংবাদকে বলেন, হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা মামুনুল হক দুটি বিবাহ করেছেন। তিনি তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে গতকাল সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টে এসেছিলেন। পরে স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতা-কর্মীরা তাকে অবরুদ্ধ করে লাঞ্চিত করে। স্থানীয়দের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে মামুনুল হকের পরনে থাকা জামাটিও ছিঁড়ে গেছে বলে জানান এই হেফাজত নেতা। এদিকে এক ভিডিওতে আটক মামুনুল হককে বলতে শোনা যায়, তার সঙ্গে থাকা নারীর নাম আমিনা তাইয়্যেবা। ওই নারী তার দ্বিতীয় স্ত্রী। তিনি খুলনাতে বিয়ে করেছেন। তার শ্বশুরের নাম জাহিদুল ইসলাম বলে জানান মামুনুল হক। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার বক্তব্য পরিষ্কার, আমরা এখানে একটু রিফ্রেশমেন্টের জন্য এসেছিলাম।...এখানে অনেক উচ্ছৃঙ্খল লোক এসেছে। মস্তান প্রকৃতির লোকেরা এসে আমাকে আমার ওয়াইফসহ নাজেহাল করেছে। আমাকে আক্রমণ করেছে। আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবো।’

জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ জায়েদুল আলম গণমাধ্যমকে জানান, রয়েল রিসোর্টের একটি কক্ষে মামুনুল হক নারীসহ অবস্থান করছেন এমন খবরে স্থানীয় লোকজন রিসোর্ট ঘেরাও করে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়। মামুনুল হক পুলিশকে জানিয়েছেন, সঙ্গে থাকা নারী তার দ্বিতীয় স্ত্রী। পরে পুলিশ তাকে নিরাপত্তা দিয়ে কক্ষের ভেতরেই জিজ্ঞাসাবাদ করে।

এদিকে নেতার অবরুদ্ধ হওয়ার খবর পেয়ে হেফাজতে ইসলামের কয়েকশ’ কর্মী-সমর্থক রয়েল রিসোর্টের সামনে এসে জড়ো হন। ঘটনাস্থলে যান জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) টিএম মোশারফ, সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতিকুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) গোলাম মোস্তফাসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তাররাও। সন্ধ্যার পর রিসোর্টের মূল গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে হেফাজতের কয়েকশ’ কর্মী-সমর্থক। তারা পুলিশের হেফাজত থেকে মাওলানা মামুনুল হককে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ সময় সমর্থকদের সঙ্গে মিছিল সহকারে মোগড়াপাড়ার দিকে যান মামুনুল হক। পরে স্থানীয় একটি ঈদগাহ ময়দানে বক্তব্য রাখেন তিনি। মামুনুল হক বলেন, ‘আপনাদের ভালোবাসার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। সাংবাদিক ও পুলিশ আমার সঙ্গে কোন খারাপ আচরণ করেনি। কিছু বাইরের লোক খারাপ আচরণ করেছে। লাগাতার কাজের চাপের কারণে আমার একটু রিফ্রেশমেন্ট দরকার ছিল। এজন্য আমি আমার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে এখানে ঘুরতে এসেছিলাম।’

এদিকে হেফাজতের কর্মী-সমর্থকরা রিসোর্টের ভেতরে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। আগুন দেয়ার চেষ্টা চলে সেখানে। রিসোর্টের চারদিক ঘেরাও করে ফেললে ভেতরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ইউএনও, এসিল্যান্ডসহ অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। তাদের ওপরও হামলা চালানোর খবর পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থলে ছিলেন হেফাজতে ইসলামের নারায়ণগঞ্জ মহানগর শাখার সভাপতি মাওলানা ফেরদাউসুর রহমানসহ জেলার অন্যান্য নেতারা।

রাত আটটার দিকে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে কোনমতে বেরিয়ে আসেন প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। পৌনে নয়টার দিকে ইউএনও আতিকুল ইসলাম সংবাদকে বলেন, ‘পুলিশি হেফাজত থেকে মামুনুল হককে ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। বিক্ষুব্ধ কর্মী-সমর্থকরা আক্রমণ করেছে। আমাদের অবরুদ্ধ করে রেখেছিল। কোনমতে আমরা বেরিয়ে এসেছি।’

সন্ধ্যায়ই মোগরাপাড়া চৌরাস্তা বড় জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মহিউদ্দিন খানের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নেমে আসে। রাতে সড়কে টায়ার ফেলে তাতে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করে। ভাঙচুর চালানো হয়েছে যুবলীগ নেতা রফিকুল ইসলাম নান্নুর রেস্তোরাঁ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়সহ আরও কয়েকটি দোকানে। সংবাদ সংগ্রহের জন্য গেলে সংবাদকর্মীদেরও ধাওয়া দিয়েছে হেফাজতের উত্তেজিত কর্মী-সমর্থকরা। অরক্ষিত হয়ে পড়েছে উপজেলা পরিষদ ও থানা এলাকা। হামলা এড়াতে উপজেলা পরিষদ ও থানা ঘেরাও করে রেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সর্বশেষ দশটার দিকেও সোনারগাঁয়ের মোগরাপাড়া চৌরাস্তা, উদ্ভবগঞ্জ, দীঘিরপাড় এলাকায় লাঠি হাতে মিছিল করতে দেখা গেছে হেফাজতের কর্মীদের। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে ফাঁকা গুলি ছুড়তে দেখা গেছে।

৭ দিনের লকডাউন

অভ্যন্তরীন বিমান ট্রেনসহ বন্ধ থাকবে সব যাত্রীবাহী বাহন

সংবাদ :
  • ইবরাহীম মাহমুদ আকাশ

| ঢাকা , রোববার, ০৪ এপ্রিল ২০২১

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে এবার লকডাউনের দিকে যাচ্ছে সরকার। কাল থেকে শুরু হচ্ছে সারাদেশে পুরোপুরি লকডাউন, প্রাথমিকভাবে এক সপ্তাহের জন্য। পরিস্থিতি বিবেচনা করে তা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গত বছর এই সময়ে সাধারণ ছুটি থাকলেও এবার পুরোপুরি লকডাউন। শিল্প-প্রতিষ্ঠান, কলকারখানা, খাবার, ওষুধের দোকান ও নিত্যপণ্যের বাজার ব্যতীত বন্ধ থাকবে সবকিছু। এ বিষয়ে দুই-একদিনের মধ্যে প্রজ্ঞাপন আকারে নির্দেশনা জারি করা হবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়। তবে সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্যবিধি মানার পাশাপাশি কঠোর লকডাউনের সুপারিশ গণস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের।

লকডাউনে মানুষের চলাফেরা সীমিত করা হবে

মানুষের চলাফেরা একেবারে সীমিত করা হবে উল্লেখ করে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘মানুষের চলাফেরা একেবারে সীমিত করা হবে। যাতে মানুষ ঘর থেকে বের না হয়। প্রজ্ঞাপনে সে বিষয়টি উল্লেখ থাকবে। আমরা আগে থেকে জানাচ্ছি যাতে মানুষ অন্য কোন স্থানে গিয়ে আটকে না পড়েন। প্রস্তুতিটা নিতে পারেন। আমাদের জরুরি সেবা দেয়া এমন সব প্রতিষ্ঠান যেমন-ডিসি অফিস, ইউএনও অফিস, ফায়ার সার্ভিস, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার অফিস, সংবাদপত্রএগুলো খোলা থাকবে। লকডাউনে সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। আদালত ও সব ধরনের মার্কেট বন্ধ থাকবে।’

পোশাক, শিল্প-কলকারখানা চালু থাকবে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সেখানে একাধিক শিফট করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্রমিকরা কাজ করবেন। কলকারখানা বন্ধ করে দিলে অধিক সংক্রমিত জেলা থেকে মানুষ বাড়িতে যাবে। এতে ওইসব জেলাতেও সংক্রমিত হওয়ার সংখ্যা বাড়বে।’

যাত্রীট্রেনসহ বন্ধ থাকবে সব ধরনের যানবাহন

লকডাউনের কারণে আগামী সোমবার থেকে সব ধরনের যানবাহনের পাশাপাশি সারাদেশে যাত্রীবাহী ট্রেন বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন। গতকাল তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ৫ এপ্রিল থেকে সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে প্রয়োজনীয় মালামাল ও খাদ্যপণ্য পরিবহনের জন্য মালবাহী কিছু ট্রেন চালু থাকবে। করোনা প্রতিরোধে সব ধরনের যানবাহন বন্ধের নির্দেশনার কারণে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলও বন্ধ খাকবে, পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত। তবে এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নির্দেশনা দেয়া হবে বলে জানান তিনি।

সারাদেশের যানবাহন বন্ধের বিষয়ে বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার সংবাদকে বলেন, লকডাউন হলে যাত্রীবাহী সব পরিবহন বন্ধ থাকবে এটাই নিয়ম। তবে জনপ্রশাসন থেকে প্রজ্ঞাপনে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হবে।

সারাদেশের নৌযান চলাচল বন্ধ

লকডাউনের কারণে সোমবার সকাল ৬টা থেকে সারাদেশের সব ধনের যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষর (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক। তিনি গতকাল সংবাদকে বলেন, ‘লকডাউনের পণ্যবাহী নৌযান চলাচল করবে। তবে সারাদেশের যাত্রীবাহী নৌযান বন্ধ থাকবে। ইতোমধ্যে সব নদীবন্দরে এই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সোমবার সকাল ৬টা থেকে তা কার্যকর করা হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতামত

করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্যবিধি মানার পাশাপাশি কঠোর লকডাউনের পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। এ বিষয়ে আইইডিসিআর’র সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মোস্তাক হোসেন সংবাদকে বলেন, যতদিন করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না ততদিন দেশ লকডাউন রাখা উচিত। কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তা সম্ভব্য নয়। তাই স্বাস্থ্যবিধি মানার পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ব কঠোরভাবে মেনে চলা উচিত। মানুষের সংস্পর্শ যত কম হবে আক্রান্তের সংখ্যা তত কম হবে। কিন্তু বাংলাদেশে দিন দিন আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর বড় কারণ মানুষ ঘরে থাকে না। তাই যত সম্ভব মানুষদের ঘরে থাকতে হবে। তা না হলে এটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। যতদিন পর্যন্ত সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে না আসবে ততদিন পর্যন্ত মানুষের চলাফেরা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে বলে জানান তিনি।

বৈজ্ঞানিক বিবেচনা থেকে লকডাউন কমপক্ষে ২ সপ্তাহ হওয়া উচিত বলে মনে করেন হেলথ অ্যান্ড হোপ স্পেশালাইজড হাসপাতালের পরিচালক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘সোমবার থেকে সারাদেশে একসপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করা হতে পারে। করোনাভাইরাসের সুপ্তিকাল ১৪ দিন। অর্থাৎ করোনাভাইরাস শরীরে ১৪ দিন পর্যন্ত ঘাপটি দিয়ে থাকতে সমর্থ। শরীরে প্রবেশের ১৪তম দিনেও ভাইরাসটি রোগ তৈরিতে সক্ষম। এজন্য বৈজ্ঞানিক বিবেচনা থেকে লকডাউন দিলে কমপক্ষে ২ সপ্তাহ হওয়া উচিত। এক সপ্তাহের লকডাউন স্বাস্থ্যবিজ্ঞানের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ।’

সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে গত বছর ২৩ মার্চ প্রথমবার ‘সাধারণ ছুটির’ ঘোষণা দিয়েছিল সরকার। শুরুতে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ‘ছুটি’ ঘোষণা হলেও পরে তার মেয়াদ বাড়ে কয়েক দফা। সে সময় সব অফিস আদালত, কল-কারখানা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে সারাদেশে সব ধরনের যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। ছুটির মধ্যে সবকিছু বন্ধ থাকার সেই পরিস্থিতি ‘লকডাউন’ হিসেবে পরিচিত পায়। কিন্তু তাতে নি¤œবিত্তের জীবন-জীবিকা আর দেশের উৎপাদন ব্যবস্থা অস্তিত্ব সংকটে পড়লে বিভিন্ন মহলের দাবিতে সরকার ৩১ মের পর থেকে ধাপে ধাপে বিধিনিষেধ শিথিল করতে থাকে। বছরের শেষে এসে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকা ছাড়া আর সব কড়াকড়িই উঠে যায়।




 

 

 

 

 

 

 

 

 

বাংলাদেশি নারীদের বিয়ে করতে পারবে না সৌদি পুরুষেরা

নিজ দেশের পুরুষদের চারটি দেশের নারীদের বিয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সৌদি আরব। সৌদি সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে, এই চারটি দেশ হলো বাংলাদেশ, চাদ, মিয়ানমার ও পাকিস্তান। এছাড়া বিদেশি নারীদের বিয়ে করতে চাইলে এখন থেকে সৌদি পুরুষদের কঠোর নিয়মকানুন অনুসরণ করতে হবে।

বেসরকারি হিসেব অনুযায়ী বর্তমানে পাকিস্তান, বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও চাদের প্রায় পাঁচ লাখ নারী সৌদি আরবে বসবাস করছে। নিষেধাজ্ঞার কারণে এখন থেকে এসব নারীরা কোনও সৌদি পুরুষকে বিয়ে করতে পারবে না।

মক্কা পুলিশের পরিচালক মেজর জেনারেল আসাফ আল কুরাইশি মক্কা ডেইলি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, বিদেশি নারীদের বিয়ের ক্ষেত্রে এখন কঠিন নিয়মকানুনের আওতায় আসতে হবে সৌদি পুরুষদের। বিদেশি নারীদের বিয়ে করা নিরুৎসাহিত করতে এসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিদেশিদের বিয়ের অনুমতি পাওয়ার আগে এখন থেকে অতিরিক্ত আনুষ্ঠানিকতা সারতে হবে সৌদি পুরুষদের।

মক্কা পুলিশের পরিচালক আল কুরাইশি জানান, কোনও সৌদি পুরুষ কোনও বিদেশি নারীকে বিয়ে করতে চাইলে প্রথমে সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের অনুমতি নিতে হবে আর বিয়ের আবেদন সরকারি মাধ্যমে পেশ করতে হবে। ওই কর্মকর্তা জানান, আবেদনকারীকে অবশ্যই ২৫ বছরের বেশি বয়সী হতে হবে আর আবেদনের সঙ্গে স্থানীয় জেলা মেয়রের স্বাক্ষর করা বিভিন্ন নথিপত্র উপস্থাপন করতে হবে।  এছাড়া আবেদনকারী ইতোমধ্যে বিবাহিত হলে তাকে আবেদনের সঙ্গে একটি হাসপাতালের প্রতিবেদন উপস্থাপন করতে হবে যাতে বলা থাকবে তার স্ত্রী হয় অক্ষম, না হয় কোনও মারাত্মক রোগে ভুগছেন কিংবা তিনি সন্তান জন্মদানে অক্ষম।

Hatil opens new showroom in Gulshan

Staff Correspondent . Farid Ahmed | Published at 08:08pm on March 21, 2021

images

Hatil chairman and managing director Selim H Rahman, along with others, inaugurates a new showroom of the furniture maker in Gulshan. —  Press Release

Furniture brand Hatil opened a new showroom in Gulshan area in Dhaka.

This new one at House-41, Road-02, Gulshan-02, Dhaka, was opened on March 19.  

The 8,000 square feet showroom has a wide collection of home, office, and kitchen furniture as well as doors. The showroom will remain open every day except Sunday from 10:30am to 9:00pm with a proper hygiene system.

Hatil chairman and managing director Selim H. Rahman inaugurated the showroom where all the directors of the furniture company were present, among others, said a press release on 

Sunday.

 

হেফাজতের মামুনুল হক সম্পর্কে যা বললেন সেই নারীসঙ্গীর ছেলে

‘আপনারা কারো অন্ধ ভক্ত হয়েন না। কাউকে অন্ধভাবে বিশ্বাস কইরেন না। কারণ, সবারই আড়ালে আরেকটা চেহারা থাকে। এই লোকটা আলেম নামধারী মুখোশধারী একটা জানোয়ার। তার মধ্যে কোনও মনুষ্যত্ব নেই। সে সুযোগের অপেক্ষায় থাকে কাকে কীভাবে দুর্বল করা যায়’—হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হক সম্পর্কে এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করলেন তার কথিত দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে আব্দুর রহমান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আব্দুর রহমানের তিন মিনিট দুই সেকেন্ডের একটি বক্তব্য ভাইরাল হয়েছে। আব্দুর রহমান তার ছোট ভাই তামিমকে নিয়ে বাবার সঙ্গে খুলনায় বাস করেন বলে জানা গেছে।

আব্দুর রহমান ভিডিওতে বলেন, ‘আমি তো অলরেডি বড় হয়ে গেছি, অনেক কিছু শিখছি, জানছি, ম্যাচুরিটির একটা ভাব আইছে। আমি কিছুটা সহ্য করে নিতে পারি, কিন্তু আমার তো একটা ছোট ভাই আছে, তের-চৌদ্দ বছর বয়স। কেবল উঠতি বয়স। এই সময়ে মানুষের কত কথা শোনা লাগতেছে। সমাজের সামনে আইসা মুখ দেখাইতে পারতেছি না। আমার ছোট ভাইটা কাল রাতে যখন এই ঘটনটা ঘটলো, ও কোনোদিন আমি দেখি নাই রাত ৩-৪টা পর্যন্ত জাইগা রইছে। কাল দেখি ওর চোখে কোনও ঘুমই নাই। ও বিষয়টা নিয়ে টোটালি মেন্টালি শকড হইছে। ও বাসা থেকে বের হয়ে গেছিল। বাসায় থাকলে কি উল্টা-পাল্টা করবো আমি নিজেও জানি না, এইটা বইলা বের হয়ে গেছে।’

আব্দুর রহমান বলেন, ‘আরও বলতে হয়, এটা আমি বলবো যে, আমার বাবার কর্মের ফল। আমার বাবা মানুষকে অন্ধের মতো বিশ্বাস করে। পাগলের মতো ভালোবাসে। ওই লোকটার (মাওলানা মামুনুল হক), কিছু দিন আগে মোল্লারহাটে একটা মাহফিল ছিল। সেখানে পুলিশ তাকে করতে দেবে না। সে একটা জায়গায় লুকায়া ছিল। আমার বাবা সেটা দেখে আইসা কীভাবে যে কানছে। তার আগেই বিষয়টা আমি জানছি যে, আমার মায়ের সঙ্গে তার একটা সম্পর্ক ছিল। আমি তখন হাসতে ছিলাম যে, এই লোকটা যার জন্য অঝোর ধারায় কানতেছে আর ওই লোকটা (মাওলানা মামুনুল হক) এই লোকটার (বাবা শহীদুল ইসলাম) সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করতেছে। তারপরে যখন ওনাকে জেলে নিলো, মাওলানা মামুনুল হককে জেলে নিলো, তখন আমার বাবা থানার ওসি কামরুজ্জামানকে বলে যে, আমাকে রেখে ওনাকে ছেড়ে দেন। কতটা ভালোবাসলে একটা মানুষকে এই কথা বলতে পারে। আর সেই লোকটা কীভাবে গাদ্দারি করলো।’

আব্দুর রহমান বলেন, ‘আরও আগের ঘটনা যখন, ডিভোর্স হয়নি, আমি তখন অনেক ছোট। আমার ছোট ভাই আরও অনেক ছোট, দুগ্ধশিশু ছিল। তখন আমার বাবা বাসায় ছিলেন না। তখন আমি ছিলাম। আমি ঘুমায়া ছিলাম নাকি বাইরে ছিলাম। আমার মা নাকি আমার ছোট ভাইকে দুগ্ধ পান করাচ্ছিল, তখন উনি আমার মায়ের রুমে ঢুকে গিয়ে একটা কুপ্রস্তাব দেয়। কিন্তু আমার মা সেটা প্রত্যাখ্যান করেছিল, না এটা কোনোদিনই সম্ভব না। আপনি তো ঠকাচ্ছেন, আপনার কাছের মানুষটাকে, বন্ধুকে। সে তখন ফিরে এসেছিল। কিন্তু তার একটা তখনই মনে কামভাব ঢুকে গেছে। সে লোভ সামলাইতে পারতেছিল না। সে একটা সুযোগে ছিল, কিন্তু এত তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে সে এইটা বুঝতে পারে নাই। যখনই সুযোগ পাইছে এনাদের মধ্যে ডিসট্যান্স বাড়াইয়া দিছে। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তো ঝগড়া হবেই। সে তখনই নক করছে। তখন দুইজনের মধ্যে আরও ডিসট্যান্স বাড়াইয়া দিছে। এভাবে করে সে একটা পরিবারের খুশি, ভালোবাসা, একটা পরিবারের মধ্যে যে মিলমিশ সম্পর্ক পুরোপুরি ধ্বংস করে দিছে। আরও যে এভাবে কত মানুষের, কত পরিবারের ভালোবাসা যে ধ্বংস করে দিছে এর কোনও ঠিক নাই।’

মাওলানা মামুনুল হকের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে আব্দুর রহমান বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের মানুষের কাছে আশা করবো, এর যেন সঠিক বিচার হয়। আপনারা কারও অন্ধ ভক্ত হয়েন না। কাউকে অন্ধভাবে বিশ্বাস কইরেন না। কারণ, সবারই আড়ালে আরেকটা চেহারা থাকে। এই লোকটা আলেম নামধারী মুখোশধারী একটা জানোয়ার। তার মধ্যে কোনও মনুষ্যত্ব নেই। সে সুযোগের অপেক্ষায় থাকে কাকে কীভাবে দুর্বল করা যায়। আমার আর কিছু বলার ভাষা নাই।’

উল্লেখ্য, গত শনিবার (৩ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টে এক নারীসঙ্গীসহ স্থানীয় লোকজনের হাতে আটক হন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর সেক্রেটারি মাওলানা মামুনুল হক। পরে পুলিশ সেখানে গিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। মামুনুল হক ওই নারীকে নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী আমেনা তৈয়বা বলে জানায়। বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হলে হেফাজতের নেতাকর্মীরা ওই রিসোর্টে ভাঙচুর করে মামুনুল হককে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এরপর একে একে মামুনুল হকের ইস্যুতে একাধিক অডিও ফাঁস হয়। যেখানে মামুনুল হক ওই নারীকে শহীদুল ইসলামের সাবেক স্ত্রী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন